ইনকিলাব ডেস্ক : মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত বাংলাদেশসহ সাতটি দেশের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে সে দেশের শিশুদের যৌন নির্যাতন করেছেন। ২০১৪ সালে সংঘটিত এই অপরাধের বিষয়টি কয়েক সপ্তাহ আগে নিশ্চিতভাবে জানা গেছে।
নিউইয়র্কে গত শুক্রবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক আবেগঘন সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করেন এই সংস্থার অন্যতম সহকারী মহাসচিব এন্থনি ব্যানবারি। যৌন নির্যাতনের শিকার বিভিন্ন শিশুর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জাতিসংঘ এই তথ্য প্রকাশ করে। বাংলাদেশ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য দেশগুলো হলো ফ্রান্স, জর্জিয়া, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, নাইজার, সেনেগাল এবং অন্য আরেকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ।
উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত আফ্রিকার এই দেশটিতে শান্তিরক্ষায় সহায়তা দিতে ২০১৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৭০০ সেনা মোতায়েন করা হয়। সে বছর সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করলে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব ইইউর হাত থেকে জাতিসংঘের হাতে হস্তান্তর করা হয়। সেনা ও পুলিশসহ জাতিসংঘের এই মিশনে মোতায়েন করা শান্তিরক্ষীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। ৫০টিরও বেশি দেশের সেনা ও পুলিশের সদস্য এই বাহিনীতে রয়েছেন।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এন্থনি ব্যানবারি। তিনি বলেন, জাতিসংঘের জন্য শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা এমন জঘন্য কাজ করতে পারেন, তা ভাবা যায় না। তিনি আশ্বাস দেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সম্ভাব্য সব রকম সাহায্য করা হবে। দায়বদ্ধতা ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জানা গেছে, নির্যাতিত শিশুদের মধ্যে বালক ও বালিকা রয়েছে, যাদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।
এদিকে জেনেভায় এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দায়বদ্ধতার অভাব ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যর্থতার কারণেই বারবার এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলে তিনি জানান। বেশ কিছুদিন থেকেই মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষী সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের কথা শোনা গেলেও এই প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের কোনো কর্মকর্তা প্রকাশ্যে অপরাধী সদস্যদের দেশের নাম প্রকাশ করলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন