শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মৌচাক মার্কেট বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার মালিবাগের মৌচাক মার্কেটের দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুয়েটের প্রতিবেদনের আলোকে সংস্কার করা বা বিল্ডিং কোড অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সক্ষমতা সনদ না পাওয়া পর্যন্ত এসব দোকান বন্ধ রাখতে হবে। আদালত গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব এবং রাজউক কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয় গঠিত বেঞ্চ গতকাল সোমবার রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. রাজিউদ্দিন সারওয়ার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
আদেশের পর মোখলেছুর রহমান জানান, ওই ভবন সংস্কারের নির্দেশ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং দোকান খালি করতে কেন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, রাজউকের অথরাইজড কর্মকর্তাসহ সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ব্যারিস্টার মোতাহার হোসেন্ বলেন, ইমারত নির্মাণ আইন-১৯৫২ এর ৩(বি) ধারা অনুসারে মার্কেট খালি করতে সাত দিনের সময় দিয়ে নোটিস দিতে হয়। এক্ষেত্রে রাজউক সে রকম কোনো সময় উল্লেখ না করে বুয়েটের সুপারিশ অনুসরণ করতে বলেছে। ‘আইনের দৃষ্টিতে এটি কার্যকর হতে পারে না। এ কারণে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে মার্কেটের ভূমি মালিক রিট আবেদনটি করেন, যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি না হয়।”
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ মে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) মৌচাক মার্কেটের ভবন মালিককে একটি চিঠি দেয়। তাতে বলা হয়, ইমারতটি বহু পুরনো এবং বহুল ব্যবহৃত। প্রতিদিন সেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। ভবনটি ‘জীর্ণ ও দৃশ্যত ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়ে ওঠায় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভবনের ‘কাঠামোগত উপযুক্ততার সনদ’ নিয়ে তা রাজউকে দাখিল করতে বলা হয় ওই চিঠিতে। সেইসঙ্গে ‘কাঠামোগত উপযুক্ততা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে’ ভবনটি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় রাজউকের পক্ষ থেকে। এর ধারাবাহিকতায় বুয়েটের দেওয়া সুপারিশ জমা পড়লে ২ মে ভবন মালিককে আরেকটি চিঠি পাঠায় রাজউক।
দ্বিতীয় চিঠিতে বলা হয়, বুয়েটের প্রতিবেদনের পরও কাঠামোগত ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা না নিয়ে ‘দায়িত্বহীনভাবে’ ভবনটি ব্যবহার করে চলেছে মালিক কর্তৃপক্ষ, যা জীবন ও সম্পদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ইমারত আইনের লঙ্ঘন।
বুয়েটের প্রতিবেদনের বরাতে ওই চিঠিতে বলা হয়, ভবনটির ভীতসহ কলামের ভার বহনের ক্ষমতা অপ্রতুল এবং সেটি ভূমিকম্প সহনশীল নয়। চার শতাধিক দোকানের ওই বিপণি বিতানে প্রতিদিন বহু লোক সমাগম ঘটে।
ভবনটির সংস্কার না করলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে দোকান বন্ধ রেখে বুয়েটের করা রেট্রোফিটিং নকশা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে অবিলম্বে সংস্কার কাজ শুরুর জন্য মার্কেট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয় ওই চিঠিতে।
ভবন মালিকের উদ্দেশে সেখানে বলা হয়, ‘কাঠামোগতভাবে ঝুকিপূর্ণ ভবনটি ব্যবহারের কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে একমাত্র আপনি এবং আপনার ব্যবস্থাপনা দায়ী থাকবে। সেক্ষেত্রে ইমারত আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটি চূড়ান্ত নোটিস বলে গণ্য হবে।’
ওই নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জেড কে লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভবন মালিক আশরাফ কামাল পাশা গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করেন। রোববার ও গতকাল সোমবার শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন