অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে টকশোর আলোচকরা দায়ী। টকশোতে আলোচকরা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দেন। তারা এমন আলোচনা করেন যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ জানান, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চাই। তবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
যারা উৎপাদন করে এবং যারা বিক্রি করে তাদের কাছ থেকে কিনে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে ছাড়ে না। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি করে। এ রকম কারসাজির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন ব্যবস্থা নিবো।
চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে এবং তা স্বাভাবিক থাকবে। গত দুই বছরও স্বাভাবিক ছিলো। এবারো স্বাভবিক থাকবে। সংযমের মাসে ব্যবসায়ীদের সংযমী হওয়ারও আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর না করাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা বাজেট দিয়েছি, ভ্যাট নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। আমরা সেটা কার্যকর করি নাই। একটি সহনীয় বাজেট দেয়া হয়েছে। বাজেট দেয়ার পর বাজারে অন্য রকম প্রতিক্রিয়া হয়, এবার সেটি হয় নাই। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হন, এটা যেমন চাই না, তেমনি ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হোক, সেটাও চাই না। বিষয়টি যাতে স্বাভাবিক থাকে, সেই দিকেই খেয়াল রাখতে হবে।
চিনি ও ছোলা ব্যতীত অন্য সকল জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিকই আছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এগুলো স্বাভাবিকই থাকবে। সামনের কয়েক দিনের মধ্যে আরও স্থির হবে। চিনির দর নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে মন্ত্রী বলেন, গতকাল খাতুনগঞ্জে এক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং দুইজনকে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশীয় চিনি শিল্পকে রক্ষা করতে ট্যারিফ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ১৮ টাকা আমরাই বৃদ্ধি করেছিলাম। এরপরও চিনির মূল্য ৬০ টাকার নীচে থাকার কথা। হয়তো আকস্মিকভাবে কেউ কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা ধরা পড়েছে। তিনি আরো বলেন, চিনি যারা পরিশোধন করে তারা ৪৮ টাকা দরে বিক্রি করে। পাইকাররা যদি ২ থেকে ৩ টাকা ব্যবসা করে, খুচরা বিক্রেতারা যদি ৫ টাকা লাভ করে তাহলেও এটা ৫৭-৫৮ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।
ছোলার মূল্য বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম ছিল কেজি প্রতি ৫২ টাকা। সেটি এখন ৭৩ টাকা। ৬০ ভাগ দাম বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারতের বাজারে ছোলার ঘাটতি ১০ লাখ টন। অস্ট্রেলিয়ায় ১০ লাখ টন উদ্ধৃত্ত থাকলেও ভারত সেটার পুরোটা নিয়ে নিচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন