নবীগঞ্জে টাকার জন্য ৬ বছরের শিশু জিসান মিয়াকে নগ্ন করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে তারই আপন চাচা। এমনকি নির্যাতন করে সেই ভিডিও শিশু জিসানের সঊদী প্রবাসী মায়ের কাছে ইমুতে পাঠিয়ে টাকা দাবি করা হয়েছে। নির্যাতনের এ দৃশ্য সইতে না পেরে ছুটে এসেছেন মা সুমনা বেগম। এ ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল বুধবার ভোরে নবীগঞ্জ থানার ওসি আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ শিশুর চাচা স্বপন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। নির্যাতনের শিকার শিশুর মা সুমনা বেগম বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল বুধবার ভোরে নবীগঞ্জ থানার ওসি আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ও ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার দাশ, সেকেন্ড অফিসার এস আই শামসুল ইসলামসহ একদল পুলিশ স্বপন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।
চরগাঁও গ্রামে শিশুটির স্বজনরা জানান, পিতৃহারা ছোট্ট দুই শিশুকে দাদা-দাদি আর চাচার কাছে রেখে জীবিকার তাগিদে গৃহকর্মী হিসেবে সউদী আরব গিয়েছিলেন সুমনা বেগম। আর যাওয়ার আগে সন্তানদের দেখাশোনার জন্য তাদের চাচাকে কিছু টাকাও দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সউদীতে যাওয়ার দুই মাস যেতে না যেতেই তার সন্তানদের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। টাকা দেয়ার জন্য ছয় বছর বয়সী আপন ভাতিজাকে নগ্ন করে নির্যাতন করে সেই ভিডিও তার মায়ের কাছে পাঠিয়েছিলেন চাচা স্বপন।
জিসানের মা সুমনা বেগম জানান, গত দুই মাস আগে আমি শ্রমিক ভিসায় সউদী আরব যাই। যাওয়ার আগে আমি আমার দুই শিশু সন্তানকে দেবর ও শ্বশুড়-শাশুড়ির কাছে রেখে যাই। তিনি বলেন, ‘সউদী যাওয়ার আগে দেবর স্বপনকে একটি রিকশা কিনে দেই এবং নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে যাই যাতে আমার সন্তানদের দেখে রাখে। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্বপনকে একটি স্মার্টফোনও দিয়েছিলাম। কিন্তু দুই মাস পার না হতেই আমার ছেলেকে মারধর করে সেই মোবাইল দিয়েই ভিডিও করে আমার কাছে পাঠায়। ভিডিও দেখে আমি মালিকের কাছে কান্নাকাটি করলে চলতি মাসের বেতনসহ ওই মালিক আমাকে দ্রুত দেশে পাঠান।’
নির্যাতনের ভিডিও ক্লিপটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একটি ঘরের মেঝেতে বসে হাউমাউ করে কাঁদছে গায়ে কোনো কাপড় ছাড়া ৬ বছরের শিশু জিসান। তার দিকে তেড়ে গিয়ে বাজে ভাষায় গালাগালি করতে করতে লাথি মারছেন অভিযুক্ত চাচা স্বপন। এতে আরও দেখা যায়, চড়-থাপ্পড় এবং লাথি-ঘুষি মারার পরে স্বপন শিশুটির গোপনাঙ্গ ধরেও টান দিচ্ছেন। এরপর ওই শিশুটির দুই পা ধরে তাকে উল্টো দিকে ঝুলিয়ে আছাড় মারার ভয় দেখাচ্ছিলেন। তখন শিশু জিসান বার বার ‘ও মা’, ‘ও মা’ বলে চিৎকার করছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন