শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শপিং মলগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : উৎসবের দিনটি যত এগিয়ে আসছে, ভিড় তত বাড়ছে শপিং মলগুলোতে। ঈদের আগে গতকাল শেষ শুক্রবার হওয়ায় শপিং মলগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। শুক্রবার থেকে ঈদের সরকারি ছুটি শুরু হয়ে গেছে। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগামী সোমবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। যারা ঢাকায় ঈদ করবেন বা ঈদের পর ঢাকা থেকে বাড়ি যাবেন তারা গতকাল থেকে আগামী কয়েকদিনকেই বেছে নিচ্ছেন শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার জন্য। আবার ঈদের আগের দিন বাড়ি যাবেন, কিন্তু কেনাকাটা এখনও শেষ করতে পারেননি, তাদের কেউ কেউও শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করছেন। কারও পোশাকের সঙ্গে জুতো কেনা বাকি রয়ে গেছে, কেউ প্রসাধণ সামগ্রী কিনছেন।
বরাবরের মতো এবারও ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি। তরুণ ও প্রবীণসহ সব বয়সের পুরুষের পছন্দের তালিকায় পাঞ্জাবি আছেই। এবারের ঈদে পাঞ্জাবির ডিজাইন, রং ও কাপড়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে বলে জানান বিক্রেতারা। তারা বলেন, বিগত যেকোনো বছরের তুলনায় এবার পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। বরাবরের মতো লং পাঞ্জাবিই বেশি বিক্রি হচ্ছে। নতুন নতুন ডিজাইন এলেও দাম তেমন একটা বাড়েনি। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সব ফ্যাশন হাউসই পাঞ্জাবিতে এনেছে সুতি, সিল্ক, হাফসিল্ক, এন্ডি সিল্ক কাপড়ে অ্যামব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট ও হাতের কাজে নতুনত্ব। তরুণদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে সর্বনিম্ন ৪০০ টাকায়। আর সর্বোচ্চ দাম ৮ হাজার টাকা। রাজধানীর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, কনকর্ড, মৌচাক মার্কেট, আনারকলি, ফরচুন শপিং সেন্টারসহ বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায় এসব মার্কেটে দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি বিদেশি আইটেমও পাওয়া যাচ্ছে। শিশুদের দেশি আইটেম ৫০ টাকা থেকে সাতশ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাচ্চাদের বিদেশি পোশাক ৫শ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। এছাড়া বাচ্চাদের পাঞ্জাবি পাওয়া যায় ৬শ টাকা থেকে সাড়ে ১২শ টাকায়। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা। পাওয়া যাচ্ছে ৩শ টাকা থেকে ১২শ টাকার মধ্যে। বাচ্চাদের কাপড় বিক্রেতা মালিবাগের ফরচুন শপিংমলের হাসিবুর রহমান বলেন, এখন বিক্রি মোটামুটি ভালোই চলছে। সামনে বিক্রি আরো বাড়তে পারে। কথা হয় ফরচুনে মেয়েকে নিয়ে শপিং করতে আসা সরকারি চাকরিজীবী জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে তুলনামূলক কম দামে ভালো কাপড় পাওয়া যায়। তাই বেশির ভাগ সময় এই মার্কেট থেকে কেনাকাটা করে থাকি। মৌচাকে বাচ্চার জন্য জামা কিনছেন কানিজ ফাতেমা। তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত বেশিরভাগ পরিবার এখানেই শপিং করতে আসেন। এসব মার্কেটে তুলনামূলক কম দামে ভালো জিনিস পাওয়া যায়। নিউমার্কেটের বিক্রেতা সুমন আহমেদ বলেন, দাম কম হওয়ায় আশপাশের অনেকেই এখানে শপিং করতে আসে। বড় মার্কেটের মতোই এখানে ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায় এবং তুলনামূলক কম দামে। প্রতিদিনই বেচাবিক্রি বাড়ছে। রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্থান, বায়তুল মোকাররম, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, মৌচাক, মহাখালীসহ বেশ কয়েকটি ফুটপাতের বাজারে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতারা আসছেন, পছন্দমতো জামা-কাপড় কিনছেন। বিক্রেতারা বলছেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা। বিশ্রামের সময় নেই তাদের। সারাক্ষণই ভিড়। তবে ফুটপাতের অনেক দোকানে একদামে পোশাক বিক্রি হয়। সেখানে সারাদিনই পোশাকের দাম জানিয়ে হাঁকডাক দিতে ব্যস্ত বিক্রেতারা। এসব দোকানে গেলে ‘একদাম দুই শ’, ‘বাইচ্ছা লন দুই শ’, ‘যেটা নিবেন দুই শ’Ñএ ধরনের হাঁকডাক শোনা যায়। এসব মার্কেটে ২০০ থেকে ৭০০ টাকায় শার্ট ও শার্টের কাপড় পাওয়া যায়। মেয়েদের থ্রি-পিস পাওয়া যায় ২৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় বাচ্চাদের বিভিন্ন ডিজাইনের জামা। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, নামিদামি মার্কেটগুলোতে সবসময়ই ধনীদের ভিড় থাকে। বিক্রেতারাও ইচ্ছামতো দাম নিতে পারেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। এসব মার্কেটের পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষদের নাগালের বাইরে।
বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পুরো পরিবার নিয়েই অনেকে হাজির হয়েছেন শপিং মলে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন আবুল হোসেন। মাত্রই ছুটি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতোদিন পড়াশোনার চাপে কেনাকাটার সুযোগ পাননি। ঈদে ঢাকায় থাকবেন বলে শুক্রবারের আশায় ছিলেন। বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে একদিনেই কেনাকাটা শেষ করবেন বলে ঠিক করেছেন। তিনি বলেন, ‘শার্ট আর প্যান্ট কিনেছি। এখন জুতা কিনতে এলিফ্যান্ট রোড যাব। তাই সকালেই বের হয়েছি। ইফতারের আগেই বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে। বসুন্ধরা সিটির ফ্যাশন জোন নামের দোকানের মালিক বলেন, গতকালের চেয়ে শুক্রবার বিক্রি বেড়েছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি। সন্ধ্যার পর বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
সীমান্ত স্কয়ারে ছয় বছরের মেয়ের জন্য জামা দেখছিলেন জিগাতলার বাসিন্দা ফারহানা আলম। এবারের ঈদ ঢাকায় কাটাবেন বলে ঠিক করেছেন। তিনি বলেন, এর আগের সপ্তাহে একবার এসেছিলাম। ভিড় বেশি থাকায় আজ এলাম। তিনি জানালেন, মেয়ের জামা কেনার সঙ্গে সঙ্গে নিজের জন্য কিছু কসমেটিকস কেনারও পরিকল্পনা আছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন