বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেছেন, ধুমপান পরিহার ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমানারি ডিজিজ) প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশ্ব সিওপিডি দিবস-২০১৯ উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্ষব্যাধি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, শরীরের ব্রেন, হার্ট, লিভারের মতোই ফুসফুসও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে শ্বাসতন্ত্রের জটিল ফুসফুসের রোগ সিওপিডি প্রতিরোধেও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এক্ষেত্রে ধূমপান পরিহার করতে হবে ও তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বায়ু দূষণসহ সকল ধরণের দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ঢাকা শহরের বায়ুসহ পরিবেশ দূষণের মাত্রা অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে। ঢাকা শহরের অধিবাসীরা বায়ু দূষণযুক্ত পরিবেশের মধ্যে বসবাস করায় তারা সিওপিডিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি) বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এ কে এম মোশরারফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে জানানো হয়, পৃথিবীতে সিওপিডি রোগীর সংখ্যা ৮০ মিলিয়ন। ২০০৫ সালে তিন মিলিয়ন লোক এই রোগে রোগে মারা গেছেন। ২০০২ সালে সিওপিডি রোগ মৃত্যুর ৫ম কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। নিকট ভবিষ্যতে এটি ৩য় মৃত্যুরর কারণ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে সিওপিডি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৮ ভাগ। বাংলাদেশে এ সংখ্যা প্রায় ১০ ভাগ। যারা ধূমপান করে তাদের মধ্যে এই হার ১২ ভাগ, অধূমপায়ীদের মধ্যে এই হার ৩ ভাগ। বিএসএমএমইউ পরিচালিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এখানকার ৩৫ বছরের উর্ধ্বের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৪ ভাগ সিওপিডি রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে ১১ দশমিক ৭ ভাগ পুরুষ এবং ১০ দশমিক ৬ ভাগ নারী।
বক্তারা বলেন, সিওপিডি রোগ প্রতিরোধে তামাকের চাষ ও উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। বিড়ি, সিগারেট ও তামাক কোম্পানীগুলো বন্ধ হলে হ্রাস পাবে সিওপিডিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যখাতের ব্যয়ও কমে আসবে অনেকটা। কারণ ধূমপান ও তামাজাত দ্রব্য সেবনের কারণে শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সারসহ মানুষ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এর আগে সকালে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে এক জনসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা বের হয়। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সম্মিলিত প্রয়াস, সিওপিডি বিনাশ’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন