নরসিংদী-গাজীপুরের মহিলা এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীর পরীক্ষা জালিয়াতির ঘটনা টক অব দি কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। নরসিংদী শিক্ষাঙ্গনসহ দেশের সর্বত্রই এ নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে ব্যাপক লেখালেখি। অনেকেই বলছেন, এমপি বুবলির এই পরীক্ষায় জালিয়াতির সাথে অনেকে জড়িত। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীকে বহিষ্কারসহ তার সকল পরীক্ষা বাতিল করা হলেও জালিয়াতির সাথে জড়িত কারো বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। গ্রেফতার করা হচ্ছে না জালিয়াতির ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এমপি বুবলির ৮টি পরীক্ষায় প্রক্সি দানকারী ৮জন ছাত্রী, এমপি বুবলির কথিত এপিএস ফারুক, চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আতিকুল ইসলামকে। অথচ আটজন প্রক্সি পরীক্ষার্থীরই ছবি কলেজের সিসি ফুটেজ রয়েছে। নরসিংদী সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর হাবিবুর রহমান আকন্দ রহস্যজনক কারণে এই সিসি ফুটেজ চেপে রেখেছেন।
নরসিংদীর কয়েকজন শিক্ষাবিদ বলেছেন, নরসিংদী সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবুর রহমান আকন্দ, হল সুপার প্রফেসর শফিকুল ইসলাম, হল পরিদর্শক এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীর জালিয়াতির ঘটনা থেকে নিজেদের দায় এড়াতে পারবেন না।
এমপি বুবলিকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত বিএ পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী হতে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়েছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে তাকে কলেজে গিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হয়েছে। তাকে ক্লাস করতে হয়েছে। ছবি দিয়ে পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করতে হয়েছে। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় এমপি বুবলি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথেই ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হয়েছেন। তাছাড়া এমপি বুবলি স্থানীয় এমপি হিসেবে সকলের সাথেই পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও তার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। এক্ষেত্রে এমপি বুবলি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, নরসিংদী সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবুর রহমান আকন্দ, হল সুপার প্রফেসর শফিকুল ইসলাম, হল পরিদর্শকসহ সকলের সাথেই পরিচিত। এরপরও এমপি বুবলি সম্পূর্ণ জালিয়াতির আশ্রয় ক্রমান্বয়ে ৮টি পরীক্ষা ছাত্রীর মাধ্যমে কিভাবে দিতে পারে এ নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের উদ্বেগ করেছে।
এমপি বুবলীর কথিত এপিএস ফারুক চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আরিফুল ইসলাম পরীক্ষা চলাকালীন কিভাবে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে গিয়ে বসে থাকতে পারেন তা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলেছেন। নরসিংদী কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন আইন বলে এপিএস ফারুক, তার সন্ত্রাসী বাহিনী এবং চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আরিফুল ইসলামকে ক্যাম্পাসের ভিতরে জায়গা দিতে পারেন।
এদিকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ভিসি প্রফেসর ডাক্তার এম এ মান্নান গত গতকাল রোববার এক জরুরি বৈঠক আহবান করেন। এই বৈঠকে নরসিংদী সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর হাবিবুর রহমান আকন্দকে তলব করেছেন। তবে বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন