শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাত কলেজ বাতিলের দাবিতে অচল ঢাবি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে সোমবার কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দেশের বাইরে থাকায় আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে ডাকসু। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন প্রশাসনের কাছ থেকে সাত কলেজ বাতিলের লিখিত সিদ্ধান্ত পাওয়ার আগে আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না তারা।

গতকাল সকাল ৬টার দিকে প্রশাসনিক ভবন, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, মোকাররম ভবন, মোতাহার হোসেন ভবনসহ অন্যান্য অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। তালা লাগনোর পর তা যাতে কেউ খুলতে না পারে সেজন্য তালায় চাবি প্রবেশের জায়গায় প্রথমে মাটি দিয়ে পরে সুপার গøু দিয়ে আটকিয়ে দেয়া হয়। কেউ যেন তালা না খুলে সেটা দেখার জন্য বিভিন্ন ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন গ্রুপ অবস্থান নেয়। তালাবদ্ধ এসব ভবনে লাগানো হয় ফেস্টুন। এতে লিখা ছিলো ‘লাগাও তালা, বাঁচাও ঢাবি’, ঝুলবে তালা ঝুলবে, আন্দোলন চলবে।

২০১৯-২০শিক্ষাবর্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলসহ আন্দোলনকারীদের ৪দফা দাবির মধ্যে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, দুই মাসের মধ্যে সকল পরীক্ষার ফলাফল দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল ধরণের বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণ।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মীদের বাকবিতন্ডার খবর পাওয়া গেছে। সকাল ১০টার দিকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক প্রফেসর আ ক ম জামাল উদ্দিন ও ঢাবি শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল তাদের কয়েকজন নেতা-কর্মীসহ এসে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়ান।

সোমবারের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। স্থবিরতা কাটাতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছে ডাকসু। ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর এবং জিএস গোলাম রাব্বানী সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাবির ভিসি বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় এখন কোন সমাধান দেয়া সম্ভব হবে না। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত। ভিসি দেশে ফিরে আসার পর আমরা তার সাথে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কথা বলবো। এ বিষয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সাত কলেজের বিষয়টির সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জড়িত। আগামীকাল ভিসি দেশে আসবেন। ভিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে আমরা একটা সমাধান বের করার চেষ্টা করবো।

তবে ডাকসুর পক্ষ থেকে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হলেও আন্দোলনে অটল শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মিয়া বলেন, যতদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিভুক্তি বাতিলের লিখিত সিদ্ধান্ত না জানানো হবে ততোদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দাবি আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে আসার কোন যৌক্তিকতা নাই।

২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত হয়। এর ফলে এসব কলেজে ভর্তি পরীক্ষা, পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা ঢাবি থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। কলেজগুলো হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন