শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

‘শুদ্ধি অভিযানে প্রধানমন্ত্রী আত্মীয়কেও রেহাই দেননি’

জি কে শামীম আমার এখানে ঢুকতে পারেনি : ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চলমান শুদ্ধি অভিযান থামেনি জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুদ্ধি অভিযান থামেনি। প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলে দিয়েছেন এটা আমার বলা লাগবে না। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান চলতে থাকবে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
সড়ক খাতে জি কে শামীমের মতো প্রভাবশালী কেউ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জি কে শামীম আমার এখানে ঢুকতে পারেনি। এ ধরনের কেউ আমার এখানে ঢুকতে পারে! আমার এখানে যারা কাজ করে, আপনারা ভালো করে জানেন। একটা বিদেশি কোম্পানিকে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করেছি ঘুষ দেয়ার কারণে। আমার সচিবকে চায়ের প্যাকেটে করে ঘুষ দিতে এসেছিল, সে জন্য ওই কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছি আমাদের এখানে কোনো কাজ দেয়া নিয়ে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিএনপির চিঠি দেয়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমওইউ (মোমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) ও চুক্তির মধ্যে কী পার্থক্য, এটা বিএনপি বোঝে না? বিএনপির নেতৃত্বে অনেক বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন। আমি অবাক হয়ে যাই, এমওইউ ও চুক্তির মধ্যে কী পার্থক্য, এটা তারা বোঝেন না। চুক্তি ও এমওইউ এক কথা না। এখানে কোনো চুক্তি হয়নি। এমওইউ হয়েছে চারটি আর তিনটি ওপেনিং। তিনি আরো বলেন, বিএনপিকে বলুন, তারা এমওইউ ও চুক্তির মধ্যে পার্থক্যটা কেন বোঝে না? এটা জেনেও কি না জানার ভান করছে?

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এখানে (যোগাযোগ সেক্টর) মূলত কাজগুলো করে আর্মি, মোনেম কোম্পানি, রেজা কনস্ট্রাকশন। কিন্তু কোনো কন্ট্রাক্টর আমার অফিসে কখনো আলাপ করেনি। তারা কোনো আলাপ করলে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে কারো ব্যাপারে কোনো শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নেই। কারণ, প্রাইম মিনিস্টার ইজ ভেরি সিরিয়াস অ্যাবাউট ইট। টার্গেট অ্যাটিভ করার জন্য যত ধরনের স্যাক্রিফাইস প্রয়োজন, আমরা করব। এখানে প্রাইম মিনিস্টার তার আত্মীয়দেরও রেহাই দেননি, এটা তো আপনাদের বুঝতে হবে।

পেঁয়াজ নিয়ে হাহাকারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে পেঁয়াজের চালান এলে আশা করি এই হাহাকার কমতে শুরু করবে। ঘাটতি পূরণ হলে হাহাকারও কমে যাবে।

সড়কে নতুন আইন বাস্তবায়নে যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে না যায়, সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহŸান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন আইনটি ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হলেও তা সহনীয়ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। যাতে সংশ্লিষ্টরা আইন সম্পর্কে ধারণা পায়। দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে ১৭ নভেম্বর থেকে সড়ক পরিবহন আইনটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সড়কে আইনটি যাতে সকলে মেনে চলে সে জন্য রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

সড়ক পরিবহন আইনে নতুন কিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত আইনে আগে ছিল না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এর মধ্যে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো চালকদের জন্য পয়েন্ট পদ্ধতি রাখা হয়েছে। অপরাধ করলেই লাইসেন্সের পয়েন্ট কাটা যাবে। আবার এবারই প্রথম পরিবহন মালিকদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিধান যুক্ত হয়েছে। ট্রাফিক ওজন সীমা নির্ধারণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের বিষয়টি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দূরপাল্লার গাড়িচালকদের গাড়ি চালানোর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন আইন আগের তুলনায় কঠোর হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন আইন কার্যকরের কারণ শাস্তি দেয়া নয়, সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে শৃঙ্খলা আনাই প্রধান উদ্দেশ্য।

বিভিন্ন স্থানে ট্রাকচালকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, যত চাপ থাকুক আইন বাস্তবায়ন হবেই। তাই আন্দোলনর বাদ দিয়ে আইন মেনে চলতে সংশ্লিষ্ট পরিবহন মালিক, চালক ও শ্রমিকদের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। এটা প্রতিষ্ঠানটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন করে জনবল নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন