শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বিএনপির বিশ্লেষণ

প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গতানুগতিক উচ্চাকাক্সক্ষী প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না
স্টাফ রিপোর্টার : নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে গতানুগতিক ও ‘উচ্চাকাক্সক্ষী’ অভিহিত করে এর বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার সকালে গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক মতামত তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রশ্ন তুলেন।
একই সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল ফোনের সিম, কম্পিউটার ও এর নানা যন্ত্রাংশসহ তথ্য প্রযুক্তির পণ্যেরে ওপর যে করের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প মালিকদের জন্য উৎস কর বৃদ্ধি, হাসপাতালে ব্যবহৃত কিছু যন্ত্র, ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রামে ব্যবহৃত কাগজ এর আরোপিত করারোপের যেসব প্রস্তাব করা হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনার দাবিও জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, এক অর্থে এই বাজেট গতানুগতিক। দূরবর্তী অতীতের বাজেটের আকারের সঙ্গে তুলনা করলে এটি (প্রস্তাবিত বাজেট) উচ্চাকাক্সক্ষী। অর্থমন্ত্রী নিজেও সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন বাজেট উচ্চাকাক্সক্ষী। তবে বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমরা মনে করি, এই বাজেট মানুষের কল্যাণ আনবে না। এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, এর পাঁচ দিন পর বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানালো। গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দলের বিশ্লেষণ তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে অনুন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এবার অনুন্নয়ন বাজেট ২ লাখ ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বাজেট ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অনুন্নয়ন ব্যয়ের এই প্রাধান্য দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বিএনপি মনে করে অনুন্নয়ন ব্যয়ের বৃত্ত সঙ্কুচিত করতে হবে। এটি করা সম্ভব হলে অধিকহারে জনকল্যাণও নিশ্চিত হবে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা আদায় করা সম্ভব হবে না বলে মনে করে বিএনপি। প্রস্তাবিত বাজেটে যেভাবে কর আরোপের চিত্র দেখানো হোক না কেনো বাস্তবে মানুষকে অতিরিক্ত করের বোঝা বহন করতে হবে। মাথাপিছু করের বোঝা বাড়বে।
চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা অর্থমন্ত্রী বাজেটে নির্ধারণ করেছেন, তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল।
ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগে মন্থরতা, রাজস্ব সংগ্রহে বিশাল অঙ্কের ঘাটতি, বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি ও কাক্সিক্ষত সক্ষমতার অভাব প্রভৃতি কারণে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্জন নিয়ে আমরা সংশয় প্রকাশ করেছি। প্রথমবারের মতো এই অর্জন বলে অর্থমন্ত্রী যে দাবি করছেন, তা তথ্য সম্মত নয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজি পাচার রোধে নীতিকৌশল চিহ্নিত করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সামাজিক উন্নয়ন খাতের উন্নয়নে যেসব বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তা পর্যাপ্ত হয়নি বলে মনে করে বিএনপি। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতসহ মেগা প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির সমালোচনাও করেন মির্জা ফখরুল।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রকল্প বাস্তবায়ন গতি মন্থরতা এবং অর্থের অপচয়ের কারণে এডিপির গুনগতমান নিয়েও প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব।
প্রতিবছর ২৪ লাখ মানুষ বেকার হচ্ছে উল্লেখ করে বেকারত্ম দূরীকরণে বাজেটে কোনো সুনির্দিষ্ট কৌশল নেই বলে এর সমালোচনা করেন তিনি।
বিএনপি মনে করে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূল নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদের পক্ষেই সত্যিকারের দেশপ্রেম ও জনকল্যাণমুখী বাজেট দেয়া সম্ভবব। বর্তমান সরকারের কোনো রকম চরিত্র নেই। বিএনপি আশা করে এজন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয়ি নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, এমএ কাইয়ূম ও আব্দুুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন