উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ পাস পরীক্ষায় ভাড়াটে ছাত্রী দিয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছেন নরসিংদী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তামান্না নুসরাত বুবলী। এমপি বুবলি ঢাকায় থেকে নরসিংদীতে ৮জন ভাড়াটে ছাত্রী দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার পর সাংবাদিকদের হাতে ধরা পড়ে যান।
সাংবাদিকরা ভাড়াটে ছাত্রীকে তার নাম জিজ্ঞাসা করলে ছাত্রী প্রথম নিজের নাম তামান্না নুসরাত বুবলী বলে দাবি করেন। পরে সাংবাদিকরা চ্যালেঞ্জ করলে সে তার আইডি কার্ড দেখাতে ব্যর্থ হয়। এ সময় ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় প্রক্সি পরীক্ষা দিতে আসা ভাড়াটে ছাত্রীটি পরীক্ষার হল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। এই ঘটনা বেসরকারি টিভি চ্যানেলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীকে বহিস্কার করতে বাধ্য হন। এর আগে ঘটনা জানার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ এমপি বুবলি ও তার লোকজনের ভয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। তাছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ভাড়াটে ছাত্রীরা তাদের আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে মর্মে জিডির কপি নিয়ে আসার কারণে তারা এমপি বুবলির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
এমপি বুবলী আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিহত নরসিংদীর সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের স্ত্রী। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী মহিলা এমপি তামান্না নুসরাত বুবলী তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন যে তিনি এইচএসসি পাশ। পরে উচ্চশিক্ষা অর্জনে তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ কোর্সে ভর্তি হন। জাতীয় সংসদের একজন এমপি হয়েও তিনি বিএ পাস করার জন্য অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ কোর্স পর্যন্ত চারটি সেমিস্টার ও তেরোটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও তিনি একটিতেও অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু তারপক্ষে এখন পর্যন্ত ৮জন নারী পরীক্ষা দিয়েছেন। সবাই সবকিছু জানলেও এমপির ভয়ে কেউ কিছু বলেনি।
তবে কক্ষ পরিদর্শক জানিয়েছেন, ওই পরীক্ষার্থী দাবি করেছেন তার আইডি কার্ড হারিয়ে গিয়েছে। সে জিডির কপি নিয়ে এসেছে। তাই তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়েছে। এদিকে মহিলা এমপি বুবলি বিএ পরীক্ষায় অনিয়মের ঘটনা টেলিভিশন চ্যানেল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ এমপি বুবলিকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করেছে। ঘটনা তদন্তে নরসিংদী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ উল্লাহ কাজলকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটিকে সাত দিনের ভিতরে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, এমপি বুবলির এপিএস কিছু সন্ত্রাসীকে নিয়ে পরীক্ষার দিন কলেজ চত্বরে এসে বসে থাকতো। তাকে সহযোগিতা করত স্থানীয় চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের একজন সচিব। স্থানীয় লোকজন এসব ঘটনা জানলেও মুখ খুলতে সাহস পেত না। বুবলির নাম্বারে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন