নরওয়েতে জন্মহার কমে বর্তমানে সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে। ফলে দেশটির অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এই জনতাত্ত্বিক পরিবর্তনের মধ্যেও সেখানকার শ্রমবাজার টিকিয়ে রেখেছে মুসলিম অভিবাসীরা।
গত বুধবার নরওয়েজিয়ান পরিসংখ্যান বিভাগের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে নরওয়ের রাজধানী ওসলোতে পুরুষ শিশুদের মধ্যে ‘মুহাম্মদ’ ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম। এবার দিয়ে টানা ১১তম বারের মতো এই নাম শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এর পরেই পছন্দের নামের তালিকায় আছে ‘অস্কার’, ‘আকসেল’ এবং ‘জ্যাকব’।
2008 সাল থেকে ‘মুহাম্মদ’ ওসলোতে সর্বাধিক জনপ্রিয় নাম, এটি বড় এই শহরটিতে ক্রমবর্ধমান মুসলমান জনগোষ্ঠী যে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে তারই নিদর্শন। ২০১৭ সালে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওসলোর জনসংখ্যার মোট ৮.৭ শতাংশ হচ্ছে মুসলমান। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই পাকিস্তানি, সোমালিয়ান, ইরাকি এবং মরোক্কান।
নরওয়েজিয়ান মুসলমানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে পাকিস্তানিরা। তাদের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। বেশিরভাগ অভিবাসীরাই ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে সেখানে কর্মী হিসাবে গিয়েছিলেন এবং দেশটির নির্মাণ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ওসলোতেই দেশটির বেশিরভাগ অভিবাসী বসবাস করেন। অসলোর মোট জনসংখ্যা ৬ লাখ ২৪ হাজার। তাদের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজারই অভিবাসী বা অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান। অর্থাৎ, মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩১ শতাংশই অভিবাসী।
নরওয়ের মুসলমানরা সংখ্যালঘু হলেও খ্রিস্টানধর্মের পরে ইসলাম দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। এদিকে, নরওয়ের নেতৃস্থানীয় ভার্ডেন্স গ্যাং পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, নরওয়েজিয়ানদের মধ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৯০ এর দশকে যেখানে মাত্র ৫০০ জন ইসলাম গ্রহণ করেছেন সেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ধর্মান্তরিত মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার।
গবেষণা থেকে দেখা গেছে, নরওয়েতে মুসলমানের সংখ্যা ২০০৫ সালে ছিল ১ লাখ ২০ হাজার। ২০০৯ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুসারে, উচ্চ অভিবাসনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা বেড়ে দাড়াতে পারে ২২ লাখে। সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন