ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : চুয়াডাঙ্গায় ক্লিনিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম হত্যায় পাঁচ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অংশ নেয়। লুঙ্গি পরা ও খালি গায়ে থাকা এ সন্ত্রাসীদের মুখে গামছা বাঁধা ছিল। এদের চারজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও একজনের হাতে ছিল রামদা।
নজরুল হত্যার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ আব্দুল্লাহর কাছ থেকে পুলিশ এ তথ্য পেয়েছে। তাঁর বর্ণনামতে, গত সোমবার তিনি ও নজরুল মোটর সাইকেলে করে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুর থেকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার তিওরবিলা গ্রামে বাড়িতে ফিরছিলেন। গ্রামের দোলেখাল মাঠে পৌঁছালে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা নজরুলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে মোটরসাইকেলসহ তাঁরা দু’জনেই পড়ে যান। তিনি পালিয়ে গেলে নজরুলকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনায় নজরুলের ভাই মো. আকতারুজ্জামান বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় গতকাল মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাত পরিচয় সন্ত্রাসীদের আসামি করা হলেও তিওরবিলা গ্রামের ছয়জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকায় নজরুলের বাবার হত্যাকারীরাও রয়েছেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী রাসেলকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নজরুল ইসলাম ঝিনাইদহের হরিণাকু-ু শহরে আনোয়ার ক্লিনিক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারেও তাঁর আরেকটি ক্লিনিক আছে। গ্রামের বাড়িতে নজরুলের ১০ বছর ও তিন মাস বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী থাকেন। তাঁর গোপনে বিয়ের ব্যাপারে গুঞ্জন রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্রে জানা যায়, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে আলমডাঙ্গা থানায় চারটি মামলা রয়েছে। এলাকার সন্ত্রাসীদের সঙ্গেও তাঁর সখ্য ছিল। আট মাস আগে একটি অপহরণ মামলায় তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। দুই মাস আগে কারামুক্ত হয়ে তিনি বাড়ি ফিরে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট করেন। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে ও খুনিদের ধরতে অভিযান চলছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সন্ত্রাসীদের হাতেই নজরুল খুন হয়েছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে নজরুলের বাবার খুনিসহ ফাঁসির দ- থেকে মুক্ত আসামিরা মিলে এলাকায় নতুন বাহিনী গঠন করেছে। ভারি অস্ত্রে সজ্জিত এই বাহিনীর সদস্যরা আলমডাঙ্গা, হরিণাকু-ু ও চুয়াডাঙ্গা সদরের বেশ কয়েকটি গ্রামে চলাফেরা করছে। পুলিশের একটি সূত্র এমন খবর উড়িয়ে দেয়নি। সন্ত্রাসীরা হরিণাকু-ুর রিশখালী, হিঙ্গেরপাড়া, কুতুবপুর, তিওরবিলাসহ আলমডাঙ্গা প্রত্যন্ত অঞ্চল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে পুলিশের ওই সূত্রটি জানায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন