শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

১৬ এপ্রিল জাতীয় কাউন্সিল : মন্ত্রিসভা ছাড়বে জাপা

প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৩ পিএম, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : দলের রাজনৈতিক অবস্থানের ‘অস্পষ্টতা’ দূর করতে সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে মতামত দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। তবে পার্টির চেয়ারম্যানের উপর বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন তারা। পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন এরশাদ। তাদের মতে জাতীয় পার্টির রাজনীতি জনগণের কাছে পরিষ্কার করা উচিত। গতকাল দলের চেয়ারম্যানের বনানীর রাজনৈতিক কার্যালয় ‘রজনীগন্ধায়’ প্রেসিডিয়ামের সভায় এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর দলটির এটাই প্রথম প্রেসিডিয়াম সভা। সভায় রওশন এরশাদ, তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিতরা উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শেষে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়ে বলেন, ১৬ এপ্রিল দলের জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এইচ এম এরশাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জিএম কাদেরকে কো চেয়ারম্যান ও এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করার চেয়ারম্যানের আগের নেয়া সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। উপস্থিত সদস্যরা নতুন কো চেয়ারম্যানকে অভিনন্দন জানান। বৈঠক শুরুর আগে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী বনানীর কার্যালয়ে ভীড় করেন। বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয় তা জানার জন্য অপেক্ষা করেন। উপস্থিত কয়েকজন নেতা জানান, বিক্ষুব্ধ কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হতে পারেন সে আশঙ্কায় সরকারপন্থীরা বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আগেই। কারণ আড়াই বছর আগে বারিধারাস্থ এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসায় ‘আওয়ামী লীগের দালাল ধর ধর’ শ্লোগান দিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে লিফটে নাজেহাল করে বিক্ষুব্ধ নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে জিএম কাদের বলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্যরা সরকার থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এ দলের চেয়ারম্যান যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন এ প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত মত। জাতীয় পার্টির মূলশক্তি হচ্ছে জনগণ। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে। পার্টিতে কোনো বিরোধ নেই। আমরা পার্টির সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম। তিনি আমাদেরকে গতকাল (শনিবার) জানিয়েছেন অফিসিয়াল তিনটি কর্মসূচি থাকায় প্রেসিডিয়াম বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কিছুক্ষণ আগে ফোন করে আমাদেরকে বৈঠক করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডিয়ামের ৩৭ সদস্যের মধ্যে ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন। একদিন আগে প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন। অসুস্থতার জন্য অনুপস্থিত হতে পারেননি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, করিমউদ্দিন ভরসা ও নূরে হাসনা লিলি চৌধুরী। মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এম এ হান্নান এমপি। আর বিদেশে অবস্থান করায় অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ও প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা উপস্থিত হননি। কিন্তু বৈঠকে আসেননি বেগম রওশন এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, ফখরুল ইনাম, জিয়াউদ্দিন বাবলু, কাজী ফিরোজ রশিদ। বৈঠকে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, এম.এ. সাত্তার, মোঃ আবুল কাশেম, গোলাম হাবিব দুলাল, আলহাজ সাহিদুর রহমান ট্যাপা, অ্যাড. শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপিকা মাসুদা, এম. রশিদ চৌধুরী, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মাসুদ পারভেজ, সোহেল রানা, হাবিবুর রহমান, কর্মচারী-কাম নেতা সুনীল শুভ রায়, এস.এম. ফয়সল, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মোঃ আজম খান, এটিইউ তাজ রহমান ও সোলায়মান আলম শেঠ।
দলের রাজনৈতিক অবস্থান জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, এরশাদ যেদিকে আছেন পার্টিও সেদিকে থাকবেন। রওশন এরশাদের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। তিনি আমাদের মায়ের মতো। তিনি কোথাও বলেন নাই যে এরশাদের সঙ্গে কোনো বিরোধ আছে। রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলাভিত্তিক মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। এরপর জেলা ও উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে ঢাকায় সভা করা হবে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন