সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় এবার মৌসুম শুরু হওয়ার প্রায় চার মাস আগেই তরমুজ চাষ করে চমক দেখালেন হাদিউর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী। মাচার মধ্যে ঝুলছে তরমুজ। উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের বাগইন গ্রামের মরহুম আফরোজ আলীর ছেলে হাদিউর।
গ্রামের পাশেই বটের নদীর উত্তর পাড়ে ৫ বিঘা জমিতে হাদিউর মাঁচা পদ্ধতিতে ‘সুইস বøাক-২’ ও ‘বøাক বক্স’ জাতের তরমুজ চাষ করেন। রোপন করার মাত্র দুই মাসের মধ্যেই মাঁচায় ঝুঁলছে কাঁচা-পাকা তরমুজ। এমন ব্যতিক্রমী চাষাবাদে অনুপ্রাণিত করে তুলছে এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে।
তরমুজ ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন এলাকার লোকজন জড়ো হচ্ছেন। গত সপ্তাহে তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কবিরসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা। পরিদর্শনে গিয়ে তারা চাষির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তরমুজ চাষি হাদিউর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সিলেট এমসি কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স ও সোবহানীঘাট আলিয়া মাদরাসায় কামিল দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছেন। টেলিভিশনে ছবিসহ কৃষি ক্ষেতের বিভিন্ন খবর দেখে এমন উদ্যোগী হয়েছেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর হাদিউর নিজের গ্রামের বটের নদীর উত্তর পাড়ে ৫ বিঘা জমিতে মাঁচা পদ্ধতিতে আগাম জাতের তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেন। তিনি বিশেষ পদ্ধতিতে জমি তৈরি করেন। এরপর কুষ্টিয়া থেকে বীজ সংগ্রহ করে চারা রোপন করেন।
প্রতি বিঘায় এক হাজার ২০০টি করে গাছ রোপনের পর ৫ বিঘা জমিতে ৬ হাজার চারা গজায়। চারাগুলোর উপর বাঁশ ও জাল দিয়ে তৈরি নৌকার ছৈয়ার আদলে মাঁচানে লতা-পাতা বিস্তার করতে শুরু করে। ক’দিন পর মাঁচানে ঝুলতে থাকে তরমুজ।
জমিতে ১২ হাজার তরমুজের ফলন হয়। সুমিষ্টি তরমুজগুলো এখন বিক্রি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ বাজারে। ফলন এখন শেষ হওয়ার পথে। প্রত্যাশার চেয়ে লাভের আশা করছেন চাষি।
হাদিউর আরো জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ব্যয় হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। আগাম জাতের তরমুজ ক্ষেতের পরে এখানে তিনি শসা লাগাবেন। শসা ফলন তুলে আগামী রমজান মাসের আগে আবারো জমিতে রোপন করবেন আগাম জাতের তরমুজ।
এছাড়া পাশের আরো ১০ বিঘা জমিতে দেশীয় পদ্ধতিতে ‘ক্যামেলিয়া’ ও ‘বিগ ফ্যামেলি’ জাতের তরমুজের চারা রোপন করা হয়েছে। আগামী দুই মাস পর সেখান থেকেও ফলন উঠতে শুরু করবে।
তরমুজ ক্ষেতের শ্রমিক আজাদ মিয়া বলেন, তিনি এখানে শ্রমিকের কাজ করে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানিয়েছেন, মাস্টার্সের ছাত্র হাদিউর রহমানের মতো যারা কৃষি কাজে এগিয়ে আসবে তাদেরকে সহায়তা করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন