চলতি মাসেই রাজধানীর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং অক্টোবরে ঢাকায় শুরু হচ্ছে মশা জরিপ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রন বিভাগ এই জরিপ পরিচালনা করবে। কীটতত্ত্ববিদ এবং এন্টোটেকনিশিয়ানের সমন্বয়ে গঠিত আটটি জরিপ দল এই কাজে অংশগ্রহণ করবে। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রন বিভাগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে আরও ৬১৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ঢকায় ১৬৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪৫৬ জন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রন ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২০৩ মৃত্যুর তথ্য এসেছে। যারমধ্যে ১০১ মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করে ৬০ জনে মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সংবাদ সম্মেলনে রোগ য়িন্ত্রন বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, আগামী ১৮ অথবা ২০ তারিখে প্রান্তিক পর্যায়ে মশা জরিপ শুরু করা হবে। প্রাথমিক ভাবে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের এ জরিপ পরিচালিত হবে। এছাড়া আসছে অক্টোবর মাসে রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া মৌসুম পরবর্তী মশা জরিপ শুরু করা হবে। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজম্যান্টের অংশ হিসেবে এ জরিপ পরিচালিত হবে। জরিপে সরকারি কীটতত্ত্ববিদ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কীটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ্যন্টোটেকনিশিয়ানরা অংশগ্রহণ করবে। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু বিস্তারের কারণ কি সেটি অনুসন্ধান করবে এই জরিপ দল। এক্ষেত্রে গ্রমীন এডিস এলবোপিক্টাস বাহক হিসাবে কতটা সক্রিয় সেই বিষয়টিও নজদারী করা হবে।
এদিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বরিশাল বিভাগে তুলনামুলক বেশি হওয়ায় আইইডিসিআর-এর একটি দল সরেজমিন পরিদর্শন নজদারি করতে সেখানে যান। সেখানে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা দেখেন এই বিভাগের ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বরিশাল জেলায় সবচেয়ে বেশি ৫৪ ভাগ। এছাড়া পিরোজপুরে ১৫ ভাগ, ঝালকাঠি ও বরগুনায় ১০ ভাগ ডেঙ্গু রোগী বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে গৃহিনী ৪০ ভাগ, শিক্ষার্থী ৩০ ভাগ, শিশু ১১ ভাগ, ব্যবসায়ী ৭ ভাগ এবং কৃষক ৬ ভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমাার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম) গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৮১ হাজার ১৮৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে ৭৮ হাজার ৪৩৭ জন চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ী ফিরেছেন। যা মোট আক্রান্ত রোগীর ৯৭ ভাগ। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে ২ হাজার ৫৪৬ জন ভর্তি আছে। যাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৩৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের ১ হাজার ৫১৩ জন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন