নূরুল ইসলাম : ঢাকা-রাজশাহী রুটে ছুটবে লাল-সবুজ ট্রেন। ঈদের আগেই ব্রডগেজে লাল-সবুজ কোচের ট্রেন চালু হচ্ছে। গতি হবে সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার। পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী ইফতিখার হোসেন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পেলেই নতুন কোচের ট্রেন চালু হবে।
রেল সূত্র জানায়, ভারত থেকে ব্রডগেজের জন্য আনা ৪০টি লাল-সবুজ কোচের যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষ শেষ হয়েছে। এই ৪০টি কোচ দিয়ে দুই সেট ট্রেন রান করানো সম্ভব। ঢাকা-রাজশাহী রুটে পদ্মা, সিল্কসিটি ও ধূমকেতু ট্রেনে প্রথম লাল-সবুজ কোচ লাগানো হবে বলে জানান রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা। রেল সূত্র জানায়, ব্রেডগেজের জন্য বাকি ৮০টি কোচ আসতে সময় লাগবে। যে ৪০টি কোচ এসেছে সেগুলোতে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। ভারতীয় প্রকৌশলীরা সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে বেশ কিছুদিন ধরে সেগুলো সংশোধন করেছে। বাকি কোচগুলোতে যাতে সেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি না থাকে সেজন্য কাপুরথালা রেল কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সে মোতাবেক সেখানে কাজ চলছে। সে কারণে কোচগুলো আসতে কিছুদিন সময় লাগবে। এ বিষয়ে রেলওয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কোচগুলো আনার সময় যেভাবে চুক্তি হয়েছিল সেভাবেই আসবে। এর বাইরে তাড়াহুড়া করার কোনো সুযোগ নেই।
ব্রডগেজের লাল-সবুজ ট্রেনের গতিবেগ নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪০ কিলোমিটার। এজন্য রেললাইন সংস্কারের কাজ চলছে। রেললাইনে পাথর ফেলা হচ্ছে। ভারত থেকে আনা হচ্ছে এসব পাথর। সূত্র জানায়, ব্রডগেজের জন্য ভারত থেকে আরও ৮০টি এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ৫০টি কোচ আসার পর ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-চিলাহাটি রুটের সবগুলো ট্রেনেই লাল-সবুজ কোচ সংযোজন করা হবে। একই সাথে দ্রুতযান ও একতা এক্সপ্রেসকে ব্রডগেজের আওতায় এনে সেগুলোতেও লাল-সবুজ কোচ লাগানোর চিন্তা ভাবনা চলছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী ইফতিখার হোসেন গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দেশে আসা লাল-সবুজ কোচগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কবে থেকে সেগুলো চালু হবে তার সিদ্ধান্ত দিবে মন্ত্রণালয়। ঈদের আগেই চালু হবে কিনা জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী বলেন, মন্ত্রনালয় চাইলে অবশ্যই হবে। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ১২০টা কোচই চলাচল করবে দেশের ব্রডগেজ লাইনে। নতুন কোচ নিয়ে ট্রেনগুলো ১৪০ কিলোমিটার বেগে চলার সক্ষমতা রাখে। কিন্তু রেললাইনের সক্ষমতা না থাকায় তা চালানো সম্ভব হবে না। যদি ১১০ কিলোমিটার বেগেও চালানো সম্ভব হয়, তাহলেও ট্রেনের সময় কমে আসবে। কোচগুলো আসার পর পদ্মা, সিল্কসিটি ও ধূমকেতুর সব কোচ পরিবর্তন করে লাল-সবুজ কোচগুলো চলাচল করবে।
রেল সূত্র জানায়, নতুন কোচ আসার পর প্রতিটি ট্রেনেই কোচের সংখ্যা বাড়বে। এখন যেমন বেশিরভাগ ট্রেনে নয়টা করে কোচ আছে, ওই ট্রেনগুলোতে ১৩টি করে কোচ থাকবে। প্রতিটি কোচে সিট থাকবে ৯৯টির স্থলে ১০৫টি করে। এছাড়া দু’টি করে এসি চেয়ার ও এসি কেবিন কোচ থাকবে। এরপরও যদি এসি চেয়ার ও কেবিনের জচাহিদা থাকে সেক্ষেত্রে তা আরও বাড়ানো হবে।
অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়া থেকে মিটার গেজের জন্য কোচ এসেছে ১৫টি। আরও কোচ আসবে এ মাসেই। দ্বিতীয় ধাপে কোচ আসার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লাল-সবুজ কোচ চালু হবে। রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, সুবর্ণ দিয়ে পূর্বাঞ্চলে লাল-সবুজ কোচের যাত্রা শুরু হবে। কোরবানী ঈদের আগেই লাল-সবুজ কোচ নিয়ে সুবর্ণ যাত্রা শুরু করবে বলে একাধিক কর্মকর্তা জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন