স্টাফ রিপোর্টার : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, ৯২% মুসলমানের ধর্মবিশ্বাস ও সাংস্কৃতির সাথে বর্তমান শিক্ষানীতি, পাঠ্যসূচি ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন’১৬ চরম বিরোধী। কোনো মুসলমান এটা মানতে পারে না।
ধর্মহীন শিক্ষানীতি, পাঠ্যসূচি ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন বাতিল করে ইসলামের সাথে সংগতিপূর্ণ করে তা প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, শ্রেণীকক্ষে চলমান হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ পাঠদান বন্ধ রাখতে হবে। অন্যথায় এদেশে ঈমানদার মুসলমানরা রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। যা সরকারের জন্য কল্যাণকর হবে না। আর তখন হেফাজত বসে থাকবে না। রমজানের পর উলামা সম্মেলনের মাধ্যমে কঠিন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে নামবে।
তিনি বলেন, বিতর্কিত ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতি-২০১০ অনুসারে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ক্রমান্বয়ে ইসলামি ভাবধারার পাঠসমূহ বাদ দিয়ে তদস্থলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদী চিন্তাধারার টেক্সট প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আমরা সেসবের যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ বিগত ১৬ মে স্মারকলিপির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট পেশ করেছি।
বাবুনগরী আরো বলেন, অত্যন্ত ক্ষোভ ও দুঃখের সাথে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে সরকার ও দেশবাসীকে জানাচ্ছি যে, বিগত ১৩ জুন জমিয়তুল মোদাররেসিনের ইফতার মাহফিলে শিক্ষামন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ “শিক্ষানীতি ধর্মবিরোধী নয়” এরকম অসত্য কথা বলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করেছেন। অথচ শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রণীত প্রায় সকল শ্রেণীর পাঠ্যসূচিতে হিন্দুত্বাবাদ ও নাস্তিক্যবাদ এখন প্রমাণিত সত্য। শিক্ষামন্ত্রী বাম-ঘরানার হওয়ায় তিনি এদেশের মুসলমানদের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারছেন না। পাঠ্যসূচি পরিবর্তনের দাবিতে ইসলামী জনতা রাজপথে নেমেছে। রক্তের বিনিময়ে হলেও তারা এ দাবি আদায় করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অধীনে একজন মানুষও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে বিনা বিচারে নিহত হোক, এটা কোন বিবেকবান মানুষ কামনা করে না। হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে এসব হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা ও জোর প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তা বন্ধ করার দাবি জানান। ইসলামে এ ধরণের গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাসী হামলা, ক্রসফায়ার, গুম-খুন, বৃদ্ধ-মহিলা ও শিশু হত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যুদ্ধের ময়দানেও রাসূল স. নারী-শিশু ও বৃদ্ধকে হত্যা করা নিষেধ করেছেন। তাছাড়া ইসলামের সাথে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
গতকাল জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা আবুল কালামের সভাপতিত্বে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজীত ইফতার পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ হাফিজ্জী, মাওলানা জহীরুল হক ভূইয়া, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক: মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, যুগ্ম সদস্যসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, অধ্যাপক হাকীম আব্দুল করীম, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতী আজহারুল ইসলাম, মুফতী আব্দুস সাত্তার, মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মাওলানা রাকীব আল হাসান, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা নাজমুল হাসান, মুফতী মুনীর হোসাইন, মুফতী জাকির হোসাইন, জনাব আতীকুজ্জামান, মুফতী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা শফীকুদ্দীন, মাওলানা শরীফুল্লাহ, মাওলানা হাবীবুল্লাহ ইসলামপুরী, মুফতী মাসউদুল করীম, মাওলানা হামেদ যহীরী, মাওলানা নূরুজ্জামান, মাওলানা রবীউল ইসলাম, মুফতী মহিউদ্দীন, মাওলানা আলী আকবর, মাওলানা ইলিয়াছ, মুফতী বশীরুল্লাহ, মাওলানা তৈয়ব আল হোছাইন, মুফতী নাছিরুদ্দীন ও মাওলানা মোছলেহ উদ্দীন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন