মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অভিজিৎ রায় হত্যায় সন্দেহভাজন শরিফুল কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত

প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর খিলগাঁওয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত যুবকের পরিচয় পাওয়ার দাবি করেছে পুলিশ। তাদের ভাষ্য, নিহত যুবকের নাম শরিফুল। তিনি পুরস্কার ঘোষিত ছয় জঙ্গির একজন। লেখক অভিজিৎ রায়সহ অন্য সাতটি হত্যায় জড়িত তিনি। পুলিশ বলছেন, অভিজিৎ রায় হত্যাকা-ের সময় শরিফুল ঘটনাস্থলে ছিল এবং ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে তার চেহারা স্পষ্ট দেখা গেছে। অভিজিৎ রায়সহ আরও ৬ জন ব্লগার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল শরিফুল।
রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার আবদুল বাতেন এ সব তথ্য জানান।
এর আগে শনিবার রাত পৌন ৩টায় রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়ার বাঁশপট্টি এলাকায় ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত এক যুবক নিহত হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার চেহারার সঙ্গে ডিএমপির প্রকাশ করা ৬ জন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যের মধ্যে চিহ্নিত জঙ্গি শরিফুল ওরফে সাকিব ওরফে শরিফ ওরফে সালেহ ওরফে আরিফ ওরফে হাদী-১ এর চেহারার মিল পেয়ে পুলিশ তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। শরিফুলের সম্পর্কে তথ্য দাতাকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছিল পুলিশ।
আবদুল বাতেন বলেন, শরীফুল ব্লগার নিলাদ্রী নিলয়, সান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিয়াদ মোর্শেদ বাবু, ফয়সাল আরেফিন দীপন, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, সূত্রাপুরের নাজিমুদ্দিন সামাদ, কলাবাগানের জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব তনয় হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল। যারা তাদের হত্যা করেছে শরিফ তাদের রিক্রুট করে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। আগের গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় জিজ্ঞাসাবাদে শরিফুলের নাম বলেছে।’
বন্দুকযুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল মেরাদিয়ায় শরিফ তার সহযোগীদের সঙ্গে থাকতে পারে। তাই শনিবার দিবাগত রাত থেকে ডেমরা-মেরাদিয়া সড়কে অবস্থান নেয় ডিবি। রাত ২টায় সড়কটি দিয়ে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের থামার নির্দেশ দেয়। তবে মোটরসাইকেলটি না থেমে পুলিশের ওপর গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালালে ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়। লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে গতকাল সকালে পুলিশ শরিফুলের পরিচয় শনাক্ত করে। বন্দুকযুদ্ধের সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল, একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। শরিফুল জীবিত থাকলে তদন্তে সুবিধা হতো। তবে আমার মনে হয় না এতে কোনো সমস্যা হবে। কারণ অন্য জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দীর ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।
ডিএমপি’র অপর একটি সূত্র জানায়, শনিবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া এলাকায় মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শরিফুল নিহত হন।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত শরিফুল একাধিক নামে পরিচিত। যেমন: সাকিব ওরফে শরীফ ওরফে সালেহ ওরফে আরিফ ওরফে হাদি। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক ও আইটি শাখার প্রধান ছিলেন। ডিএমপির ভাষ্য মতে, নিহত শরিফুল আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বিভিন্ন অভিযানের জন্য সদস্য নির্বাচন ও সংগ্রহে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছিলেন।
পুলিশের দাবি, অভিজিৎ হত্যার তদন্তে সিসিটিভির ফুটেজে শরিফুলের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।
ডিবির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গি সুমন হোসেন পাটোয়ারির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এর অংশ হিসেবে গতকাল দিবাগত রাতে খিলগাঁও এলাকায় অভিযানে যায় ডিবি। এ সময় সন্দেহভাজন তিন যুবকের সঙ্গে ডিবির গুলিবিনিময় হয়। এতে একজন নিহত হয়।
মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, প্রথমে আমরা নিহত যুবককে চিনতে পারিনি। পরে দেখি, তাঁর সঙ্গে পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গি শরিফুলের মিল রয়েছে।
গত ১৯ মে লেখক অভিজিৎ রায়, প্রকাশক ফয়সল আরেফিনসহ (দীপন) অন্তত ১০টি হত্যায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে ধরিয়ে দিতে তাঁদের নাম ও ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করে ডিএমপি। এই ছয়জন হলেন সুমন, শরিফুল, সেলিম, সিফাত, রাজু ও সাজ্জাদ। তাঁদের ধরিয়ে দিলে দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ বলছে, পুরস্কার ঘোষিত ছয়জনের মধ্যে সুমনকে গত বুধবার রাতে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি প্রকাশক আহমেদুর রশীদকে (টুটুল) হত্যা চেষ্টায় জড়িত। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকি পাঁচজনের মধ্যে একজন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:২৩ এএম says : 0
হুনডায় তিন জন ছিল বাকি দুইজন কোথায়।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:৪০ এএম says : 0
হুনডায় তিন জন ছিল বাকি দুইজন কোথায়।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন