স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিশ্ব স্বাস্থ্যখাতের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেছেন, বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র ও অসহায়। দরিদ্র দেশগুলো নানারকম খাদ্য সমস্যায় ভোগার পাশাপাশি খুব একটা মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পায় না। এজন্য উন্নত দেশগুলোর উচিত অপেক্ষাকৃত সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখা। দরিদ্র দেশগুলোর রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা সেবা দিতে উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। দরিদ্র দেশগুলো হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নত যন্ত্রপাতি কেনা ও প্রশিক্ষণ সেবা বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরনার্থী সঙ্কটের বিষয়টি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্মেলনে আগত ৮০টি দেশের মন্ত্রীবর্গসহ বিশেষ করে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেইন ব্যারসেট এর উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রবেশ করেছিল ১০ লাখের মত। এখন সেই জনগোষ্ঠী সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ লাখে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে সেখানে। এত বড় শরনার্থী শিবিরের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া দূরূহ কাজ। এই শরনার্থীরা দিন দিন স্থানীয় লোকজনের প্রতি আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেছে। যা সামলাতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাঁদের নিজ দেশ মায়ানমারে ফেরত পাঠাতে সুইজারল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতা একান্ত জরুরি।
বিভিন্ন দেশের হাসপাতালে রোগীদের সেবা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল, জবাবদিহিপূর্ণ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তথ্যের আদান-প্রদাণে গুরুত্বারোপ করেন।
সুইজারল্যান্ডের মন্ট্রিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য আয়োজিত গত ২২ জানুয়ারি শুরু হওয়া ৫ম আন্তর্জাতিক মিনিস্ট্রিয়াল সম্মেলনের শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ছিল শেষ দিন। সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী রোগীদের চিকিৎসা নিরাপত্তার উপর বিশ্বের ৮০টি দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক অংশ নেন। সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেইন ব্যারসেট সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস সভাপতিত্ব করেন।
সম্মেলনের শেষ দিবসের আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতৃবৃন্দ করোনার পরবর্তী করণীয় বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন এবং ২০২১-২০৩০ সাল ভিত্তিক একশন প্লান বাস্তবায়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
সম্মেলনে জাপান, সউদী আরব, ইতালি, সিংগাপুর, মালেয়েশিয়া, হাঙ্গেরি, শ্রীলঙ্কা, ইরাক, কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক, লিবিয়া, নামিবিয়া, পরতুগাল, আরব আমিরাতসহ ৮০ টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন