অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ ও বাঙালির সবচেয়ে হদয়বিদারক ও শোকের দিন ১৫ আগস্ট। প্রতি বছর দিনটি আসে বাঙালির হৃদয়ে শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস হয়ে। ইতিহাসের বেদনাবিধুর ও বিভীষিকাময় একটি দিন। ১৯৭৫ সালের এ দিনে সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যয়। সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল সেনাবাহিনীর কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী সদস্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি জীবনের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতির জন্য রচনা করেন ইতিহাসের এক অমোঘ অধ্যায়। পৃথিবীতে কোনো জাতিই মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর এক তেজোদীপ্ত ভাষণেই উদ্বুদ্ধ গোটা জাতি বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন স্বভাবনেতা। কি বাল্যে কি কৈশোরে কি মত্ত যৌবনেÑসবখানেই ছিলেন তিনি এককালজয়ী মহাপুরুষ। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির ইতিহাসের এক অবিভাজ্য সত্তা। জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এ স্বাধীন বাংলাদেশ।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থবিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারি কল্যাণ সমিতি আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের আজ ও আগামীর মধ্যে সেতু বন্ধন। তিনি তার জীবনে অল্প সময়ে আমাদের আগামীর সকল নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছেন। অতি অল্প দিনে আমাদেরকে দিয়েছেন একটি সংবিধান যেখানে সবকিছু রয়েছে। আমাদের আগামীর পরিকল্পনা, শহর গ্রামের ভেদাভেদ থাকবেনা, ধনী দরিদ্রের ভেদাভেদ থাকবেনা, উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সকল শ্রেণীকে সম্পৃক্ত করতে হবে, যাদের জন্য উন্নয়ন তারা যেন বঞ্চিত না হয় তাদেরকে সম্পৃক্ত করেই উন্নয়ন পরিচালনা করতে হবে- এই ধরনের সকল নির্দেশনা। যারা তাকে হত্যা করেছিল তারা ভেবেছিল তারা বাঙ্গালীর মন থেকে বঙ্গন্ধুকে মুছে দিবে। কিন্তু তারা ভুল করেছিল কারন তারা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর মত নেতাকে মুছে দেওয়া যায়না। যতদিন এ পৃথিবী থাকবে, যতদিন সূর্য উঠবে ততদিন তিনি থাকবেন সূর্যের মত দেদীপ্যমান। আমেরিকার মায়েরা তাদের সন্তানদের কোলে নিয়ে বলে বাবা তুমি বড় হয়ে জর্জ ওয়াশিংটন হবে, দক্ষিণ আফ্রিকার মায়েরা বলে বাবা তুমি বড় হয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা হবে কিন্তু আমাদের দূর্ভাগ্য যে আমাদের মায়েরা বলতে পারেনা যে তুমি বড় হয়ে বঙ্গবন্ধু হবে। কারন কিছু কুচক্রিরা আমাদেরকে সেই জায়গাটাতে পৌছাতে দেয়নি। কিন্তু তারা জানেনা জাতির জনককে কখন জাতির কাছ থেকে দূরে রাখা যায়না, বঙ্গবন্ধুকে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবেনা। তিনি আছেন তিনি থাকবেন। তিনি জাতির জনক। তিনি আমাদের বিশ্বাস, তিনিই লাল-সবুজের বাংলাদেশ। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরেফিরে আমাদের মাঝে ধরা দিবেন, শুধু আমাদের মাঝে নয় শত শত বছর পরেও যারা পৃথিবীতে আসবে তাদের মাঝেও তিনি থাকবেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি নাম, বঙ্গবন্ধু একটি দেশ, বঙ্গবন্ধু একটি স্বপ্ন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জীবন স্বত্তা, বঙ্গবন্ধুর কখনোম মৃত্যু হতে পারে না। আসুন, আমরা জাতির জনককে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি। তার ত্যাগ এবং তিতীক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
অর্থবিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. এনামুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগেরর সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন