বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কে জানে কী ঘটবে?

কল্পনামূলক ঘটনা এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পূর্বাভাস

দ্য ইকনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ভবিষ্যত সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়া কঠিন। তবে সমুদ্র সৈকতে বালির উপরে শুয়ে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তা অন্ততপক্ষে বিনোদনমূলক হতে পারে। এটা মনকে প্রসারিতও করতে পারে এবং বর্তমান সম্পর্কে আপনার উপলব্ধির কিছু পরিবর্তনও ঘটাতে পারে।

মহৎ আমেরিকান উপন্যাসের চেয়ে বা চিক-লিট বংকবাস্টারের লম্বা ফিরিস্তির চেয়ে গ্রীষ্মকালের জন্য আমরা ভিন্ন ধরনের কিছু পড়ার প্রস্তাব করছি। ভবিষ্যত সম্পর্কে জল্পনাকল্পনা, এমনকি যদি তা সুদূর-কল্পনাও হয়। তা মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যতের মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে। সবচেয়ে ভালো বিষয়ের জন্য দেখার মত তিনটি স্থান রয়েছে।

প্রথমটি হচেছ দৃশ্য পরিকল্পনা। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের সময় এর উদ্ভব হয়, আর রয়াল ডাচ শেল প্রথম শিল্পে চালু করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভ‚মিকা পলন করে। এ প্রতিষ্ঠান ১৯৭৩ সালের তেল সঙ্কটের সময় প্রতিদ্ব›দ্বী তেল প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে অধিক দ্রুত ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে সক্ষম হয়। মূল চিন্তাটা হচ্ছে একটি পূর্বাভাসের ভিত্তিতে সব বিষয়ে বাজি ধরা পরিহার করা। পরিবর্তে মনোরম ঘটনা বিন্যাসের বিপরীতে ভবিষ্যত প্রকল্প ও পরিকল্পনা পরীক্ষা করা। কতিপয় ভবিষ্যত পরিকল্পনা, সেগুলোর ব্যাপারে কিভাবে সাড়া দেয়া হবে তার সিদ্ধান্ত নেয়া। আগমন আসন্ন লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা বিশেষ করে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক যা ব্যাপক ভাবে গৃহীত হয়েছে। এ বিবেচনায় আমরা এ সপ্তাহের সংস্করণে আমাদের কল্পনার ঘটনা বিন্যাসের নিজস্ব বার্ষিক সেট প্রকাশ করছি। কি হবে যদি আমেরিকা ন্যাটো ত্যাগ করে বা অ্যান্টিবায়োটিক কাজ না করে অথবা ইউরোপে ফেসবুক যদি বন্ধ হয়ে যায়? এ সব ঘটনা হয়ত কখনো ঘটবে না। কিন্তু আপনাকে ভাবতে হবে যদি তা ঘটে তখন আপনি কি করবেন?

কল্পনার আরেকটি পর্যায় হচ্ছে সায়েন্স ফিকশন যা সম্ভবত সমুদ্র সৈকতে বসে বা শুয়ে পড়ার জন্য অধিকতর পছন্দনীয়। যাহোক, সায়েন্স ফিকশনকে প্রধানত কল্পনা নির্ভর হিসেবে দেখা ভুল। এতে ভবিষ্যত সম্পর্কে যা বলা হয় তা প্রায়শই বর্তমানেরই প্রতিফলন। বহু সায়েন্স ফিকশন লেখকই বর্তমান অবস্থাকেই বিষয় করেন। রোবট থেকে জলবায়ু সমস্যা, লিঙ্গ রাজনীতি থেকে যৌক্তিক চরম পর্যায় ও তাদের প্রভাব বিবেচনা করা হয়। এর ফলে সায়েন্স ফিকশন প্রযুক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রবণতার জন্য ফরোয়ার্ড স্ক্যানিং রাডার হিসেবে দরকারি ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্ত সায়েন্স ফিকশন একটি বাস্তব পন্থায় সরাসরি ভবিষ্যত রূপ অঙ্কন করে। আর লোকজন পরিপূর্ণ টেক ইন্ডাস্ট্রি এটাকে সত্য রূপ দেয়ার চেষ্টা করে। আমাজনের আলেক্সা কন্ঠ-সহকারি হচ্ছে ‘স্টার ট্রেক’- এর কথা বলা কম্পিউটার। স্পেস এক্স তার রকেটগুলোকে ড্রোন শিপের উপর নামায় যাদের নামগুলো আয়েন এম. ব্যাংকস- এর ‘কালচার’ উপন্যাস থেকে ধার করা। গোটা ইন্ডাস্ট্রি নিয়েল স্টিফেনসন্সের ‘স্নো ক্যাশ’-এর ভারচুয়াল ওয়ার্ল্ডকে জীবন্ত রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে। এই পরিচিত পরিবেশের বাইরে চীনা সায়েন্স ফিকশন ও আফ্রোফিউচারিজম নতুন পৃথক পরিপ্রেক্ষিত ও সম্ভাবনার কথা বলে।

সর্বশেষ কল্পনা পর্যায় হচ্ছে কর্পোরেট নৃবিদ্যা ও প্রবণতা নির্ণয়। বহু বড় কোম্পানিই ‘প্রান্ত ক্ষেত্র’ খুঁজে বের করার জন্য সঞ্চরমান নৃবিজ্ঞানী নিয়োগ করে। এটা বহির্গামী প্রযুক্তি ও আচরণের উদাহরণ যা ব্যাপকভাবে গৃহীত হওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভের সম্ভাবনা আছে। কল্পবিজ্ঞান উপন্যাস লেখক উইলিয়াম গিবসন এক সময় বলেছিলেন, ‘ভবিষ্যত ইতোমধ্যেই এখানে আছে, এটা শুধু অসমান ভাবে বিতরণ করা হচ্ছে।’ দুই দশক আগে জাপানের স্কুলের মেয়েরা আধুনিক স্মার্ট ফোন হাতে জীবন শুরু করে। যা তাদের ছবি তুলতে ও অ্যাপস ডাউনলোড করতে সক্ষম করে।
এর পর কি? নগদ অর্থের মৃত্যু? মাশরুমের তৈরি কাপড়? কৃত্রিম গোশত? প্রবণণতা নির্ণয়করা প্রায়ই এটা ভুল পান। কিন্তু এটা হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ প্রদান যা আসছে বলে তারা মনে করেন, যে ক্ষেত্রে তারা সঠিক।

পূর্বাভাসের পুরস্কার
শেলের ঘটনা বিন্যাস পরিকল্পনার অন্যতম গুরু পিয়েরে ওয়াক এক সময় ভবিষ্যত নিয়ে কথাবার্তা বলতে পছন্দ করতেন। তিনি বলতেন, আপনারা ভ্রমণের সাধারণ নির্দেশনা জানেন, কিন্তু সঠিক পথ ও দ্রুত সাড়া দেয়ার কৌশল জানা নেই। সম্ভাব্য ভবিষ্যত বিষয়ে অধ্যয়ন আপনার বর্তমান ধ্যান ধারণার পরিবর্তন করতে পারে এবং চারপাশ সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করবে। এটা কৌতুকও হতে পারে। সুতরাং একটা চেষ্টা করুন না। শুরু করতে পারেন এ বিষয়ক কল্পনামূলক ঘটনা দিয়ে। কে জানে কি ঘটবে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন