শুধু পরীক্ষা জালিয়াতিই নয়, এমপি তামান্না নুসরাত বুবলির বিরুদ্ধে রয়েছে আরো দু’টি আইনগত জালিয়াতির অভিযোগ। দু’টি জালিয়াতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে তিনি এমপি হয়েছেন। তিনটি জালিয়াতির ঘটনা এমপি বুবলির রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত অবস্থানকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। দলীয় রাজনীতি থেকে বহিষ্কৃত হবার পর বুবলির এমপি পদটিও হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এমপি বুবলি নরসিংদীর সাবেক পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী। মেয়র লোকমান ১৯৯৫ সালের ২৮ জুন তার আপন ফুফাতো বোন তাজমহল বেগম তাজরীনকে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে শাহহাম হোসেন কার্জন নামে একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। প্রথম স্ত্রী বিদ্যমান জেনেও এমপি বুবলি তার অনুমতি না নিয়েই মেয়র লোকমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর লোকমান হোসেনের প্রথম স্ত্রী ও তার একমাত্র পুত্রসন্তানকে তাদের অধিকার বঞ্চিত করে আড়ালে রেখেছেন।
মেয়র লোকমান নিহত হবার পর দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে তামান্না নুসরাত বুবলি স্বামীর সম্পত্তি একা ভোগ করার জন্য ঘটিয়েছেন ওয়ারিশ জালিয়াতির ঘটনা। জালিয়াতির মাধ্যমে লোকমানের প্রথম স্ত্রী তাজরীন ও পুত্র কার্জনের অধিকার হরণ করেছেন। তিনি প্রকৃত তথ্য গোপন করে নরসিংদী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের নিকট থেকে ওয়ারিশান সনদপত্র নিয়েছেন। এই ওয়ারিশান সনদপত্রে মেয়র লোকমানের উত্তরাধিকারী হিসেবে তার মা মাজেদা বেগম, স্ত্রী হিসেবে তামান্না নুসরাত বুবলি, এক কন্যা মিফতাহুল জান্নাত নাজা এবং একমাত্র পুত্র শাহজেব সালফির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। লোকমানের প্রথম স্ত্রী তাজরীন ও পুত্র কার্জনের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। তাদের আইনগত উত্তরাধিকার গোপন ও অস্বীকার করে এমপি বুবলি একাই লোকমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ভোগ করছেন।
ঢাকায় বসবাসকারী মেয়র লোকমানের প্রথম স্ত্রীর বড় ভাই বলেছেন, এমপি বুবলি নিজেকে লোকমান হোসেনের একমাত্র স্ত্রী দাবি করে লোকমানের ভাবমর্যাদা ব্যবহার করে জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। একইভাবে সেই সুবাদে তিনি নরসিংদী ও ঢাকার আওয়ামী লীগ নেতাদের নিকট মেয়র লোকমানের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হয়েছেন। অথচ লোকমানের প্রথম স্ত্রী হিসেবে তাজমহল বেগম তাজরীনই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই এমপি পদের হকদার ছিলেন। এমপি বুবলি লোকমানের প্রথম স্ত্রী তাজরীন ও পুত্র কার্জনকে শুধু সম্পত্তি থেকেই বঞ্চিত করেনি। তাদের রাজনৈতিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছেন।
এদিকে, জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে জাতীয় পত্রপত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করায় তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। প্রকাশ করেছেন তার মানসিক প্রতিক্রিয়া। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন এমপি বুবলি।
তিনি লিখেছেন, ব্যক্তিগত জীবনে চাওয়া-পাওয়ার হিসেব রাখিনি। নরসিংদীবাসীকে ভালোবেসেছি। কিছু অপশক্তি পেছনে লেগেছে, কত ঘটনা দেশে ঘটে এত লেখালেখি কেউ করে না। আপনারা এটা নিয়ে এমনভাবে লিখছেন, যেন আমার জন্য ৫০ জীবন শেষ হয়ে গেছে, লুটপাট হয়েছে, সর্বনাশ হয়েছে অনেকের।
আমার যদি কিছু হয়, দুই বাচ্চা নিয়ে সুইসাইড করি- খুশি হবেন তো আপনারা? ঠিক আছে আপনাদের খুশি আমার খুশি, ভালো থাকুন আমার সাংবাদিক ভাইয়েরা। আল্লাহ ভালো রাখুক আপনাদের। আমার এ জীবনে পাওয়ার চাইতে মনের দুঃখে মরেছি অনেকবার। বারবার মরার চাইতে একবারে মরে গেলে ভালো মনে করি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন