বিশেষ সংবাদদাতা : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ গতবারের তুলনায় কমেছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৫ হাজার ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করেন। যা মোট বাজেটের ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এক লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ের হিসাব ধরেছেন অর্থমন্ত্রী।
এডিপিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৪ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট উন্নয়ন বাজেটের ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৬ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা, যা মোট এডিপি’র ১৮ দশমিক ২ শতাংশ।
বরাদ্দ কমালেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অগ্রগতি নিয়ে বাজেট বক্তৃতায় আশার কথা শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। তিনি বলেন, গত মে মাস পর্যন্ত দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ হাজার ৫৩৯ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ অর্জনের লক্ষ্যে পৌঁছতে আরও ১৬ হাজার মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে ২৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন, ২০টি নির্মাণের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়াধীন এবং আরও আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে পরিকল্পনা চলছে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে ভারত থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে পাশের দেশগুলো হতে সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধি, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের কাজ শুরু এবং কক্সবাজার ও পায়রায় আরও দু’টি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগের কথাও বাজেট বক্তৃতায় তুলে ধরেন মুহিত।
তিনি জানান, বর্তমানে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৭১ কিলোওয়াট আওয়ারে। জনসংখ্যার ৭৬ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে। উৎপাদন ক্ষমতা বাড়লেও জনগণের বিদ্যুতপ্রাপ্তি যে এখনও নিশ্চিত করা যায় নি, সে কথা স্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ এখনো যথোপযুক্ত নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে ক্ষমতা আছে ভোক্তা পর্যায়ে তার মাত্র ৭০ শতাংশ সরবরাহ করা যায়। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি বিদ্যুৎ চুরি ও সিস্টেম লস কমানোর উপর গুরুত্ব দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের সম্প্রসারণ ও প্রিপেইড মিটার স্থাপনের ফলে ইতোমধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সিস্টেম লস ২০০৮ সালের ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমে গত মার্চে ১০ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন