সংস্কার হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষার গ্রেডিং পদ্ধতি। জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে নির্ধারণ করা হয়েছে জিপিএ-৪। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেএসসি পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হবে একই গ্রেডিং পদ্ধতি। গতকাল রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রেড পরিবর্তন সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এই গ্রেড পদ্ধতি উপস্থাপন করেন গ্রেড পরিবর্তন কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর শাহাদাত হোসেন।
সকলের সম্মতিতে খসড়া প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়। নতুন গ্রেডিং পদ্ধতিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকে (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি), এসএসসি, দাখিল ও সমমান, এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষায় নম্বরের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ জিপিএ-৪ করা হবে। এ ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ১০০ পর্যন্ত ‘এ’ প্লাস জিপিএ-৪। ৮০ থেকে ৮৯ পর্যন্ত ‘এ’। ৭০ থেকে ৭৯ বি প্লাস, ৬০ থেকে ৬৯ ‘বি’, ৫০ থেকে ৫৯ ‘সি’ প্লাস, ৪০ থেকে ৪৯ ‘সি’, ৩৩ থেকে ৩৯ ‘ডি’ এবং ০ থেকে ৩২ ‘এফ’ গ্রেড বা ফেল হিসেবে গন্য হবে।
প্রফেসর শাহাদাত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং পদ্ধতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে নতুন জিপিএ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বহির্বিশ্বের সঙ্গেও সমন্বয় থাকছে। পুরোনো পদ্ধতি জিপিএ-৫ বদলে চলতি বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি-জেডিসি) পরীক্ষা থেকে জিপিএ-৪ পদ্ধতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটি একটি বড় কর্মযজ্ঞ, তাই এটি চূড়ান্ত করার আগে আরও দুই-একটি সভা করা হবে। পরিবর্তনের ফলে কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে বিষয়েও খেয়াল রাখা হচ্ছে। এরপর ২০২১ সালের এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষাতেও এ পদ্ধতি চালু করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় জিপিএ-৫ না থাকায় এবং দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ-৪-এ ফল প্রকাশ করায় বিদেশে পড়াশোনাসহ চাকরি পেতে সমস্যা হয়। এ সমস্যা মেটাতেই মূলত গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ বা জিপিএ কমানোর কাজ শুরু হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বর্তমানে জিপিএ-৫ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা কাজ করছে। এটিকে রোধ করতে হবে। এছাড়া জিপিএ-৫ ধরে ফল প্রকাশ করায় বিদেশে চাকরির বাজারেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। কর্মশালায় জিপিএ-৫-এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ প্রবর্তন করলে কী কী সুবিধা-অসুবিধা দেখা দিতে পারে, তা বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চান শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরিবর্তন করলে পুরো সিস্টেমের পরিবর্তন করা দরকার। এবং সেটি যেন মানসম্মত হয়, তা খেয়াল রাখতে হবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. সৈয়দ গোলাম ফারুক, মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কায়সার আহমেদসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন