বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শহর ছাড়ছে লাখ লাখ মানুষ

প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বন্দরনগরী
আইয়ুব আলী : ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম নগরী। নাড়ির টানে গ্রামে ছুটছে মানুষ। এবার ঈদে কমপক্ষে ৩১ লাখ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ নগর ছাড়ছে। ট্রেনে বাসে ছুটছে মানুষ। যাচ্ছে রিজার্ভ বাস, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার নিয়ে। প্রাইভেট গাড়িগুলোতে ভাড়ার পরিমাণ বাড়ছে হু হু করে। গতকাল (শুক্রবার) থেকে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে নগরী।
বৃহস্পতিবার অফিস ছুটির পর থেকে বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। রাতভর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে ছুটে যায় শত শত বাস। গতকাল সকাল থেকেও রেলস্টেশন ও বাস টার্মিনালে মানুষের ভিড় ছিল। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া সবগুলো ট্রেন ছিল যাত্রীতে ঠাসা। ট্রেনের ছাদেও ভ্রমণ করছে যাত্রীরা। বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের প্রচ- ভীড়। কদমতলী বাস টার্মিনাল, অলংকার বাস টার্মিনাল ছাড়াও বিআরটিসি বাস টার্মিনাল এবং দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসের কাউন্টারে শত শত যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে।
দূরপাল্লার সবকটি রুটে অতিরিক্ত বাস নামানো হয়েছে। তারপরও যাত্রীদের চাপ সামাল দেয়া যাচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন জেলার রুটে চলাচলরত বাস এনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া সবকটি ট্রেনের সাথে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হয়েছে। কয়েকটি রুটে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। এরপরও যাত্রীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে রেলের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা যায়, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি কাজে লাগাতে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে ৩১ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৬০ হাজার মানুষ বিদেশে ঈদ করবে, ১৬ লাখ যাত্রী চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায়, বাকি ১৪ লাখ যাত্রী দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদ করবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল থেকে টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। ঈদের পর আগামী ৯ জুলাই শনিবার পর্যন্ত নগরী ফাঁকা থাকবে। লম্বা ছুুটি পেয়ে অনেক ধনাঢ্য মানুষ বিদেশে ছুটছে। ইতোমধ্যে সিংগাপুর. মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকংসহ পর্যটন নির্ভর বিভিন্ন দেশে ঈদের ছুটি কাটাতে পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। অবশ্য দেশের লাখ লাখ মানুষ এখনো ঈদে গ্রামে ছুটেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে ষাট লাখ লোকের বসবাস। চট্টগ্রাম থেকে ৩৬টি আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল করে। ইতোমধ্যে এসব রুটে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বহু বেশি বাস চলাচল শুরু করেছে। ঈদে টু-পাইস কামাতে অনেক লক্কর-ঝক্কর গাড়িও রুটে নেমেছে। গতকাল ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের প্রচ- চাপ ছিল। কেউ ট্রেনে, কেউ বাসে, কেউ নৌপথে পরিবার-পরিজন নিয়ে নগর ছেড়েছেন।
অনেকে আন্তঃজেলা রুটের বিভিন্ন বাস রিজার্ভ করে বাড়ি ফিরছেন। নিম্নআয়ের মানুষরা পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করার জন্য গ্রামে ছুটছেন। নগরীর লালদীঘির পাড়, বহদ্দারহাট এবং নগরীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ব্যক্তি মালিকানাধীন মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়েও অনেকে গ্রামে ফিরছেন।
গতকাল লালদীঘির পাড়ে নাটোরের এক বাসিন্দা ঈদের আগের দিন থেকে পরবর্তী চার দিনের জন্য একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছেন বত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে। ওই ব্যক্তি জানালেন, বাসে ট্রেনে নানাভাবে চেষ্টা করেও টিকিট পাইনি। ছোট বাচ্চা আছে। আছেন বৃদ্ধা মা। বাড়িতে যেতে হবে। আবার ফিরতে হবে। তাই চারদিনের জন্য মাইক্রোবাসটি ভাড়া করে ফেললাম। বত্রিশ হাজার টাকা একটু বেশি হলেও কিছু করার নেই বলেও তিনি জানালেন। নগরীর ব্যস্ত সড়কগুলো দু’একদিনের মধ্যে ফাঁকা হয়ে যাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন