নাছিম উল আলম : রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র বরিশালের নৌপথে আজ থেকে আরো একটি বিলাসবহুল অত্যাধুনিক নৌযান চালু হচ্ছে। বেসরকারী খাতে ‘এমভি সুন্দরবন-১০’ নামের এ নৌযানটি সুন্দরবন নেভিগেশনের একাদশতম নৌযানের ১০ম। আজ দুপুরে ঢাকার সদর ঘাটে নৌযানটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিধি থাকবেন শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু। লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম-এর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদল্লাহ এমপি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রী মোঃ শাহজাহান খান। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বরিশাল নদী বন্দর টার্মিনালে নৌযানটিতে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় এক হাজার ৩শ’ যাত্রী বহনক্ষম এমভি সুন্দরবন-১০ নৌযানটির দৈর্ঘ ৩শ’ ১৫ফুট, প্রস্থ ৫০ ফুটেরও বেশী। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের কারিগরি বিভাগের অনুমোদিত এ নৌযানটির তৃতীয় তলার ছাদে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে মাস্টার ব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষে নৌযানটিতে অত্যাধুনিক জিপিএস পদ্ধতি ইকো সাউন্ডার ও রাডার স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন নেভিগেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বরিশাল চেম্বারের সভাপতি সাঈদুর রহমান রিন্টু।
ভ্রমণকে আনন্দদায়ক করার লক্ষে নৌযানটিতে বাচ্চাদের জন্য ভিন্ন খেলাধুলার ব্যবস্থা ছাড়াও ফুড কোট স্থাপন করা হয়েছে। প্রথম ও ভিআইপি শ্রেণীর যাত্রীদের ভ্রমণ আরামদায়ক করার লক্ষে প্রথমবারের মত এ নৌযানটিতে লিফট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও এমভি সুন্দরবন-১০’এ অসুস্থ ও মুমূর্ষু রোগীদের জন্য একটি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটসহ মিনি হাসপাতাল এবং একটি মেডিসিন পয়েন্ট সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে। পুরো নৌযানটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্লোজ সার্কিট ক্যমেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এমভি সুন্দরবন-১০ নৌযানটিতে মুসল্লীদের নামাজ আদায়ে সুপরিসর স্থান রাখা হয়েছে। পুরো নৌযানটিতে ফ্রি ওয়াই ফাই সুবিধাও থাকছে।
এমভি সুন্দরবন-১০ নৌযানটি বরিশাল-ঢাকা নৌপথে পঞ্চদশতম বেসরকারী নৌযান। জনতা ব্যাকের বরিশাল কর্পোরেট শাখার আর্থিক সহায়তায় সুন্দরবন নেভিগেশনের ‘এমভি সুন্দরবন-১০’ ও ‘এমভি সুন্দরবন-১১’ নৌযান দুটি বরিশালের বেলতলা এলাকায় কির্তনখোলা নদী তীরে লাগসই প্রযুক্তিতে প্রায় দু’বছর ধরে নির্মিত হয়েছে। নৌযান দুটি নির্মাণে ঠিক কত অর্থ ব্যায় হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও জনতা বাংক প্রায় প্রকল্প ব্যয়ের অর্ধেক অর্থ প্রকল্প ঋণ হিসেবে প্রদান করেছে বলে জানা গেছে। এমভি সুন্দরবন-১১ ইতোমধ্যে পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করেছে। সুন্দরনবন-১০ নৌযানটিকে বেসরকারী খাতে এ পর্যন্ত নির্মিত সব নৌযানের মধ্যে অত্যাধুনিক এবং বিলাসবহুল ও নিরাপদ নকশায় নির্মিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর স্বত্বাধিকারী।
এমভি সুন্দরবন-১০’ এ বিশাল লোয়ার ডেক ও আপার ডেকে প্রায় ১ হাজার ১শ’ যাত্রী বহনের ক্ষমতা ছাড়াও এর খোলে শতাধিক টন পণ্য পরিবহন সুবিধা রয়েছে। এছাড়া নৌযানটিতে ২শ’ যাত্রী বহনক্ষম ৬টি ভিভিআইপি ও ৯টি ভিআইপি শ্রেণী রয়েছে। এছাড়াও একটি দ্বৈত ফ্যামেলি বেড, ৭টি ফ্যামেলি বেড, ৪৬টি দ্বৈত, ৬৪টি একক শয্যার কক্ষ রয়েছে। এছাড়াও ২৮টি সোফা শ্রেণীতে ছাত্র ও ব্যাচেলারদের ভ্রমণের বিষয়টি নিশ্চত করা হয়েছে। নৌযানটির পুরো তৃতীয় তলাসহ ভিআইপি ও প্রথম শ্রেণীর বেশিরভাগ কক্ষই বাতানুকুল।
এমভি সুন্দরবন-১০ রাজধানীর সাথে চলাচলকারী দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের অধিকতর আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার নিয়ে আজ থেকে যাত্রা শুরু করবে বলে দাবী করেছে সুন্দনবন নেভিগেশন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন