তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন পৃথক লাইসেন্স প্রদানের নিয়ম চালু করা। একই সঙ্গে যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় তামাক নিয়ন্ত্রণে একটি বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) এইড ফাউন্ডেশন ও তামাক বিরোধী জোটের উদ্যোগে আর্কিটেক্ট ইন্সটিটিউট, আগারগাঁয়ে কনফারেন্স রুমে খুলনা সিটি কর্পোরেশনসহ ১০ টি পৌরসভার ও ঢাকার মানিকগঞ্জ, সিঙ্গাইর, ধামরাই, সাভার পৌরসভার লাইসেন্সিং কর্মকর্তা ও সেনেটারি ইন্সপেক্টরের উপস্থিতিতে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, সাভার পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল গনি, ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির ও দি ইউনিয়নের কারিগরি উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। সভাপতিত্ব করেন এইড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বকুল।
প্রেজেন্টেশন উপস্থাপণ করেন এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগাম অফিসার কাজী মোহাম¥দ হাসিবুল হক। সঞ্চালনা করেন এইড ফাউন্ডেশনের এডভোকেসি অফিসার আবু নাসের অনীক। পরবর্তীতে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন পৌরসভার লাইসেন্সিং কর্মকর্তা ও সেনেটারি ইন্সপেক্টর সহ সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, তামাক উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ব্যবহারসহ সকল পর্যায়ে স্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং পরিবেশের জন্য মারাত্বক ভীতিকর। সে কারণে তামাকের ক্ষতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণের কোন বিকল্প নেই। আরো সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি) লক্ষমাত্রা অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার যদি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয় তবে এসডিজি-৩ (সকল বয়সের সকল মানুষের জন্য সুস্থ্য জীবনের নিশ্চয়তা ও জীবনমান উন্নয়ন) এবং ৮ (স্থিতিশীল,অর্ন্তভূক্তি মূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন) অর্জন বাধাগ্রস্থ হবে। তার কারণে তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই।
একই সঙ্গে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে ও বিপণনের জন্য বাংলাদেশে কোন সু-নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এমনকি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের সাথে সম্পৃক্তদের নির্ধারিত কোন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের ব্যবস্থা নাই। যে কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকা, ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর, খাবারের দোকান, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে অনিয়ন্ত্রিতভাবে তামাকজাত পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। সহজ লভ্যতা ও সহজ প্রাপ্যতার কারণে যত্রতত্র তামাকজাত পণ্যের বিপণন কেন্দ্র গড়ে উঠছে। উৎকন্ঠার বিষয় এ সকল দোকানের সংখ্যা দিনদিন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এর বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা প্রণয়ন করে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের বাস্তবতায় এফসিটিসি বাস্তবায়নে একটি কার্যকারী পদক্ষেপ হতে পারে এই লাইসেন্সিং ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, এইড ফাউন্ডেশন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে তামাক নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত করতে খুলনা ও ঢাকা বিভাগের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় তামাকজাত পণ্য ক্রয়-বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে পৃথক লাইসেন্স প্রদানের লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে। যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় তামাক নিয়ন্ত্রণে একটি বড় সমস্যা। এ সকল খুচরা বিক্রেতারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন সংস্থার নিয়ন্ত্রণে নেই। এ সকল বিক্রেতা আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন প্রচার এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নিকট তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করে আসছে। এ সকল বিক্রেতাদের লাইসেন্সের আওতায় আনার প্রেক্ষিতে অনেক পৌরসভায় প্রত্যাশিত ফল পাওয়া গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন