শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ‘জঙ্গি’ এবিটি সদস্য শরিফুল নয়, সাতক্ষীরার মুকুল রানা

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : লেখক অভিজিৎ রায়ের পরিকল্পনাকারী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য শরিফুল ওরফে সালেহ ওরফে আরিফ (৩০) কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, তার নাম মুকুল রানা। নিহত মুকুল রানার (২৫) বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ। গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার বালুইগাছা। গতকাল সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে লাশ শনাক্ত করেন নিহতের ভগ্নিপতি হেদায়েতুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই রহমত আলী।
নিহতের দুলাভাই হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমে ছবি দেখে তারা সাতক্ষীরা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে এসেছেন। লাশ দেখে তারা শনাক্ত করতে পেরেছেন। তবে মুকুল রানা কোনো জঙ্গি সংগঠন বা কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা এ বিষয়ে তারা কোনো কিছুই জানেন না। হেদায়েতুল ইসলাম আরও বলেন, মুকুল রানা সাতক্ষীরা গভর্মেন্ট কলেজের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিল। তারা দুই ভাই এক বোন। সে ভাইবোনদের মধ্যে দ্বিতীয়। তাদের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল নয়। সাতক্ষীরায় তার বাবার ছোট চিংড়ি ঘেরের ব্যবসা রয়েছে। গত এক বছর আগে চাকরির সন্ধানে মুকুল রানা সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রামে যায় এবং মহুয়া সুলতানা নামে এক মেয়ের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। এরপর সে ঢাকায় ফিরে আসে। ঢাকায় উত্তরায় সে থাকত। তবে উত্তরার কোথায় থাকত, কী করত এ ব্যাপারে কোনো কিছুই জানাতে পারেননি হেদায়েতুল ইসলাম। এছাড়া মুকুল নিখোঁজ ছিল কি না তাও জানাতে পারেননি তিনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ওই যুবক। প্রথমে তাকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিহতের নাম শরিফুল ওরফে সালেহ ওরফে আরিফ (৩০)। সে অভিজিৎ হত্যার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ব্লগার ও প্রকাশক হত্যার ঘটনায় জড়িত যে ৬ জন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যের নামে পুরস্কার ঘোষণা করে ডিএমপি শরিফুল এ ৬ জনের মধ্যে একজন। তার সম্পর্কে তথ্যদাতাকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছিল ডিএমপি।
চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিল মুকুল রানা
নিহত মুকুল চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল বলে দাবি করেছেন তার বাবা আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি যশোরের জগন্নাথপুরে মৌহা আক্তার রিমিকে বিয়ে করে মুকুল রানা। বিয়ের পরে একবার সাতক্ষীরায় বাড়িতে গিয়েছিল সে। এরপর আবার যশোরে শ্বশুরবাড়িতে যায়। ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় যশোরের বসুন্দিয়া এলাকা থেকে তাকে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার তিন-চার দিন পর যশোর কোতোয়ালি থানায় মুকুল রানার শালা আমির হোসেন একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
আবুল কালাম আজাদের দাবি, স্কুল-কলেজের সনদে তার ছেলের নাম মুকুল রানা। স্থানীয় লোকজনও তাকে মুকুল রানা নামে চেনেন। তার বয়স ২৩ বছর। সে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। দুই বছর ধরে পড়াশোনা বাদ দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মুকুল রানা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঢাকায় অন্য কোনো দলের সঙ্গে তার ছেলে জড়িয়ে পড়েছিল কি না, তা তিনি জানেন না। তিনি বলেন, মুকুল রানা চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মম ২১ জুন, ২০১৬, ৬:৩৮ এএম says : 0
এই মৃত্যুর দায় এখন কার?
Total Reply(1)
Ariyan Sikddar ২১ জুন, ২০১৬, ৬:৪০ এএম says : 4
কার আবার ? সময়ই সেটা বলে দিবে

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন