পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির পদত্যাগসহ এক দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত আছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার নিচ্ছে । তীব্র হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। কার্যত: পাবিপ্রবি’র ভিসি, তাঁর প্রক্টরিয়াল বডি এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ৭ম দিনের মতো ভিসি প্রফেসর ড. রোস্তম আলীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ৭ম দিনের মতো সকাল থেকে ক্যাম্পাসে এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি মানা না হলে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধসহ লাল কার্ড প্রদর্শনীর হুশিয়ারী দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, সম্প্রতি ফাঁস হওয়া পাবিপ্রবি ভিসি ড. এম রোস্তম আলীর কাছে চাকরি প্রার্থীর ঘুষ ফেরত চাওয়ার অডিও বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করাসহ ৪ দফা দাবি ১২ দফায় পরিনত হয়। পরে এক দফা দাবি আদায়ে তারা বিক্ষোভ-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবি পূরণে আন্দোলন করে আসছেন তারা। কিন্তু দাবি পূরণে বেঁধে দেয়া সময়সীমা পার হলেও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই ভিসিসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার ৩০ নভেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন । আগামী ১৫ নভেম্বর বিশ^বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আগেই দাবি বাস্তবায়ন চান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনায় না বসে রোববার রাতে বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলো থেকে ভিসি স্যার চলে যান। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ভিসি স্যার সোমবার রাতে ফিরে আসেন ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিসি স্যার সকল বিভাগীয় প্রধানদের ফোনের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা এবং আন্দোলন বন্ধ করার জন্য সব ধরণের কার্যক্রম আগামী ২০ তারিখ পর্যন্ত বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিসি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কোনো আমলেই নিচ্ছেন না। আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হতে দেয়া হবে না। আগামীকাল ভিসি স্যার এবং অযোগ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে লালকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান ।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে প্রভোস্ট, অনুষদ ডীন, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠক করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান প্রক্টর প্রীতম কুমার । কমিটির প্রধান বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট মো. সাইফুল ইসলামকে সমন্বয়ক করে তার ওপর দায়িত্ব প্রদান করা হলেও তিনি এ দায়িত্বের কথা অস্বীকার করে বলেন, তাকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। আমি এ ধরনের কোন দায়িত্ব গ্রহণ করিনি। তবে ভিসি স্যারের কথার জন্য আমরা ছাত্রদের ডেকেছিলাম তারা ভিসি স্যার ছাড়া আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। পরে আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়নি জানান তিনি। কিন্তু দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষকরা এখনও ছাত্রদের সাথে কোন ধরণের আলোচনায় বসেননি, জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত: পাবিপ্রবি’র ভিসি প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী ইতোপূর্বে তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে ‘ভিসি বলেছিলেন, এগুলো ষড়যন্ত্র। আজ মঙ্গলবার তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এখন আমি আর কিছুই বলবো না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন