শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘের গভীর উদ্বেগ

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশে নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী ‘কমিটি এগেইনস্ট টর্চার’ (সিএটি বা ক্যাট)। এক্ষেত্রে অভিযোগ যাচাই করতে নিরপেক্ষ তদন্তের সুপারিশসহ প্রায় ৯০টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে নির্যাতন ও অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কি অগ্রগতি হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে এক বছরের মধ্যে একটি ফলোআপ রিপোর্ট জমা দিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহŸান জানিয়েছে ৭টি মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন। এর মধ্যে রয়েছে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি), এশিয়ান ফেডারেশন এগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপেয়ারেন্সেস (এএফএডি), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), এফআইডিএইচ-ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, অধিকার, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন এগেইনস্ট টর্চার। এসব সংগঠন এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য। একই সঙ্গে সমস্যার ভয়াবহতা স্বীকার করে নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে।

যৌথ ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে ‘কনভেনশন এগেইনস্ট টর্চার অ্যান্ড আদার ক্রয়েল, ইনহিউম্যান অর ডিগ্রেডিং ট্রিটমেন্ট অর পানিশমেন্ট’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। তারপর এবারই এ বিষয়ে প্রথম রিভিউ রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট পর্যালোচনা শেষে ক্যাট গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রকাশ করেছে ‘কনক্লুডিং অবজার্ভেশনস’।
কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো বিধিবিধান মেনে চলছে কিনা তা নজরদারি নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়ে উঠেছে ক্যাট। তারা ১৬ পৃষ্ঠার যে উপসংহার দিয়েছে তাতে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়াবহ ও নিয়মিত নির্যাতন ও দুর্ব্যবহার নিয়ে গুরুত্বর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বেশির ভাগই প্রায় দায়মুক্ত পরিবেশে এসব নিয়ম লঙ্ঘন করে থাকেন।

৭টি মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনের ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সরকার তার রিপোর্টে যেসব তথ্য দিয়েছে সে অনুযায়ী, ২০১৩ সালে কার্যকর হওয়া টর্চার অ্যান্ড জুডিশিয়াল ডেথ (প্রিভেনশন) অ্যাক্টের অধীনে মাত্র ১৭টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এগুলোর একটিরও তদন্ত সম্পন্ন হয় নি। ক্যাট নোট দিয়েছে যে, নির্যাতিতরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যদি নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে যান তাহলে তাদেরকে হয়রানী করা হয়। হুমকি দেয়া হয়। প্রতিশোধ নেয়ার ভয় দেখানো হয়। বিপুল সংখ্যক নির্যাতন, খেয়ালখুশি মতো গ্রেফতার, অজ্ঞাত আটক, গুম ও নিরাপত্তা হেফাজতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ক্যাট। এসব অভিযোগ যাচাই করতে নিরপেক্ষ তদন্তের সুপারিশ করেছে তারা। এ ছাড়া অজ্ঞাত আটক, গুম, আটকের পরের অবস্থা, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, প্রতিশোধ, হয়রানি, মানবাধিকারের পক্ষের কর্মী, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, আদিবাসী, জাতি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু স¤প্রদায় ও অন্যান্য বিপন্ন গ্রæপের বিরুদ্ধে সহিংসতাসহ ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আরো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ক্যাট। একই সঙ্গে তারা এসব বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরেছে বাংলাদেশের কাছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন