দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে পন্ড হয়ে গেছে আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত সমাবেশ। গতকাল মঙ্গলবার সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে একজন কাউন্সিলরসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের তুমুল সংঘর্ষে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেন প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
দলীয় সূত্র জানায়, মহানগর যুবলীগে মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের একটি গ্রুপ এবং তার বিরোধী একটি গ্রুপ রয়েছে যারা সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র নওফেলকে প্রধান অতিথি করায় অন্য পক্ষ গোলযোগ সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ এক পক্ষের।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করে। বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন নগর যুবলীগের আহŸায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সভা চলাকালে বিকেল সাড়ে ৪টায় মাঠে দুই পক্ষের চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়। এরপর উভপক্ষের তরুণ-যুবকেরা একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ও ইটের টুকরা ছুঁড়তে শুরু করে। ১০ মিনিট উভয়পক্ষে সংঘাতের পর পুলিশ উভয়পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেয়। এর আগেই মঞ্চ ছেড়ে যান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে অতিথি করা হলেও তিনি যাননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাউন্সিলর মোবারক আলী একটি মিছিল নিয়ে আসেন। তার মিছিলটি অনুষ্ঠান স্থলে ঢুকতেই সেখানে আগে থেকে থাকা যুবলীগ নেতা ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের সাথে শুরু হয় মারামারি। মুহূর্তে দুই পক্ষ পুরো মাঠজুড়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সমাবেশের পাশে রাস্তা থেকে মঞ্চ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ’ খানেক যুবক পকেট থেকে পাথর বের করে ছুঁড়ে মারছিল। দুপুরের দিকে এই যুবকরা মঞ্চের সামনে মাঠে অবস্থান নেয়। এরপর সভা চলাকালে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছুক্ষণ সংঘর্ষের পর পুরো মাঠ খালি হয়ে যায়। মাঠজুড়ে ভাঙা চেয়ার পড়ে থাকে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মারামারিতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মাত্র ক’দিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় ঐক্যের ডাক দিয়ে যান। তার এ আহ্বানের কয়েকদিনের মধ্যে যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অনুষ্ঠান পন্ড হওয়ার ঘটনায় দলের ভেতরে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন