বরিশাল ব্যুরো : স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রায় বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে রোজাদারসহ সাধারণ মানুষের চরম কষ্টের মধ্যেই গতকাল দুপুরে বরিশাল মহানগরীতে সামান্য কয়েক ফোঁটা বৃষ্টিতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি নেমে এলেও তা ছিল সাময়িক।
আকাশে হালকা মেঘের সাথে অতি ক্ষণস্থায়ী কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি অল্প সময়ের জন্য জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি আনলেও কাক্সিক্ষত বৃষ্টি হয়নি। তবে মেঘের সাময়িক আনাগোনা আর কয়েক ফোঁটা বৃষ্টিকে সরিয়ে অল্পক্ষণের মধ্যেই প্রখর রোদ নিয়ে সূর্য পুরো আকাশের দখল বজায় রাখে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
বৃষ্টি জনজীবনে যে কিছুটা স্বস্তি আনার কথা তা স্থায়ী হয়নি। বেলা বাড়ার সাথে অস্তস্তিও আবার বাড়তে থাকে। আবহাওয়া বিভাগ আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার শেষ দিকে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা জানিয়েছে। চলতি মাসে এখনো বরিশাল অঞ্চলে বষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম রয়েছে। এ সময়ে দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩১.৫ ডিগ্রি থাকার কথা থাকবলেও গতকাল তা প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই করছিল, যা ছিল আগের দিনের তুলনায় দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আষাঢ়ের এ খড় তাপে জনজীবনে চরম অস্বস্তি অব্যাহত রয়েছে। এ দাবদহ ঈদের বাজারেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। দুপুরের পরে অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে সাহস করেন না। অথচ দোকানীরা পাসরা সাজিয়ে বসে আছে। রোজার এ সময়ে সর্বোচ্চ বেচাকেনার কথা।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটির বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরে এক নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বরিশাল সহ দক্ষিন উপকূলের বেশীরভাগ এলাকায় অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভবনার কথাও বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। এমনকি দক্ষিনাঞ্চল সহ সারাদেশেই দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার কথা জানিয়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে আষাঢ়ের শুরুতে বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মওশুমী বায়ু দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলভাগ হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশের মুখে গত ১১ জুন থেকে প্রবল বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চল সয়লাব হয়ে যায়। এর পর থেকে গত পনের দিন ধরেই আষাঢ়ী খরাসহ তাপ প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন এখন অনেকটাই বিপর্যস্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন