নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে সারা দেশের নৌ টার্মিনালে যাত্রী প্রবেশ ফি দ্বিগুন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে বিআইডব্লিউটিএ এ নির্দেশ কার্যকর করেছে। এর ফলে দেশের সর্ববৃহৎ সদরঘাট ও দ্বিতীয় বৃহত্তম বরিশাল নদী বন্দরসহ খুলনা এবং টার্মিনাল ভবন সমৃদ্ধ নদী বন্দরগুলোতে যাত্রী প্রবেশ ফি ৫ টাকার স্থলে ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে নৌপথে যাত্রীদের চলাচলে ব্যয় আরো বাড়ল। তবে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর ও পরিবহন বিভাগের দায়িত্বশীলদের দাবি ২০১৭ সালের পরে আর টার্মিনাল প্রবেশ ফি বৃদ্ধি করা হয়নি। এবারে বর্ধিত অর্থের মধ্যে ২ টাকা যাত্রী কল্যাণ তহবিলে জমা হবে। অবশিষ্ট ৮ টাকা বিআইডব্লিউটিএর রাজস্ব তহবিলে জমা হবে। তবে হঠাৎ করেই নদী বন্দরে প্রবেশ ফি বৃদ্ধির খবরে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়েছে। ৫ টাকার প্রবেশ ফি একলাফে দ্বিগুন করায় বিষয়টিকে অনেক সাধারণ যাত্রী স্বেচ্ছাচারিতা বলেও মন্তব্য করেছেন।
গতকাল বরিশাল নৌ টার্মিনালে প্রবেশ করতে গিয়ে বেশিরভাগ যাত্রীকেই যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা গেছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের জন্য এ বর্ধিত টার্মিনাল ফি যথেষ্ট দুর্ভোগে ফেলেছে। দেশের রেলপথের কোন স্টেশনে টার্মিনাল প্রবেশ ফি নেই।
টার্মিনাল ফি দ্বিগুন করা হলেও যাত্রীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করণে কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নেবেন কিনা তা বলতে পারেন নি। বরিশালসহ দেশের বেশিরভাগ নৌ টার্মিনাল ভবনে যাত্রীদের জন্য নূন্যতম সুযোগ সুবিধা এখনো অনুপস্থিত। এমনকি এসব টার্মিনালের বেশিরভাগেই যাত্রীদের বসার পর্যন্ত ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারের মত মানবিক বিষয়টিও যথেষ্ট অবহেলিত। টার্মিনাল ভবনের শৌচাগারগুলো যাত্রীদের ব্যবহার উপযোগী নয়। যাত্রীদের ব্যাগেজ পরিবহনে ঘাট শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা প্রায়শই অত্যাচারের পর্যায়ে পৌঁছলেও কোন ব্যবস্থা নেই।
সম্প্রতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তারই অংশ হিসেবে ঢাকা, বরিশাল ও খুলনাসহ সব প্রথম শ্রেণির নদী বন্দরের টার্মিনাল ভবনে যাত্রীদের প্রবেশ ফি ৫ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে টার্মিনাল ভবনে প্রবেশের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রবীণ নাগরিক, প্রতিবন্ধী ও গর্ভবর্তী মায়েদের প্রবেশ ফির প্রয়োজন হবে না।
এদিকে নৌ বন্দরে যাত্রীদের প্রবেশ ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছেন বরিশালে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাবেক সদস্য-সচিব অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল। তিনি বলেন, নদী বন্দরে প্রবেশে যাত্রীদের কাছ থেকে ফি আদায়েরই কথা ছিলো না। কেননা বিআইডব্লিউটিএ যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী নৌযান থেকে রাজস্ব পাচ্ছে। উপরন্তু পণ্য পরিবহনে টোল আদায় ছাড়াও লেবার হ্যান্ডলিং ইজারা দিয়ে বিপুল অর্থ আয় করছে। তারপরেও যাত্রীদের কাছ থেকে ৫ টাকার প্রবেশ ফি সহনশীল বলে মেনে নেয়া যায়। কিন্তু ৫ টাকা থেকে তা দ্বিগুন করার বিষয়টি কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন