বরিশালে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে আমরণ অনশনরত রিকশা মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ দুই শ্রমিককে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনশনস্থলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আরও ১৫ অনশনকারী রিকশা শ্রমিককে।
নগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলের দাবিতে গত বুধবার থেকে ২৫ জন রিকশা শ্রমিক নগরীর টাউন হলের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। এদিকে নগরীর কেন্দ্রস্থলে ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে নগরীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এক প্রতিবাদ সভায় অবিলম্বে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি অনিয়ম বন্ধের দাবি জানানো হয়।
অনশনকে কেন্দ্র করে গত দুদিন টাউন হল এলাকা লাগাতার সেøাগান ও বক্তৃতায় মুখরিত। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসে রিকশা শ্রমিকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংহতি প্রকাশ করছেন। পিতাকে রিকশা চালানোর সুযোগ করে দিতে প্রশাসনের প্রতি আকুতি জানিয়ে বক্তৃতা করছেন রিকশা শ্রমিকদের শিশু সন্তানরা।
নাসরিন নামক এক শিশু বক্তৃতা করতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবা চুরি করেন নি, ঘুষ খাননি, তিনি রিকশা চালিয়ে আমাকে স্কুলে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রশাসন কেন রিকশা বন্ধ করে দিলেন। আমার বাবা এখন স্কুলের বেতন দিতে পারছেন না। আমরা খেতে পড়তে পারছি না।
আন্দোলনকারী রিকশা শ্রমিকদের পৃষ্ঠপোষক বাসদের জেলা আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন বলেন, অনশনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৭০ বছর বয়সী রিকশাচালক মো. মজনু এবং সুশান্ত সুকন নামক দুজনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে মো. মজনুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আরও অসুস্থ ১৫ জনকে অনশনস্থলেই স্যালাইন দেয়া হয়েছে।
প্রকৌশলী রুমন আরও জানান, অনশন শুরুর ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রকারের যোগাযোগ করা হয়নি। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিএমপির কমিশনার মো. শাহাবউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করলে তিনি ডিসি ট্রাফিকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেছেন।
উল্লেখ্য, পুলিশের হাতে জব্দকৃত ২ কোটি টাকা মূল্যের ব্যাটারি ও মটর রিকশা শ্রমিকদের ফিরিয়ে দেয়া, বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া ব্যাটারি চালিত রিকশা উচ্ছেদ বন্ধ এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা করে নগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলের দাবিতে বরিশালে রিকশা শ্রমিকরা বুধবার সকাল ১০টা থেকে টাউন হলের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন