ইনকিলাব ডেস্ক
ভারতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সংঘ পরিবার। বাংলাদেশে হিন্দু হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে আসামের হাইলাকান্দিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে ‘শেখ হাসিনা হায় হায়’ স্লোগান দেয়া হয়। সমাবেশে হিন্দুদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে দাবি জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচির আয়োজন করে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সংঘ পরিবারের শাখা সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল। উত্তরপূর্ব ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খ গতকাল এ খবর দিয়েছে।
প্রত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাশে হিন্দু হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার উত্তাল হয়ে উঠে হাইলাকান্দি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদসহ সংঘ পরিবারের প্রতিটি শাখা বাংলাদেশে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা অব্যাহত থাকার প্রতিবাদে এদিন জেলা সদরে বড়সড় র্যালি বের করে এর জোরালো প্রতিবাদ সাব্যস্ত করে। জেহাদি ও মৌলবাদীদের হাতে আক্রান্ত বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে সে দেশের সরকার মোটেও সুরক্ষা দিতে পারছে না। যার পরিণামস্বরুপ হিন্দু পুরোহিত, আশ্রমের সেবক, সাধারণ নারী-পুরুষ, ব্যবসায়ী, অধ্যাপক এদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না দুস্কৃতিরা। তারা লুটপাট, সম্পত্তি জবরদখল, ধর্ষণ, ধর্মান্তকরণ ইত্যাদি বিভিন্ন দুষ্কর্ম করে হিন্দুদের উৎখাতে নেমেছে। এগুলো বাংলাদেশের সর্বত্র নিত্তিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশের হিন্দু নেতা ও মানবাধিকার গোষ্ঠী সেখানকার সংখালঘু হিন্দুদের জীবন ও সম্পত্তি সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারেরর দৃষ্টি আকর্ষণ করে গেলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। তাই এ ব্যাপারে বাংলাদেশের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করে সে দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের পূর্ণ নিরাপত্তাদানের ব্যবস্থা করতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হাইলাকান্দি জেলা কমিটি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বাংলাদেশের অনৈতিক কার্যকলাপের প্রসঙ্গ উত্থাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে সংঘ পরিবার মিছিলের মাধ্যমে শহর পরিক্রমা করেন। প্রতিবাদ মিছিলটি দুপুরে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসে। সেখানে শেখ হাসিনা হায় হায়, আইএসআইএস মুর্দাবাদ, হিন্দু নিধনে সরকার নীরব কেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে, নারীদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না ইত্যাদি স্লেগান দেওয়া হয়। ভিএইচপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, একই দিনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পৃথক পৃথক স্মারকলিপি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আসামের মুখ্যমন্ত্রী, পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য উপধ্যক্ষ তথা বিধায়ক দিলীপ পালের কাছেও। মিছিলে বক্তব্য এবং স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করার পাশাপাশি সংঘ পরিবারের পক্ষে অংশ্রগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ভিএইচপির জেলা সভাপতি দ্বিজেন্দ্র কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক মনোজমোহন দেব, আরএসএসের কিরন্ময় দত্ত, রুপময় বিশ্বাস, বজরং দলের বিক্রমজিৎ ভট্টাচার্য, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের পান্না নাথ। বিদ্যার্থী পরিষদের প্রেমজোতি নাথ কল্যাণ আশ্রমের অমিয় দে, আশুতোষ পাল, কানন চক্রবর্তী, প্রেমাংশু পাল, রঞ্জিত ঘোষ, বিপাশা দে, মিনু ভৌমিক, মমতা দাস, দীপ্তেন্দু ভট্টাচার্য, হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী, দেবদাস পুরকায়স্থ, পার্থ চক্রবর্তী প্রমুখ। তারা সবাই বাংলাদেশের এসব হিন্দু নির্যাতন ও খুনের সঙ্গে জড়িত মৌলবাদীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া ওই দেশের অত্যাচারিত হয়ে এবং ভয়ে যেসব হিন্দু পরিবার পুনর্বাসনের জন্য ভারতে আশ্রয় চাইবে তাদের বৃহত্তর সামাজিক ন্যায় ও মানবতার স্বার্থে সম্মতি দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন