শেষ
ইসলাম ধর্ম যে নারীর মাথায় সম্মানের মুকুট রেখেছিল এবং গলায় পবিত্রতা ও সতীত্বের মালা পড়িয়েছিল সেই নারীকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি শোপিস এবং পর পুরুষের ক্লান্তি দূর করার জন্য চিত্তবিনোদনের বস্তুতে পরিণত করা হলো। বিজ্ঞাপনের পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে।
পশ্চিমাদের হোটেলগুলো দেখুন- দুনিয়ার সমস্ত নিম্ন শ্রেণির কাজ নারীর কাঁধে। দোকানে মাল বিক্রির জন্য কদাচিৎ পুরুষ পাবেন। হোটেলের পর্যটকদের রুম পরিস্কার করা, তাদের বিছানার চাদর পরিবর্তন করা এবং কক্ষ পরিচর্চার সেবা সব নারীর কাঁধে। অভ্যর্থনার জন্য দরজায় নারীকে সাজিয়ে দাড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। এটা হচ্ছে ঘরের বন্দিশালা থেকে বাহিরের স্বাধীনতা স্বাদ। এ স্বাধীনতায় কি নারীর উপকার হচ্ছে? নারী নিজের ভাই, স্বামী, বাবা আত্মীয়দের জন্য রান্না করে সেটা হলো চার দেয়ালের বন্দি এবং অপমান। আর ঐ মহিলা পর পুরুষের জন্য রান্না করা, ঘর পরিস্কার করা , প্লেনে তাদের আপ্যায়ন করা এবং দোকানে হাসি রস দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা স্বাধীনতা ও সম্মান! একবার ভাবুন, এটা নারীদের করুন পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি না?
জোরগলায় বলা হয়ে থাকে- জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য অর্ধেক জনসংখ্যাকে (নারী) কর্মহীন অঙ্গ বানিয়ে রাখতে পারি না। এ কথাগুলো এমনভাবে বলা হয় যেন আমাদের দেশে সমস্ত পুরুষের কর্মসংস্থান পুর্ণ মাত্রায় অর্জিত হয়ে গেছে। অতচ হাজার হাজার উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন পুরুষ বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোন পিয়ন কিংবা চালকের পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে সেখানে শত শত মাষ্টার ডিগ্রিধারী পুরুষের আবেদন জমা হয়। আগে অর্ধেক পুরুষ জনসংখ্যাকে জাতীয় অগ্রগতির কাজে লাগান। পরে নারীর কথা চিন্তা করুন।
নারী সমাজকে বাহির করে ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস করা হচ্ছে। নারী-পুরুষ বাহিরে আর নিজ সন্তান গৃহকর্মীর কাছে। অতচ মা হচ্ছেন সন্তানের জন্য প্রথম আদর্শ শিক্ষক। সেখানে সন্তান মায়ের অনুপস্তিতিতে কাজের মেয়ের কাছে কর্কশ আচার আচরণ শিখছে। সকাল থেকে বিকাল কোন ক্ষেত্রে রাত পর্যস্ত বাহিরে অবস্থান করার কারণে মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু সন্তান।
স্বামী-স্ত্রী দুইজন দুই জায়গায় চাকরি করে। সেখানে অবাদ স্বাধীনতা যদি থাকে সে ক্ষেত্রে দেখা গেছে তাদের মধ্যে দুর্বল সম্পর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের সম্পর্কের মধ্যে টানা পড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এ অবস্থায় অন্যের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সচেতন মহলের কাছে আমার প্রশ্ন- নারীর মুক্তি হচ্ছে? যদি হয়ে থাকে তাহলে এত নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষন বেড়ে চলেছে কেন?
সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ রাষ্ট্রপতির একটি আন্দোলন জেগে উঠুক প্রাণের বাংলাদেশে:
এব্যাপারে সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ রাষ্ট্রপতি মিখাইল গরবাচেভ একটি বই লিখেছেন। বইটির নাম “প্রোস্ট্রাইকা”। বর্তমান পৃথিবীতে বইটি প্রসিদ্ধ। এ বইয়ে লেখক দংঃধঃঁং ড়ভ বিসবহ’ (নারীর মর্যাদা) শিরোনামে একটি অধ্যায় লিখেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন: “ আমাদের পশ্চিমা সমাজে নারীদেরকে ঘর থেকে বের করার ফলে নিশ্চয় আমরা কিছু অর্থনৈতিক লাভ অর্জন করেছি। এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এজন্য যে, পুরুষও কাজ করছে, নারীও কাজ করছে। কিন্তু উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়া সত্তে¡ও এর অবশ্যম্ভাবী ফল এই হয়েছে যে, আমাদের পারিবারিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। আর এই পারিবারিক সিস্টেম ধ্বংস হওয়ার ফলে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা ঐ লাভের থেকে বেশি যা উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে আমাদের অর্জিত হয়েছে। অতএব, আমি আমার দেশে ‘প্রোস্ত্রয়কা’ নামে এক আন্দোলন শুরু করছি। যার মূল উদ্দেশ্য হল, যে সমস্থ মহিলা ঘর থেকে বের হয়েছে তাদেরকে কিভাবে ঘরে আনা যায়, তার উপায় বের করতে হবে। তা না হলে যেভাবে আমাদের পারিবারিক সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে তাতে আমাদের গোটা জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে।”
সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ রাষ্ট্রপতি মিখাইল গরবাচেভের এই লেখার আলামত আমাদের দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং নারী সমাজকে তার সম্মান দিতে উপরোক্ত ইতিহানটা যথেষ্ট। জ্ঞানীর জন্য ইশারাই যথেষ্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন