রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আসাম ইস্যুতে ভারতের বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা চায় বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:২৩ এএম

আসামের নাগরিকপুঞ্জি নিয়ে সেখানকার মন্ত্রী, বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চায় বিএনপি। গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আসামের নাগরিকপুঞ্জি নিয়ে সেখানকার মন্ত্রীবর্গ, বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বক্তব্য ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে, বাদ পড়া ১৯ লাখের অধিকাংশ বাংলদেশী নাগরিক। 

এই ধরনের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে যে, ভারতের মন্ত্রী এবং নেতারা এধরণের বক্তব্য দিলেও আমাদের সরকার এ ব্যাপারে নিরব থাকছেন। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে যে বৈঠক হয়েছে, সেই বৈঠকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন যে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী তাকে নিশ্চিত করেছে যে, এটা ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। বিষয়টা যখন বাদ পড়াদের বাংলাদেশের নাগরিক বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে তখন কিন্তু সেটা ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয় থাকছেন না। আমরা এই বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশের সরকারের কাছে এই ব্যাপারে পরিস্কার ব্যাখ্যা চাই, ব্যাখ্যা দাবি করছি। জাতিকে অন্ধকারে না রেখে সরকারের জানানো উচিত আসলে ব্যাপারটা কী?
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অন্যান্য সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ১৪ অক্টোবর ৮টি উপজেলায় যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে আমরা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃত্ত অর্থ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সরকারি আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃত্ত অর্থ সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনবে। এই থেকে এটাই প্রমাণিত হয়েছে আসলে সরকার অর্থনৈতিক দিক থেকেও দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন যেসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের জমাকৃত উদ্ধৃত্ত আছে এখানে কখনো কাউকে হাত দিতে হয়নি। সরকার বলছে সেটা তারা বিভিন্ন প্রজেক্টে ব্যয় করতে চায়। এটাতে সরকারের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে। এতে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে ব্যাংকগুলো যেসব ব্যাংকে ওইসব প্রতিষ্ঠানের টাকাসমূহ জমা আছে। যখনই টাকাগুলো নিয়ে যাবে তখন তারল্য সংকট দেখা দেবে ব্যাংকগুলোতে। এছাড়া যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারি ওইসব স্বায়েত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন তাদের যেসব বেতন-ভাতা, পেনশন-গ্রাচুয়িটি-এসব অর্থ তারা সঠিকভাবে পরিশোধ করতে পারবে বলে আমরা মনে করি না, সমস্যা তৈরি হবে।
মহাসড়কে টোল আদায়ের সরকারের সিদ্ধান্তেরও নিন্দা জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনে সেই অবস্থায় দাঁড়ায়নি যে, রাস্তার উপরে টোল আদায় করতে হবে। আমরা মনে করি জনগণের ওপর আরো একটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছে বলে জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা এবং ম্যাডামের পরিবারের সদস্য যারা তার সাথে হাসপাতালে দেখা করতে গিয়েছিলাম তারা জানি দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা কতটা খারাপ। তিনি আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন তিনি ভালো নেই। তার প্রেসার অনেক বেশি, সুগার এতো বেশি যা আশঙ্কাজনক, সুগার লেভেল ১৪, ১৫, ১৬ থাকছে। যা অস্বাভাবিক। আর্থ্রাইটিসের ব্যাথা কমেনি, তার দুই কাধে ব্যাথা রয়েছে, হাতগুলো ব্যাথার কারণে ভালোভাবে মুভ করতে পারে না, হাটু বাকা করতে পারেন না। ২জন লাগে তাকে তুলতে। হুইল চেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। তার এই শারীরিক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এজন্য তিনি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য মুক্তি দাবি করেন। বিকাল ৫টায় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৭টায় শেখ হয়।
স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন