রাজধানীতে অসহনীয় তীব্র যানজটে স্থবির জনজীবন
স্টাফ রিপোর্টার : গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও জঙ্গিবাদের প্রতিবাদে নতুন করে ‘গণপ্রতিরোধ সপ্তাহ’ কর্মসূচি দিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট। আগামী ১৫ থেকে ২১ জুলাই সারা দেশে এই কর্মসূচি পালন করবে জোটটি।
গতকাল রোববার ঢাকাসহ দেশব্যাপী একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪-দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
গুপ্তহত্যার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করার বিষয়ে বিএনপিকে উদ্দেশ করে মানববন্ধনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া, আপনি ভুলে গেছেন আপনার সময় আপনি কী করেছিলেন? শাহ এ এস এম কিবরিয়া হত্যা হয়েছিল। সবকিছু ভুলে গেছেন। এখন আপনি শেখ হাসিনাকে হুমকি দেন! বাংলার মানুষ আপনাকে প্রতিরোধ করবে। আপনি হিংসুটে মহিলা। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে পেট্রোল বোমার তা-ব চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল। সরকার পতনে ব্যর্থ হয়ে এখন গুপ্তহত্যায় জড়িয়ে পড়েছে। বেগম খালেদা জিয়া তার রূপ পরিবর্তন করতে পারেনি।
গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গেটে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মোহম্মদ নাসিম বলেন, জঙ্গিবাদ ও গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের মানববন্ধনের অংশ হিসেবে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, গুপ্তহত্যাকারীদের চাইতে শক্তিশালী হলো বাংলার জনগণ। দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা সেটি দেখিয়ে দিয়েছে। প্রতিরোধ কর্মসূচির ওই সপ্তাহের প্রতিদিন আমরা গ্রাম থেকে গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায় গিয়ে গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করব। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলব।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে নাসিম বলেন, ঐক্য চান ঐক্য হবে। আপনি আলোচনা চান, অবশ্যই আমরা আলোচনা চাই। কিন্তু এর আগে সৎ সাহস থাকলে খালেদা জিয়া আপনি ঘোষণা করেন, জামায়াতের সঙ্গে আপনাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আপনি গুপ্তহত্যার জন্য ক্ষমা চান। তারপরে ভেবে দেখব বসা যায় কি না। তার আগে কোনো খুনির সঙ্গে, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আমরা বসতে পারি না।
তিনি বলেন, আর দেশের জঙ্গিবাদ ও গুপ্তহত্যার প্রতিরোধের জন্য দেশের প্রগতিশীল সকল শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে। গুপ্তহত্যাকারীদের প্রতিরোধ করতে সারা দেশের শহর-গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মনে করেছিলেন গুপ্তহত্যার মাধ্যমে সরকারকে উৎখাত করতে পারবেন। কিন্তু বাংলার মাটিতে এটা সম্ভব নয়। এদেশের মানুষ গুপ্তহত্যা পছন্দ করে না। খালেদা জিয়ার পেট্রোল বোমা যেভাবে বন্ধ হয়েছে, একইভাবে এদেশে গুপ্তহত্যা বন্ধ হয়ে যাবে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া আপনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নাকি গুপ্তহত্যা করছে। আমি বলব আপনারা গুপ্তহত্যা শুরু করেছেন। আর নিজেদের দোষ আড়াল করার জন্য এখন আপনার দলের নেতাদের মাধ্যমে বলছেন, আন্তর্জাতিক চক্রান্তের জন্য দেশে গুপ্তহত্যা হচ্ছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যেমন বাংলার জনগণ প্রতিরোধ করেছিল, তেমনি গুপ্তহত্যাকারীদের বাংলার জনগণ প্রতিরোধ শুরু করেছে। জনগণের এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। তিনি বলেন, আজকে বেছে বেছে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। পুরোহিত-যাজকদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। আসলে দেশে একটি সাম্প্রদায়িক আবহ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। সবাই মিলে এর প্রতিরোধ করতে হবে। তিনি বলেন, আজকের এই মানববন্ধনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মাদারীপুরের শিক্ষক হত্যা চেষ্টাকারী ফাহিমকে যেমনভাবে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে, এমনভাবে সারা দেশে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সারাদেশে গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও জঙ্গিবাদের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে গতকাল বিকাল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার পথে মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের নেতাকর্মীরা। এই মানববন্ধনের কারণে ঢাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, ফার্মগেট, নিউমার্কেট, শ্যামলী এলাকায় যানজটে গাড়ি দীর্ঘ সময় আটকে ছিল। অফিস ফেরত রোজাদার হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার, আওয়ামী লীগের মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মৃনাল কান্তি দাস, জাতীয় পার্টির (জেপি) শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদের (ইনু) শিরীন আখতার, গণতন্ত্রী পার্টির শাহদাৎ হোসেন, বাসদের রেজাউর রশিদ খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের আবুল হাসনাত, হেদায়েতুল ইসলাম, ছাত্রলীগের এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
এদিকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিহতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এমন কর্মসূচির মাধ্যমে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ প্রতিহত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ জন জন্য বড় ধরনের অ্যাকশনধর্মী কর্মসূচি দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর আসাদগেটে দেশে চলমান গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জঙ্গিবাদী তৎপরতার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা তলে তলে বড় ধরনের আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই শুধু মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি দিয়ে তাদের প্রতিহত করা সম্ভব হবে না। তাদেরকে চিরতরে এই দেশ থেকে বিতারিত ও নির্মূল করতে হলে অ্যাকশনধর্মী কর্মসূচি নেয়া উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের অ্যাকশনধর্মী কর্মসূচির ব্যাখ্যায় বলেন, অ্যাকশনধর্মী কর্মসূচি দ্বারা অস্ত্র বুঝাচ্ছি না। এটা হতে পারে ৫০ থেকে এক লাখ লোকের একসঙ্গে মিলিত হয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ মিছিল।
তিনি বলেন, আমি বোঝাতে চাচ্ছি খ- খ- কর্মসূচি না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সব শক্তিকে একই প্লাটফর্মে এসে জঙ্গি ও গুপ্তহত্যাকারী ও তাদের দোসরকের প্রতিহত করা। কারণ রাজনীতিতে প্রকাশ্য শত্রুর চেয়ে এই গোপনীয় শত্রুরা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।
সরকার সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার কারণে ভীত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, যে জাতি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাক হানাদারদের পরাজিত করে লাখ জীবনের বিনিময়ে একটি দেশ স্বাধীন করেছে, ক্রিকেটের মাধ্যমে বিশ্বে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে তারা কখনও ভীত হতে পারে না। তিনি বলেন, আপনারা কি কখনও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে, কথা-বার্তায় কোনো দুর্বলতা পেয়েছেন? আমরা ভীত জাতি নই। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সব শান্তিপ্রিয় মানুষ আছি। জঙ্গি, গুপ্তহত্যাকারী, এদের পেছনে যারা আছে, অর্থ যোগান দিচ্ছে তারা সবাই পরাজিত হতে বাধ্য।
মানববন্ধনের এই পয়েন্টে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই কর্মসূচিতে দেশবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে জানান দিচ্ছে জাতি হিসেবে আমরা সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। আর ১৪ দল আমরা রাজনৈতিকভাবে জানান দিচ্ছি, আমরা এই গুপ্তহত্যা, জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এর মাধ্যমে সব অশুভ শক্তি সতর্ক হবে।
আসাদ গেট পয়েন্টে ক্ষমতাসীন দল ছাড়া জোটের অন্য নেতাদের দেখা যায়নি। এখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী খালেদা তারেক তৃপ্তি প্রমুখ।
রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, উত্তরায় যে অস্ত্র পাওয়া গেছে তা যৌথবাহিনীর অভিযানের ফসল। দুষ্কৃতকারীরা উপলব্ধি করেছে তাদের পথ সঠিক নয়। আমরা মনে করি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অতি শীঘ্রই দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসবে।
সম্প্রতি দেশে চলমান গুপ্তহত্যার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দায়ী করে তোফায়েল বলেন, দেশের আজকের অশান্ত পরিবেশের জন্য খালেদা জিয়া দায়ী। দেশে পুরোহিতকে হত্যা করা হয়, বেছে বেছে টার্গেট কিলিং করা হয়, যাতে প্রতিবেশী দেশ প্রতিক্রিয়া দেয়। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে জঙ্গিবাদ কর্মসূচি নির্মূলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আমরা সম্পূর্ণভাবে জঙ্গিবাদকে নির্মূল করব। খালেদা জিয়া অতীতে পরাজিত হয়েছেন, ভবিষ্যতেও হবেন।
খালেদা জিয়াকে হতাশ নেত্রী আখ্যায়িত করে তোফায়েল আরও বলেন, ইফতার পার্টিতে মানুষ আল্লাহর নাম নিয়ে মোনাজাত করে পরম করুণাময়ের কাছে ক্ষমা চায়। কিন্তু খালেদা জিয়া প্রত্যেকদিন গলা ফাটিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এমনকি শেখ হাসিনাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন। হতাশা থেকেই তিনি এমন আচরণ করছেন।
মানববন্ধনের এ অংশে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় সদস্য আবদুর রহমান, এসএম কামাল হোসেন, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আশারাফুন্নেছা মোশাররফ, যুব মহিলা লীগের সভাপতি অপু উকিল, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।
রাজধানীর গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত শ্যামলী, আসাদ গেট, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড, রাসেল স্কয়ার, গ্রীণ রোড, বসুন্ধরা, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, নূর হোসেন স্কয়ার, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, গুলিস্থান পার্ক, ইত্তেফাক মোড়, রাজধানী মার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড় পর্যন্ত মোট ১৯ টি পয়েন্টে ১৪ দলের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে রাস্তায় দাঁড়ান।
এদিকে, ১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠন আওয়ামী ওলামা লীগ। সংগঠনের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা দেলোওয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১৪ দলের মানববন্ধনে অংশ নিয়েছে প্রায় তিন শতাধিক আলেম-ওলামা। যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তা মোড়ে তারা মানববন্ধনে অংশ নেয়। এসময় বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশব্যাপী গুপ্তহত্যা ও সংখ্যলঘু নির্যাতনে জামায়াত-বিএনপির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইন্ধন দিচ্ছে।
মানববন্ধনের কারণে স্থবির রাজধানী, তীব্র ভোগান্তিতে অফিস ফেরত মানুষ
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মানববন্ধনের কারণে গতকাল রোববার রাজধানীর সড়কগুলোতে প্রচ- যানজট দেখা দেয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষ করে রোজাদার অফিস ফেরত মানুষ। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের ভাষ্য, যানজট ‘অসহনীয়’ আকার ধারণ করে। সড়কগুলোতে যানজটে যানবাহন চলাচল প্রায় থমকে যায়। সড়ক থেকে অলিগলিতেও যানজট ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর সব সড়কেই প্রচ- যানজটের সৃষ্টি হয়।
গতকাল বেলা ৩টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গুপ্তহত্যা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ঢাকামহানগরীসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধন উপলক্ষে রাজধানীর ১৫টি পয়েন্টে অবস্থান নেন এসব সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর গাবতলী থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়কের প্রধান এলাকাগুলোতে তারা অবস্থান নেয়।
এদিকে রমজানে সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। অফিস ফেরত মানুষের ঘরে ফেরার সময় এবং মানববন্ধন একই সময়ে হওয়ায় ঘরমুখী মানুষ বেশ সমস্যায় পড়ে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের একজন বলেন, রোজার সময় অফিস শেষে ঘরে ফিরছি। গাড়িতে চড়ার মতো অবস্থা নেই।
সরেজমিনে পল্টন মোড়, গুলিস্তান থেকে মতিঝিল হয়ে টিকাটুলি ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত প্রচ- যানজট দেখা গেছে। গাড়ি চলছে না বললেই চলে। চললেও তা খুবই ধীরগতিতে। বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল আসার কারণে অলিগলিতেও যানবাহন আটকে আছে।
গুলিস্তান এলাকায় পুলিশের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, যানজট হবে বলে আমরা রাস্তায় কাউকে দাঁড়াতে দিচ্ছি না। তারপরও গাড়ি চলা থেমে গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন