অর্থনৈতিক রিপোর্টার : মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর তাই ঈদের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সব শ্রেণির মানুষ। শেষ সময়ে কেনাকাটায় ভিড় জমেছে টুপি, জায়নামাজ, তসবিহ, আর আতরের দোকানে। বেচাকেনা চলবে ঈদের নামাজের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। ঈদকে সামনে রেখে তাই রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান, এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, কাঁটাবন মসজিদ মার্কেট, পল্টন, মৌচাক মার্কেট, কাকরাইল মসজিদ মার্কেটসহ ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে এসব জিনিস।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট এবং মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেট জিপিওসংলগ্ন আশপাশের ফুটপাথ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় শতাধিক দোকানে টুপি-জায়নামাজ, তসবিহ, মেসওয়াক, আতর-সুরমার পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ধনী বা গরিব সবার জন্য রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দামের পণ্য, যার নামেও রয়েছে বৈচিত্র্য।
বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের একটি আতর হাউজের মালিক আব্দুর গাফ্ফার বলেন, ২০ রমজানের পর থেকে টুপির বাজারে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আতর-টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবছরের মতো এবারো আমরা দেশি আতরের পাশাপাশি বিদেশি আতর, টুপি ও তসবিহ এনেছি। ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত ছোট-বড় শিশিতে আতর বিক্রি করছি। দেশি-বিদেশি টুপি রয়েছে ৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। ১০০ থেকে ছয় হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে জায়নামাজ। তসবিহ বিক্রি করেছেন ৫০ টাকা থেকে ছয় হাজার টাকায়। আল-রিহাব আতর অ্যান্ড ক্যাপ হাউজের বিক্রেতা ফয়সাল জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আতর-টুপির বিক্রি কম। তবে ২০ রমজানের পর ক্রেতা কিছুটা বেড়েছে।
টুপি কিনতে আসা রাসেল জানান, ঈদের সব ধরনের কেনাকাটা শেষ হয়েছে। এখন টুপি কিনতে এসেছি। আমি এবং আমার চার বছরের ছেলের জন্য টুপি কিনবো। দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে দাম বেশি। তবে ঈদ তোÑনতুন টুপি কিনতেই হবে।
বায়তুল মোকাররমে দেশে বানানো টুপির পাশাপাশি পাওয়া যাবে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও দুবাইয়ের টুপি। সবচেয়ে বেশি দামে টুপি বিক্রি করছে মালয়েশিয়ার তৈরি বেলবেট মাহতির টুপি যার দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়াও রয়েছে ইন্ডিয়ান বুরি টুপি দেড় হাজার টাকা, সৌদির বুগিস টুপি ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। পাকিস্থানি টুপি ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে পাথরের কাজ করা পাকিস্থানি টুপি ১ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। বাজারে মোটামুটি ভালোমানের একেকটি গোল টুপির দাম পড়বে ১০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে, একটু উন্নত টুপির দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।
দেশের বাজারের বেশির ভাগ আতরই মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করা হয়। নানা ব্র্যান্ডের আতর পাওয়া যায় বাজারে। যেমনÑহাটকরা উদ, স্টাইল উদ, হোয়াট উদ, আগর, আম্বার, রোজ আইটেম, দরবার, জান্নাতুল ফেরদৌস ইত্যাদি। বাজারে থাকা শতাধিক রকমের আতরের ছোট বড় বোতলের দাম পড়বে ৫০ থেকে শুরু করে ৩২ হাজার টাকা। এর মধ্যে দুবাই তৈরি হাটকরা উদ ২০ মিলিগ্রাম আতর পরবে ২৫ হাজার টাকা। এক তোলা স্টাইল উদ ৪ হাজার টাকা, হোয়াট উদ ৬ হাজার টাকা। সব চেয়ে বেশি আগর, এক তোলা ৩২ হাজার টাকা। এছাড়াও দরবার ও জান্নাতুল ফেরদৌস আতর এক তোলা ৪০০ টাকায় বিক্রি করছে। এছাড়াও আগর কাঠ ১০০ গ্রাম প্রকার বেধে বিক্রি করছে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়। আতর রাখার বিভিন্ন বোতল বা আতরদানী বিক্রি করছে ২৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়।
নানা পদের তসবিহ আছে বাজারে। কাঠের তৈরি, পাথরের তৈরি ও ক্রিস্টালের তৈরি তসবিও আছে বাজারে। দাম পড়বে ৫০ থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা। ইউজার পাথরের তৈরি তসবিহ’র দাম পড়বে ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও রয়েছে ক্রিস্টাল ১০০ থেকে ২০০ টাকা, চন্দন দেড় হাজার টাকা, জয়তুন ১ হাজার ২০০ টাকা, টাইগর তসবিহ ২ হাজার টাকা, কাঠের তৈরি তসবিহ ৫০ থেকে দেড়হাজার টাকা।
বিভিন্ন মান ও প্রকার বেধে জায়নামাজ পাওয়া যাবে ১০০ থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকার মধ্যে। জায়নামাজগুলো পাওয়া যাবে সিঙ্গেল ও ডাবল এই দুই প্রকারে। দেশে তৈরি জায়নামাজের পাশাপাশি বাজারে রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্থান, বেলজিয়াম, তুরস্ক ও সৌদি আরবের জায়নামাজও। মান ও কাপড় ভেদে কমবেশি হয় জায়নামাজের দাম। সব চেয়ে বেশি দামি তুরস্কের আইডিন কোম্পানির জায়নামাজ। দাম ৬ হাজার টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন