শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাইফস্টাইল

যে সব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

ডা: মাও: লোকমান হেকিম | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:৩৩ পিএম

সংবাদপত্রের পাতা খুললে বা টিভি অন করলে বা কম্পিউটার খুললে আমরা খাদ্য ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে হরেক রকম ধাঁধালাগা তথ্য পাই। এগুলো দেখে বা পড়ে প্রভাবিত না হয়ে কতগুলো সঠিক বস্তুনিষ্ঠ তথ্য অনুসরণ করা উচিত। ওইসব চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে খাবার কিনে খেলে দেখা যায়, আপনার চেহারা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আপনার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে। অবশেষে স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে। কারণ বাজারের ওইসব খাবার খেয়ে স্থ’ূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া রয়েছে বাজারে সহজলভ্য ফাস্টফুড ও জাংকফুড, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমরা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই, জটিল রোগে ভুগে অকালে প্রাণ হারাই। বেশি বেশি মুখরোচক চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করি। ব্যায়াম করি না। তাই রোগের শিকার হই। 

একটা কথা মনে রাখা জরুরি, সুখাদ্য আমাদের দীর্ঘজীবী করে। অখাদ্য বা কুখাদ্য আমাদের অকালমৃত্যু ঘটায়। এজন্য আমাদের পুষ্টি সচেতন হওয়া দরকার। আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য যেমন ঐউখ কোলেস্টেরল প্রয়োজন, তেমনি খউখ কোলেস্টেরল থেকে দূরে থাকা দরকার। সবার জানা দরকার, কোন কোন খাদ্যে মন্দ কোলেস্টেরল খউখ রয়েছে। সেই সব খাদ্য আমাদের বর্জন করা উচিত অথবা সতর্কতার সাথে খাওয়া উচিত। অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ানরা খউখ সমৃদ্ধ খাদ্যের তালিকা দিয়েছেন। চলুন তাহলে জেনে নেই যে সব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সে সম্পর্কে-
ফাস্টফুড : সব সময় হামবার্গাস, ভাজা যেকোনো খাদ্য, ঝলসানো মুরগি ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে উচ্চমাত্রায় স্যাটুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। ব্রয়েলড স্যান্ডউইচ মুরগি খান। চামড়া খাবেন না। এগুলোর সাথে সালাদ খান। যেসব খাবার ঝলসানো নয়, সেগুলো খান। উচ্চমাত্রায় চর্বিযুক্ত খাদ্য ও পনির এড়িয়ে চলুন।
প্রাণীজ চর্বি, মাখন ও পনির : সাধারণত মাখন বা ঘি দিয়ে যেসব খাবার তৈরি করা হয়, সেগুলো মুখরোচক। যেমন ঘি দিয়ে আলু ভর্তা, টোস্ট, পপকর্ন, পানকেক ইত্যাদি। কিন্তু যাদের দেহে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ আছে তারা এসব খাবার খাবেন না।
সামুদ্রিক মাছ (চিংড়ি) : যাদের রক্তে উচ্চমাত্রায় খউখ কোলেস্টেরল ও যাদের হৃদরোগ আছে, তারা এসব মাছ খাবেন না। খউখ কোলেস্টেরল বেড়ে যাবে।
লাল গোশত : গরুর গোশত, খাসির গোশত ও ভেড়ার গোশতে উচ্চমাত্রায় খউখ কোলেস্টেরল ও স্যাটুরেটেড ফ্যাট বিদ্যমান। তাই হৃদরোগী ও কোলেস্টেরল আক্রান্ত ব্যক্তিরা এসব লাল গোশত খাবেন না। তার বদলে শাকসবজি, শিম, ঝলসানো নয় এমন মুরগির গোশত খান। স্যামন মাছ খান। এতে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে, যা হার্টের জন্য ও হৃদরোগীদের জন্য উপকারী।
কলিজা বা যকৃত : হৃদরোগী ও সুস্থ সবার জন্য কলিজা অত্যন্ত ক্ষতিকর খাবার। এগুলো সম্পূর্ণ কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার।
আইসক্রিম : যাদের রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল রয়েছে, তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ এটা সম্পূর্ণ ফ্যাট। হৃদরোগীদের জন্য এটা বিষ বলা যায়।
বেকারি প্রস্তুতকৃত খাদ্য : কেক, স্পঞ্জ কেক, পাইস ও কুকিজ যা প্রাণীজ চর্বি ও ডিম দিয়ে তৈরি হয়। কাজেই এগুলো কোনো মতেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সবশেষে এ সত্যটি মনে রাখুন-বাসি, ভেজাল, রঙ মেশানো ও কীটনাশকযুক্ত খাবার পরিহার করুন। রাতকানা বা অন্ধত প্রতিরোধে ক্যারোটিনযুক্ত খাবার গাঢ়/রঙিন শাকসবজি, ফল ও ভুট্টা নিয়মিত খাওয়ার অভ্যেস করা দরকার। অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। স্মরণ রাখা দরকার আমরা বাঁচার জন্য খাই, খাওয়ার জন্য বাঁচি না।

চিকিৎসক-কলামিস্ট
মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন