শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ধুলায় নাকাল নগরবাসী

দিনে দুইবার পানি ছিটানোর হাইকোর্টের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না

সায়ীদ আবদুল মালিক | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ধুলায় আচ্ছন্ন রাজধানীর পোস্তগোলা। ছবিটি গতকাল দুপুরে তোলা -মতিউর সেন্টু


রাজধানীর সর্বত্রই এখন ধুলাবালিতে একাকার। বলা যায় ধুলায় নাকাল নগরবাসী। শীতের আগমনীর সময় প্রকৃতি যেখানে কুয়াশার চাদরে ঢেকে কথার কথা সেখানে রাজধানীর সববিছুই ঢেকে যাচ্ছে ধুলার চাদরে। ধুলার যন্ত্রণায় এখন ঢাকা শহরের রাস্তায় নামাই যাচ্ছে না। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির দুয়েকটি সড়ক ছাড়া রাজধানীর ছোট বড় সব রাস্তায়ই এখন ধুলাবালিতে একাকার। ঘরবাড়ি, স্কুল, মাদরাসা, অফিস, আদালত সবই হচ্ছে ধুলায় ধূসর। এ বছর নগরীর বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেড়েছে ধুলার পরিমাণ। এর সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও।

বাতাসে ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের অতিক্ষুদ্র ভাসমান বস্তু কণার পরিমাণ যদি ১৫১-২০০ পিপিএম হয় তাহলে বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ পিপিএম হলে খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১-৫০০ হলে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। বাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১১টি স্থানের বাতাসে ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার ব্যাস পর্যন্ত অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার পরিমাণ নিয়মিত পরিমাপ করা হয় সিএএসই প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে দেখা যায় গতকাল ঢাকার বাতাসে বস্তুকণা ছিল ২৪০ পিপিএম। যা খুবই অস্বাস্থ্যকর।

চলতি বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক সংগঠন গ্রিনপিস ও এয়ার ভিজ্যুয়ালের গবেষণায় বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে রিট করা হলে আদালত ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে ধুলোপ্রবণ এলাকাগুলোতে দিনে দুই বার পানি ছিটানোসহ বেশকিছু ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

চিকিৎসকদের মতে, ধুলায় বায়ুদূষণের ফলে রাজধানীতে শ্বাসকষ্ট, য²া, হাঁপানি, চোখের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস, সর্দি, কাশি, হাঁচিসহ ফুসফুসে ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যাই বেশি। ধুলাদূষণের কারণেই নানা সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীবাসী। ধুলাদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের প্রফেসর শিশু বিশেষজ্ঞ নুরুল ইসলাম বলেন, ধুলিবালি সকল শ্রেণির মানুষের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ধুলি বালির কারণে ব্রঙ্কাইটিজ, সর্দি, কাশি, জ্বর, চোখের ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হবে। তিনি বলেন, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের নিমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগ বেড়ে যাবে।

বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে রাজধানীর বাতাস; এরই মধ্যে ঢাকার বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মেট্রোরেলসহ চলমান কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ধুলার রাজ্যে পরিণত হয়েছে, সঙ্গে যোগ হয়েছে ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ইটভাটার দূষণ। চলতি বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক সংগঠন গ্রিনপিস ও এয়ার ভিজ্যুয়ালের গবেষণায় বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকার তথ্য এলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত ঢাকার বায়ু দূষণ কমাতে ধুলোপ্রবণ এলাকাগুলোতে দিনে দুইবার পানি ছিটানোসহ বেশকিছু ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে। এতেও রাজধানীর ধুলার পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধুলা রোধে দুই সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রমে তারা সন্তুষ্ট নন। সড়কে পানি ছিটানোর জন্য ডিএসসিসি নিজস্ব কোনো পানির উৎসই নেই। ওয়াসার পাম্প থেকে পানি নিয়ে বিভিন্ন সড়কে ছিটায় ডিএসসিসির ১১টি গাড়ি। কিন্তু এ বছর ওয়াসা পানি না দেয়ায় সড়কে পানি ছিটানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপদেষ্টা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
গত বছর ওয়াসা থেকে পানি পাওয়া গিয়েছিল এ বছর দিচ্ছে না। ওয়াসা বলছে, এ পানি খাওয়ার জন্য, ধুলার জন্য না। গত ৬ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে ছিটানোর জন্য অনেক অনুরোধের পর শুধু একদিনের জন্য পানি দিয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানি ছিটানোর কাজে এ বছর দক্ষিণের চেয়ে কিছুটা ভালো অবস্থায় আছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। তবে এতেও নগরবাসী সন্তুষ্ট নয়। ডিএনসিসি’র পানি ছিটানোর কাজ আরও বাড়িয়ে দেয়ার দাবি উত্তরা, মিরপুর, গুলশান, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের।

ডিএনসিসি’র ১২টি ওয়াটার বাউজার ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার এলাকায় দিনে দুইবার পানি ছিটানো হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির যান্ত্রিক বিভাগের শাখার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হাসনাত। ডিএনসিসির তিনটি গভীর নলক‚প থেকে এ পানি সংগ্রহ করা হয়। মহাখালী, গাবতলী ও মিরপুরের তিনটি নলক‚প থেকে আমরা পানি নিই। জরুরি প্রয়োজনে ওয়াসা থেকেও নেয়া হয়। সড়কে যানজট না থাকলে পানি ছিটাতে কোনো সমস্যা হয় না।

বর্ষায় ঢাকার বাতাসের মান কিছুটা ভালো থাকলেও শীত এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আবার খারাপ হতে শুরু করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি দপ্তরগুলোর দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনও চোখে পড়েনি। যারা পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছেন, সেই পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তাও বায়ুদূষণ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কথা বলেছেন।

বছরজুড়েই চলছে রাজধানীতে উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি। বর্ষায় ছিল কাদা-পানি আর খানাখন্দের দুর্ভোগ। শুষ্ক মৌসুমে এসে সর্বসাধারণকে পড়তে হয়েছে ধুলাদূষণে। প্রতিনিয়ত স্কুল-কলেজে যাতায়াতকারী কোমলমতি শিক্ষার্থী ছাড়াও এ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সর্বসাধারণ। যেন দেখার কেউ নেই। উন্নয়ন-ধুলায় শ্বাস নিতেও কষ্ট নগরবাসীর। শহরের রাস্তার দুই পাশের দোকানপাট আর হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো ধুলায় ঢাকা পড়েছে। গতকাল রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজের পাশে যাত্রাপথে সাইদুল ইসলাম নামে এক প্রাইভেট কার চালক জানান, কালো রঙের গাড়ি এখানে আশপাশে কোথাও এক থেকে দুই মিটি রেখে দেখুন ধুলার আস্তর কি পরিমাণ পড়ে। ধুলার কারণে এখানকার চায়ের দোকান আর খাবারের হোটেলে মানুষ খেতে পারে না।

এ চিত্র এখন ঢাকার অধিকাংশ এলাকার। বিশেষ করে- রাজধানীর খিলগাঁও, মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল, সায়েদাবাদ, শ্যামপুর-ধোলাইখাল, চিটাগাং রোড, রায়েরবাগ, গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, কারওয়ান বাজার, বংশাল, কুড়িল বিশ্বরোড, ওয়ারী, সদরঘাট, বাবুবাজার, ধানমন্ডি, জিগাতলা, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মিরপুর, মহাখালী, তেজগাঁও, কালশী, রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ, বছিলা, মিরপুর-১৪ থেকে ভাসানটেক, বিমানবন্দর, উত্তরা মডেল টাউন, টঙ্গিসহ ঢাকার বেশিরভাগ সড়কই ধুলার চাদরে আচ্ছাদিত। সাধারণ যান চলাচলকারী এলাকার তুলনায় মেট্রোরেলের সড়ক নির্মাণ কাজ চলা এলাকাগুলোয় সব সময় ব্যাপক ধুলাবালি ওড়ায় আবাসিক ভবনের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বাসা পাল্টে ধুলামুক্ত সুবিধাজনক জায়গায় চলে যাচ্ছে। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে মিন্টো রোড, গুলশান, ধানমন্ডি ও বনানীর কিছু এলাকার ভিআইপি সড়কে।

বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে যানা গেছে, বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম) পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পিপিএম-পার্টস পার মিলিয়ন) এককে। এসব বস্তুকণাকে ১ ও ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার ব্যাস শ্রেণিতে ভাগ করে তার পরিমাণের ভিত্তিতে ঝুঁকি নিরূপণ করা হয়।
তারা বলছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ুমানের সূচকে (একিউআই) ভালো বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে মধ্যম মানের এবং ১০১-১৫০ হলে বিপদসীমায় আছে বলে ধরে নেয়া হয়। আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ হলে খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১-৫০০ হলে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বলা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, চলতি মাসের শুরুতেই ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর মাত্রায় পৌঁছে যায়। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আসার আগে প্রতিদিনই বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার পরিমণ ছিল ১৫০ পিপিএম এর উপরে। বুলবুলের প্রভাবে বৃষ্টির কারণে বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার পরিমাণ কিছুটা কমে আসে। ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ওই পরিমাণ ছিল ১০০ পিপিএম এর নিচে। কিন্তু তারপর আবার তা বাড়তে শুরু করে এবং ১৩ নভেম্বর তা ২৩০ পিপিএমে, অর্থাৎ খুব অস্বাস্থ্যকর মাত্রায় পৌঁছে যায়। গতকাল এর মাত্রা প্রায় ২৪০ পিপিএমে পৌঁছেছে।

অধিদপ্তরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, ঢাকা শহরে অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ, গাড়ির ধোঁয়া ও আশপাশের ইটের ভাটাগুলোর কারণে প্রতিবছর এ সময় বায়দূষণ বেড়ে যায়। এ বছর অক্টোবর পর্যন্ত এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ২০০ পিপিএমের নিচে ছিল। বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং নির্মাণকাজ জোরেশোরে শুরু হওয়ায় গত ৫-৬ দিনে সেটা আবার উপরে চলে গেছে।

রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব সড়কেই উড়ছে ধুলা। মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে ভাসানটেক যাওয়ার সড়কটির নির্মাণকাজ চলছে প্রায় এক বছর ধরে। দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়কটি স¤প্রসারণ হচ্ছে, পাশাপাশি চলছে নিষ্কাশন নালা বসানোর কাজ। বর্ষায় কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলা- এ নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের। এই সড়কে প্রতিদিন সকালে একবার পানি ছিটিয়ে যায় সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি। কিন্তু রোদে পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর আবার ধুলায় ডুবে যায় পুরা এলাকা। একই অবস্থা মিরপুরের কালসী রোড, ইসিবি চত্বর, মিরপুর ১২ নম্বর এলাকায়। এছাড়া উত্তরার বিভিন্ন সড়কেও ধুলার উপদ্রব দেখা গেছে। পুরান ঢাকার লালবাগ, আজিমপুর, চকবাজার, বেগমবাজার, ইমামগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে ধুলা উড়তে দেখা গেছে। বাণিজ্যিক এলাকা ইমামগঞ্জ, বেগম বাজার, চকবাজারে প্রতিদিন ঢাকার বাইরে থেকে অসংখ্য ট্রাকে করে মালামাল আসে। এসব ট্রাকের সঙ্গে আসে ধুলাও।

ধুলা নিয়ন্ত্রণে নগর কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ দেখেননি বলে অভিযোগ করেন ইমামগঞ্জের একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা জাকারিয়া হোসেন খান। অনেক সময় দূরদূরান্ত থেকে মালামাল আসে। পাউডার জাতীয় জিনিসপত্র আসে। অল্প বৃষ্টিতে কাদা হয়ে যায়। এছাড়া দুইদিন পর পর রাস্তা খোঁড়ে, মাঝেমধ্যে ম্যানহোল থেকে ময়লা তুলে সড়কে ফেলে। পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে গেছে। আমি কখনই এলাকায় পানি ছিটাতে দেখি না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের বলেন, ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো উদ্যোগ নেই। এ বছর বায়ুদূষণ রোধে উল্লেখযোগ্য কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, রাজধানীর আশপাশের এলাকার বিভিন্ন ইটের ভাটাগুলো বায়ুদূষণ করলেও তা বন্ধের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। রাজধানীতে খোঁড়াখুঁড়ি এবং বিভিন্ন নির্মাণ কাজের ফলে ধুলায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। এই দূষণ প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদপ্তর তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না।

তবে দূষণ কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক জিয়াউল হক। গত বছর সনাতন পদ্ধতির ১৩০টি ইটের ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে এক্সট্রিমলি আনহেলদি পর্যায়ে যেন না যায়। ইটের ভাটা বন্ধ করা, রাস্তাঘাট খোঁড়াখুঁড়ি, বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন, যানবাহনের ধোঁয়া, বর্জ্য পোড়ানোর কাজ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। কিন্তু নানা চেষ্টার পরও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি না হওয়ার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে অন্যতম অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে নির্দেশনা দিলেও সেসব বাস্তবায়নের হার কম। সিটি কর্পোরেশনের পানি ছিটানোর কথা আমরা বলেছি, আদালত থেকেও বলে দেয়া হয়েছে। দূষণ সৃষ্টিকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব ট্রাফিকের ও বিআরটিএর। কিন্তু এর সবটুকু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় না। আসলে আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Mh Rony ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
Washing detergent company will be happy
Total Reply(0)
Nazim ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
করিতে ধুলা দুর/ শহর হল ধুলায় ভরপুর এমনি সব গাধা/ ধুলারে মারি করিয়া দিবে কাদা
Total Reply(0)
Shoumitra Sarker ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
দেখার কেউ নেই শোনার কেউ নেই, যতদিন অাছ দেখে যেতে হবে
Total Reply(0)
Md Kamal Hossen ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
ঠিক বলেছেন ভাই। এটার একটা সমাধান চাই
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম চঞ্চল ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
ঢাকায় বসবাস করা এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। কবে যে আল্লাহ মুক্তি দিবেন।
Total Reply(0)
কে এম শাকীর ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
সিটি করপোরেশনের এ নিয়ে কোনো মাথা আছে বলে মনে হয় না। যতসমস্যা পাবলিকের।
Total Reply(0)
নীল আকাশ ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
যারা ব্যবস্থা নিবে তারা তো এসি গাড়িতে করে চলেন, তাদের তো সমস্যা নেই। যত সমস্যা খেটে খাওয়া মানুষের।
Total Reply(0)
Billal Hossain ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:৩৩ এএম says : 0
নিউজটি করার জন্য রিপোর্টার সায়ীদ আবদুল মালিক সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
বিদ্যুৎ মিয়া ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:৩৪ এএম says : 0
সিটি কর্পোরেশনের অবহেলার কারণে ঢাকা ধীরে ধীরে বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে
Total Reply(0)
তানিয়া ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:৩৫ এএম says : 0
মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীবাসী।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন