কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, এ সরকার মসজিদের শহরকে ক্যাসিনোর শহরে পরিণত করেছে। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। এমনিতেই এই সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারমধ্যে প্রকাশ হচ্ছে তাদের লাগামহীন দুর্নীতি। অবিলম্বের এই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। কাদের সিদ্দিকী বলেন, দেশ আজ সংকটের মুখোমুখি, দেশকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচনের আগে আমরা সংলাপ চেয়েছিলাম, শেখ হাসিনা বাধ্য হয়েছিলেন সংলাপ দিতে। এবারও তাকে সংলাপ করতেই হবে। দেশকে বাঁচাতে হলে সংলাপ করতেই হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের ঠেঙ্গিয়ে দুর্নীতি মুক্ত করলেই চলবে না। সর্বক্ষেত্রে অভিযান চালাতে হবে।
তিনি বলেন, অবস্থাদৃষ্টিতে মনে হয় সমস্ত অপরাধের দায়ভার যেন কেবল যারা রাজনীতি করে তাদেরই, বাকী সবাই ধোয়া তুলসি পাতা। প্রশাসনের মধ্যে সুবিধাভোগিদেরও চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রশাসনের ছত্রছায়া ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে মদ, জুয়া ও ক্যাসিনো সংস্কৃতির বিকাশের সুযোগ নেই। এখনো সুবিধাভোগিরা পর্দার আড়ালে রয়ে গেছে।
এই অভিযানকে সমর্থন করেন জানিয়ে বঙ্গবীর বলেন, তবে লোক দেখানো অভিযান হলে আমরা সমর্থন উঠিয়ে নেবো। বহিস্কার ও ভয় দেখানো মানেই বাংলাদেশ দুর্নীতি মুক্ত নয়। যারা ব্যবসা করে তারাও দুর্নীতি করে, শেয়ার বাজারে কারসাজি করে যারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক। লিখিত বক্তব্যে দলের পক্ষে বর্তমানে দুনীতির বিরুদ্ধে অভিযানে সরকারকে মুক্ত কন্ঠে সমর্থন জানানোর কথা বলা হয়। এর পাশাপাশি বলা হয় , এক্ষেত্রে শুধু আওয়ামী ঘরানার লোকদের একের পর এক গ্রেফতার দেখে আমরা অবাক ও বিষ্মিত, তবে দেশের সমস্ত দুনীতি সরকারী দলের নিয়ন্ত্রণে. অন্য দল, গোষ্ঠী তারা কি ধোয়া তুরসী পাতা? ক্রীড়া প্রতিষ্টানগুলি ধ্বংস করে মসজিদের শহর ক্যাসিনোর শহরে পরিণত করায় পুলিশসহ প্রশাসনের কারোর কি ভুমিকা নেই। ব্যাংক, শেয়ার বাজার লুট, টেন্ডার বাজি, রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি, লুটতরাজ এসবের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা আন্তরিকভাবেই এঅভিযানে ব্রতি সেটা দেশবাসী দেখতে চায়।
শুধু ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন বা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা সম্ভব এরকম একটা ধারণা সৃষ্টির অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অথচ দেশে সাম্প্রতিকালে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির মাধ্যমে, যেটা প্রশাসনের মাধ্যমে সংঘঠিত হয়েছে। যে প্রশাসন দিয়ে এত বড় দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে তাদের পক্ষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নৈতিক অবস্থান নেয়া কতটা সম্ভব তা বিবেচনার দাবি রাখে।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের ঠেঙ্গিয়ে দুর্নীতি মুক্ত করলেই চলবে না। সর্বক্ষেত্রে অভিযান চালাতে হবে। মানুষ এখন খালেদা জিয়ার দুই কোটি টাকার মামলার বিষয়টি আমলে নিতে চায় না। এখন জনগণ বর্তমান সরকারের লোকজনের দুর্নীতিকেই আমলে নিচ্ছে।
‘জয় হিন্দ’ বলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.এম আবদুস সোবহানকে বহিস্কারের দাবী জানিয়ে বঙ্গবীর বলেন, এই দালাল-চাটুকার দলে থাকলে সব অর্জন বিসর্জনে চলে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন