শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি এবং অসদুপায়ে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যেই অস্ত্র মজুদ-ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : একটি চক্র যারা অসাধু উদ্দেশ্যে ক্ষমতা দখল করতে চায়, বিভিন্ন বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় এবং চলমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারাই ওই অস্ত্র মজুদ করেছিল বলে পুলিশের ধারণা। গতকাল সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তরার খাল থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে এ কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ব্যবহৃত পিস্তলের (৭.৬০) সঙ্গে উত্তরা থেকে উদ্ধার করা পিস্তলের হুবহু মিল রয়েছে। তবে পুলিশের পিস্তলগুলো ইমপোর্ট করা, যার গায়ে উৎপাদনকারী দেশের নাম লেখা থাকে। কিন্তু উদ্ধারকৃত অস্ত্রে উৎপাদনকারী কোনো দেশের নাম নেই বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি আরও বলেছেন, যে অস্ত্র উদ্ধার করেছি তাতে আমি মনে করি আমরা বড় ধরনের একটি নাশকতা থেকে রক্ষা পেয়েছি। তবে এর মাস্টারমাইন্ড কারা এবং কোথায় কিভাবে ইনস্টল করা হয়েছে, কেন করা হয়েছে তা খুঁজে বের করা হবে।
কমিশনার বলেন, অস্ত্রের গায়ে ইমপোর্টের একটি লট নম্বর থাকে। এই অস্ত্রে কোনো লট নম্বর নেই। শুধু আছে একটি সিরিয়াল নম্বর। এই কারণে আমি বলেছি, এটি কোনো সাধারণ অপরাধীর কাজ নয়। যারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভিশন ২০-এ যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে চান, তা যারা ভ-ুল করতে চায়, এটা তাদের কাজ। এছাড়া যারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নজিরবিহীন সংহিসতা করেছে, যারা মানুষকে জিম্মি করে অশান্তি করতে চায়, তারাই এই অস্ত্রের সঙ্গে জড়িত। তবে সেটিকে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে বের করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তাই করব।
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বিএনপি-জামায়াত জোটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘নারী-শিশু হত্যায়’ জড়িত চক্রটিই ওই অস্ত্র মজুদ করেছিল বলে তাদের ধারণা।
তিনি বলেন, অস্ত্রগুলো একেবারে নতুন এবং আনইউজড। তবে পানিতে থাকায় ডাস্ট ধরেছে। ঘষা দিলে দেখা যাবে নতুন।
অস্ত্রের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের এক কনস্টেবল ওই পথ দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে পরিবারের সঙ্গে যাচ্ছিল। তখন তিনি দেখতে তা পেয়ে তুরাগ থানায় গিয়ে ওসিকে বলেন। এরপর ২০ মিনিটের মধ্যে ওসি ওখানে চলে আসেন। তখন অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়।
এত পুলিশি কড়াকড়ি ও চেকপোস্টের মধ্যেও কীভাবে নম্বরবিহীন গাড়ি ঢুকলÑএর জবাবে কমিশনার বলেন, আমাদের ওই এলাকায় দুটি চেকপোস্ট রয়েছে। তবে উত্তরার ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর সেক্টর এবং দিয়া বাড়ির দিকে রাস্তার কাজ হচ্ছে। আমরা ধারণা করছি, অস্ত্রগুলো আগেই মজুদ করা ছিল। খবর পাওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই সেখানে অবস্থান নেন ওসি। এই ২০ মিনিটের মধ্যেই গাড়িটি সেখান থেকে চলে যায়। তবে আমরা তদন্ত করছি।
নিñিদ্র নিরাপত্তা বলতে আসলে কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, আপনি যতই নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেন, শতভাগ নিরাপত্তার মধ্যে ১ শতাংশ ফাঁকফোকর থাকতে পারে। তার মধ্যেই অপরাধ সংঘটিত হতে পারে। তবে আমাদের চলমান অভিযান সময় দিয়ে করা যায় না। তাতে কাজও হয় না। এটি রুটিন ওয়ার্ক। আমরা অভিযানে অনেক সন্ত্রাসী ধরেছি।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের তালিকা উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, ৭.৬২ পিস্তল ৯৫টি, দেশীয় পিস্তল ২টি, ৭.৬২ ম্যাগাজিন ১৯২টি, ম্যাগাজিন গ্লোক পিস্তল ১০টি, এসএমজির ম্যাগাজিন ২৬৩টি, বেয়নেট ১০টি, ছোট সিলভার কালারের বক্স (গুলি তৈরির বক্স) ১০৪টি, ৯ এমএম পিস্তলের গুলি ৮৪০ রাউন্ড এবং অস্ত্র ক্লিনিং রড ১৮০টি।
১৯ জুন সকালেও ফের অভিযান চালিয়ে এসএমজির ম্যাগাজিন ৩২টি ও ক্লিনিং রড ৮টি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।
অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তুরাগ থানায় দুটি জিডি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, উত্তরায় দু’দিনের অভিযান শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় দুটি জিডি হয়েছে। এই জিডির মাধ্যমে অস্ত্রের বিষয় এখন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করবে। আমাদের চৌকস ডিবি তদন্ত করে এর মূল রহস্য বের করবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন