ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন কূটনীতিকদের একটি দল প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সিরিয়া নীতির সমালোচনা করেছেন। পররাষ্ট্র দফতরের এক চ্যানেলে তারা তাদের এই মনোভাব ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র জন কিবরি গত বৃহস্পতিবার একথা নিশ্চিত করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়েছে যে ভিন্নমতাবলম্বীরা সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, সিরিয়ার আলেপ্পোতে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭০ জন প্রাণ হারিয়েছে। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে এসব লোক নিহত হয়। মানবাধিকার বিষয়ক সিরীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা গত বুধবার জানায়, সরকারি ও রুশ বাহিনীর বিমান হামলার পর সরকারপন্থি যোদ্ধারা আলেপ্পো নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জয়তান ও খালাসা গ্রাম পুনর্দখলে সক্ষম হয়। বিদ্রোহীরা দু’টি গ্রামের নিয়ন্ত্রণ হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর সরকারি বাহিনী গ্রাম দু’টির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এদিকে ফ্রান্স ও জার্মান সেনারা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সরকার বিরোধীদের সহায়তা করছে বলে সিরিয়া সরকার যে অভিযোগ করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে জার্মানি। দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে বলা হয়, কোবানি নামে পরিচিত আইন আল-আরব ওমানজিব শহরে ফরাসি ও জার্মান সেনাদের উপস্থিতির কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে আসাদ সরকার। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সিরিয়ার এ অভিযোগ অসত্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এই ভয়াবহ সংঘর্ষের পর মস্কোর উদ্যোগে বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে দুই দিনের এক অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে এ অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ওই মন্ত্রণালয়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে আলেপ্পোতে ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা ছিলেন। গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পর থেকে শহরটি বিদ্রোহীদের দখলকৃত অংশ ও সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পুরো শহরের দখল নেওয়ার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত সরকারি বাহিনী ও সহযোগী মিত্র বাহিনীগুলো বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশটিতে অভিযান শুরু করেছে। বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের শহরতলী দারাইয়াতে এখনও অস্ত্রবিরতি চলছে এবং তা প্রায় পুরোপুরি মেনে চলা হচ্ছে। উল্লেখ্য, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, আর প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস।
ট্রাম্পের শোচনীয় পরাজয় নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত
নির্বাচনে হিলারিকে সহযোগিতার অঙ্গীকার বার্নি স্যান্ডার্সের
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর ব্যাপারে ডেমোক্র্যাট দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছেন ডেমক্রেট দলীয় অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স। তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনই ডেমক্রেট দলীয় মনোনয়নের দৌড় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন না বলে অনলাইনে দেয়া এক বক্তব্যে জানিয়েছেন। নিজের দেয়া বক্তব্যে স্যান্ডার্স হিলারির প্রতি সমর্থন ঘোষণা না করলেও তার উদারনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন তৈরি এবং তা ডেমক্রেটিক পার্টির মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার লড়াইয়ের ব্যাপারে মনোযোগ নিবদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ভারমন্টের সিনেটর স্যান্ডার্স বলেন, আগামী পাঁচমাসে আমরা যে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দায়িত্বের মুখোমুখি হবো তা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় নিশ্চিত করা, শোচনীয়ভাবে পরাজিত করা, এবং স্বল্পসময়ের মধ্যেই এই প্রক্রিয়ায় আমি আমার ব্যক্তিগত ভূমিকা রাখার আশা করছি।
ভারমন্টে নিজের শহর বার্লিংটন থেকে সম্প্রচারিত হওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ডেমক্রেটিক পার্টিকে রূপান্তরের ব্যাপারে হিলারির সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করছি, যেন এই পার্টি শ্রমজীবী ও তরুণদের দলে পরিণত হয়, শুধু ব্যয়বহুল প্রচারমুখী বিত্তবান দাতাদের দলে পরিণত না হয়। গত সপ্তাহে হিলারি ক্লিনটন নিজেকে ডেমক্র্যাট পার্টির মনোনীত প্রার্থী বলে দাবি করার পর থেকে স্যান্ডার্সের উপর মনোনয়নের দৌড় থেকে সরে যাওয়ার চাপ বাড়ছে। কিন্তু তিনি তা প্রতিরোধ করে আসছেন। তিনি বলেন, আয়ের অসাম্য, রাজনীতি ও ওয়াল স্ট্রিটে বিশাল টাকার খেলা বন্ধের যে লক্ষ্য তার রয়েছে তিনি তারজন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না।
আমেরিকাকে গড়ে তুলতে আমাদের অবশ্যই তৃণমূল পর্যন্ত উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা জানি, আমরা সেটা পারি। তিনি আরো বলেন, ফিলাডেলফিয়ায় ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ডেমক্রেট দলীয় জাতীয় কনভেনশন পর্যন্ত আমাদের শক্তি ধরে রাখতে হবে যেখানে আমরা ১,৯০০’রও বেশি ডেলিগেট ভোট পেতে পারি।
এদিকে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডেলিগেট ভোট জয় করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যে ডেমক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন হিলারি ক্লিনটন। ডেমক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২,৩৮৩টি ডেলিগেট ভোট জিতে নিয়েছেন হিলারি। এতে হিলারি দলটির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনোনয়ন নিশ্চিত হলে তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কোনো রাজনৈতিক দল থেকে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। রয়টার্স, এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন