শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

একুশে বইমেলা আজ শুরু

প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : বাংলা একাডেমি চত্বরে ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সারা বছরের নীরব বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ আজ আবার বই প্রেমীদের পদচারণায় সরব হয়ে উঠবে। আজ বিকালে একুশের চেতনাবহ এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরাবরের মতো এবারো মেলা আয়োজন করছে বাংলা একাডেমি। তবে কিছুটা ভিন্ন সুরে। এদেশের জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক বাংলা একাডেমি’র ষাট বছরপূর্তিÑ হীরকজয়ন্তী যুক্ত হয়ে মেলায় সৃষ্টি হচ্ছে নতুনতর মাত্রা।
এবারের বইমেলা আগের যে কোন সময়ের থেকে বড় পরিসরে হচ্ছে। মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠান, বরাদ্দকৃত ইউনিট এবং প্যাভিলিয়ানের সংখ্যার ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার স্বত্ত্বাধিকারীর সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের মতো এবারও প্রকাশিতব্য বইয়ের বেশির ভাগই কবিতা আর উপন্যাস। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, গবেষণা, শিশুসাহিত্য, ছড়া, বিশ্বসাহিত্যের আলোচিত বিভিন্ন গ্রন্থের অনুবাদসহ নানা ধরনের গ্রন্থ রয়েছে। একাডেমি এবার ১০৮টি নতুন বই আনছে।
এই বছর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে কঠোর ভাবে ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, আমরা যে সময় বেঁধে দেবো এই সময়ের মধ্যেই মেলার কার্যত্রুম শেষ করতে হবে। এবার ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ দিনে হওয়ায় পাঠকরা একদিন বেশিই সময় পাচ্ছেন। মেলা সময় সূচিতে বলা হয়েছে ছুটির দিন ব্যতিত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা ও ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান : মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা আজ বিকেল ৩ টায় উদ্বোধন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে তিনি গ্রন্থমেলা পরিদর্শনে যাবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিদেশি অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ব্রিটিশ কবি ও জীবনানন্দ অনুবাদক জো উইন্টার, চেক প্রজাতন্ত্রের লেখক-গবেষক রিবেক মার্টিন, আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সমিতির (আইপিএ)-এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড ডেনিস পল শার্কিন এবং জোসেফ ফেলিক্স বুরঘিনো প্রমুখ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করবেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং নজরুল সংগীত পরিবেশন করবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পৌত্রী অনিন্দিতা কাজী। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ। স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি প্রফেসর এমেরিটাস আনিসুজ্জামান।
গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৫ প্রদান করা হবে। উদ্বোধন মঞ্চে সৈয়দ শামসুল হক রচিত এবং বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা বইয়ের ব্রেইল ও অডিও সংস্করণ প্রকাশিত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আধুনিক বাংলা অভিধান তুলে দেয়া হবে।
বইমেলায় নিরাপত্তা : বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্রন্থমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থারসমুহের নিরাপত্তাকর্মীবৃন্দ। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলায় এলাকাজুড়ে দু’শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রন্থমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে।
দুটি স্টল-ওয়ারি একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং প্রশিক্ষিত অগ্নিনির্বাপক কর্মী থাকবেন। মেলা প্রাঙ্গণ ও পাশ্ববর্তী এলাকায় সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত এবং দোয়েল চত্বর থেকে শহিদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চাঁনখারপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত নিরাপত্তার সার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধূলিনাশক পানি ছিটানো, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থান এবং প্রতিদিন মশক নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্টল, ইউনিট ও কর্নার : একাডেমি প্রাঙ্গণে ৮২টি প্রতিষ্ঠানকে ১১১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩২০টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৪০টি ইউনিট; মোট ৪০২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৫১টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ১৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ৬০০০ বর্গফুট আয়তনের ১৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও ৯২টি লিটল ম্যাগাজিনকে বর্ধমান হাউজের দক্ষিণ পাশে লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যাঁরা বই প্রকাশ করেছেন তাঁদের বই বিক্রি ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই ৩০% কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫% কমিশনে বই বিক্রি করবে।
একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমির ২টি প্যাভিলিয়ন, একাডেমি প্রকাশিত অভিধান বিক্রয়কেন্দ্র, একাডেমির শিশুকিশোর প্রকাশনাভিত্তিক বিক্রয়কেন্দ্র এবং একাডেমির সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার-এর বিক্রয়কেন্দ্র থাকবে।
বিভিন্ন চত্বর : অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশকে ১৫টি গুচ্ছে সজ্জিত করা হয়েছে। চত্বরগুলো নামাঙ্কিত থাকবে ভাষাশহিদ আবুল বরকত, আবদুস সালাম, শফিউর রহমান, রফিকউদ্দিন আহমদ, আবদুল জব্বার, শহিদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, আলতাফ মাহমুদ, সিরাজুদ্দীন হোসেন, ডা. আলীম চৌধুরী, সেলিনা পারভীন, শিশুসাহিত্যিক সাজেদুল করিম, হাবীবুর রহমান, ফয়েজ আহ্মদ এবং রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই-এর নামে।
এবার শিশুকর্নার মেলার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। শিশুকিশোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমুহ যেন বইমেলায় ক্রয়-বিক্রয়ের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে সে জন্যই এই ব্যবস্থা। এই কর্নারকে শিশুকিশোর বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। মাসব্যাপী গ্রন্থমেলায় এবারও শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হবে।
গ্রন্থমেলার থিম : মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। ২০১৫-র ৩রা ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি পূর্ণ করেছে তার ঐতিহ্য ও গৌরবের হীরকজয়ন্তী। এবারের গ্রন্থমেলার মূল থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী’।
আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব : অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে ৩রা ফেব্রুয়ারি ২টি অধিবেশনে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তন এবং মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব। এতে বাংলা ও বিশ্বকবিতা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি সেøাভাকিয়া, মরক্কো, সুইডেন, তাইওয়ান, যুক্তরাজ্য, ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজন্মের কবিবৃন্দ কবিতা পাঠ করবেন।
পুরস্কার প্রদান : অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০১৫ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০১৫ গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে।
এছাড়া ২০১৫ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ-বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে।
সাজসজ্জার কাজ : আজ মেলা শুরু হলেও গতকাল পর্যন্ত স্টলসজ্জার কাজ গুছিয়ে উঠতে পারেনি বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা। সেই জন্যই গতকাল একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রবেশ মাত্রই নাকে ভেসে আসছিল রঙের গন্ধ আর কানে আসে টুংটাং শব্দ। সেজন্যই মেলার একদিন আগেও গতকাল ছিল একাডেমি চত্বরে নির্মাণকর্মীদের দারুণ ব্যস্ততার দিন। এত দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে নির্মাণকর্মীরা দায়ী করলেন একাডেমিকে। বললেন, ‘স্টল বরাদ্দ দিতে দেরি করায় এখন নির্মাণ কাজ দ্রুততার সঙ্গে করতে হচ্ছে। ফলে অনেক কিছু মন মতোও হচ্ছে না। তবে নির্মাণকারীরা আশাবাদী মেলার উদ্বোধনের আগেই তাদের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
গতকাল মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ প্রকাশনা তাদের স্টল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেননি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে হাতে-গোনা কয়েকটি প্রকাশনা তাদের স্টল নির্মাণের কাজ শেষ করেছেন। বইয়ের পসরা সাজিয়েছে মাত্র ৮ থেকে ৯টা প্রকাশনা। এছাড়া বেশীর ভাগ স্টলেরই মাত্র ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশের মতো কাজ শেষ হয়েছে।
তবে মেলার একাডেমির অংশে কাজের অগ্রগতি অনেকাংশে বেশি শেষ হয়েছে। বেশীরভাগ প্রকাশনা সংস্থার কাজ প্রায় শেষ। কয়েকটি স্টলে শ্রমিকরা ব্যস্ত রয়েছে রং করার কাজে। এছাড়া এখানেও কোনো প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান বইয়ের পসরা সাজনোর কাজ শুরু করতে পারেনি।
বাংলা একাডেমির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, আমরা প্রকাশনাগুলোকে এর আগেও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে নির্দেশনা দিয়েছি। মেলা শুরু হওয়ার আগেই তাদের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেব।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একাডেমির বটতলায় মাত্র ৩২টি বই নিয়ে একাই বইমেলার আয়োজন করেছিলেন ‘মুক্তধারা’ প্রকাশনীর চিত্তরঞ্জন সাহা। ঘাসের ওপরে চট বিছিয়ে বই নিয়ে বসেছিলেন তিনি। যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে এটাই ছিল প্রথম বইমেলা। ১৯৭৬ সালে এসে মেলায় যোগ দেয় আহমদ পাবলিশিং হাউস। এরপর ১৯৭৭ সালে একে একে যোগ দেয় নওরোজ কিতাবিস্তান ও চলন্তিকা। ১৯৭৮ সালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বইমেলার আয়োজন শুরু করে বাংলা একাডেমি। ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলা নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। তবে তা ‘অমর একুশে বইমেলা’ হিসেবেই সবার কাছে অধিক পরিচিত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন