বাগমারার বাবুলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম
লিবিয়ায় গত সোমবার বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে বিমান হামলায় নিহত বাগমারার বাবুলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে বারবার মূর্ছা যান স্ত্রী নাজমা বেগম।
লিবিয়া প্রবাসী পুঠিয়া উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের শরিফ আহমেদ বাবুলালের মৃত্যু নিশ্চিত করে পরিবারের নিকট সংবাদ দেন। বাবুল (৪৭) উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার বিশুপাড়া মহল্লার লুৎফর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, ২০০৯ সালে বাবুলাল ওরফে বাবুল উপার্জনের আশায় সুদানে পারি জমান। এরপর সেখান থেকে ২০১২ সালে লিবিয়ায় প্রবেশ করে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকের কাজ আরম্ভ করেন। গত সোমবার ওই ফ্যাক্টরিতে বিমান হামলা করা হলে সেখানে কিছু শ্রমিক নিহত ও আহতের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে বাবুলালের কর্মস্থল থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরের কর্মস্থলে থাকা বাবুলের পরিচিত শরিফ আহমেদ সেখানকার হাসপাতালে গিয়ে বাবুলাল কে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। মুঠোফোনে শরিফ আহমেদ জানান, বিমান থেকে হামলা করা হলে বাবুলালের মৃত্যু হয়।
সরেজমিনে গিয়ে তার দুই হাত এবং মাথায় আঘাতের চিহ্নিত দেখা যায়। তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সেখানকার অ্যাম্বাসীতে যোগাযোগ করছেন বলে শরিফ আহমেদ জানিয়েছেন। নিহত বাবুলালের ভাই রোস্তম আলী জানান, তার ভাই বিদেশে গিয়ে পরিবারের সকলের সঙ্গেই নিয়মিত যোগাযোগ করতেন।
নিহত বাবুলালের এক ছেলে নাজিম আহমেদ চলতি বছরে জামগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে এবং এক মেয়ে ববি বিবাহিত। ছেলে নাজিম আহমেদ জানান, গত সোমবার তার পিতা বাবুলালের নামে সাড়ে পাঁচ শতক জমি কেনা হয়েছে। লিবিয়া থেকে এসে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করার কথা ছিল। পিতার অকাল মৃত্যুতে ছেলে নাজিমের পড়ালেখার পথ বন্ধ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বাবুলালের লাশ তাড়াতাড়ি গ্রামে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ জানান, রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেয়ে নিহত বাবুলালের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নিতে তাদের বাড়িতে এসেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদান করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন