শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গুলশানে হামলাকারী রোহান আ’লীগ নেতা ইমতিয়াজ বাবুলের ছেলে

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফেসবুকে ঘনিষ্ঠজনদের দাবি
স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানের আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলাকারীদের ছবি আইএসের বরাত দিয়ে প্রথম প্রকাশ করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী দল ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’। এরপর থেকেই হামলাকারীদের আসল পরিচয় প্রকাশ হতে শুরু করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে।
৫ হামলাকারীর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছেন তাদের কাছের পরিচিতরা। হামলা পরিচালনাকারী দলের যে ছবি সাইট ইন্টেলিজেন্স প্রকাশ করেছে তার মধ্যে একজনকে রোহান ইমতিয়াজ বলে ফেসবুকে দাবি করেছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা। নিহত রোহান আওয়ামী নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে বলেও বলা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে বাবুলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশও রোহানের পরিচয় নিশ্চিত করেনি।
ফেসবুকের একটি গ্রুপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আবু সালেহ ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ তারেক জামান, জহির খান, মোহাম্মদ হাসান পলাশ, রোহান আহমেদ, তৈমুর মল্লিক, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, মোরশেদ রহমান, নোমান খানসহ অনেকেই দাবি করেন ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে রোহানই হামলায় জড়িত।
গত বছর অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা মহানগর উত্তরের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে (মোহম্মদপুর এলাকা) বাবুল আওয়ামী লীগের মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। এই ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সফিকুল ইসলাম সেন্টু জয়লাভ করেন। ইমতিয়াজ খান বাবুলের শ্যালক কামাল পাশা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। মোহাম্মদপুরে জোড়া খুনের মামলায় কামাল পাশা এখন কারাগারে আটক। বাবুল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল। এদিকে ফেসবুক প্রোফাইলে বাবুল তার পরিচয় উল্লেখ করেছেন, তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক। গুলশানে ৭ হামলাকারীর মধ্যে ৬ জন মারা যান। নিহত ৬ জনের মধ্যে রোহান ইমতিয়াজও ছিলেন। রোহানের মা স্কলাশটিকা স্কুলের একজন শিক্ষিকা, মা-বাবার একমাত্র ছেলে সন্তান, রোহানের দুই বোন আছে। তারা মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন বলে জানা গেছে।
হামলাকারীদের মধ্যে একজনের নাম নিব্রাস ইসলাম। ফেসবুক সূত্রমতে নিব্রাস নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।
আরেক হামলাকারী মীর সাবিহ মুবাশ্বের স্কলাসটিকার ছাত্র। এ লেভেল পরীক্ষার আগে গত মার্চে মুবাশ্বের নিখোঁজ হন বলে জানা যায় ফেসবুক থেকে। নিখোঁজের দিন মোবাশ্বিরের বাবা মীর এ হায়াত কবীর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর ১৮৪৮) দায়ের করেছিলেন। স্কলাসটিকা স্কুল থেকে সম্প্রতি ও-লেভেল সম্পন্ন করেছে মীর মোবাশ্বির। এ লেভেলে ভর্তি হওয়ার জন্য সে গুলশানের এমিনেন্স কোচিং সেন্টারসহ দুটি কোচিং সেন্টারে পড়ছিল। পরিবারের সঙ্গে সে বনানী ডিওএইচএসের ৫ নম্বর সড়কের ৬৮/এ বাসার ৫/বি ফ্ল্যাটে থাকত। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে সে কোচিংয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়িতে করে বাসা থেকে বের হয়। যানজট থাকায় কোচিং সেন্টারের আগেই গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গাড়িচালক জুয়েল তাকে কোচিং থেকে আনতে গেলে তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরে তার বাবা মীর এ হায়াত কবীর ওই দিনই গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর ১৮৪৮) দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে গুলশান এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পান মুবাশ্বের গাড়ি থেকে নামার পর একটি রিকশা নিয়ে বনানীর ১১ নম্বর সড়কের দিকে চলে যাচ্ছে। ওই জিডির তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই নাজমুল তার পরিবারকে জানান, তারা ছেলেটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। কিন্তু ঘটনার দিন বিকেল ২টা ৫৫ মিনিট থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। এ থেকে বুঝা যায় স্বেচ্ছায় সে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে।
হামলায় জড়িত দাবি করে সাইট ইন্টিলিজেন্স যে ৫ জনের ছবি প্রকাশ করেছে সেগুলোর সত্যতা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।
পুলিশ এ পাঁচজনের নাম আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন হিসেবে জানালেও তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানায়নি। তবে আইএসপিআর এবং ইসলামিক স্টেটের বার্তা সংস্থা আমাক হামলাকারীদের যে ছবি প্রকাশ করেছে সেসব ছবির সাথে কিছু প্রোফাইলের মালিকদের চেহারা মিলে যাচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন