শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গুলশানে নিহতদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা

প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৮ এএম, ৫ জুলাই, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শোকাহত দেশি-বিদেশি নাগরিকেরা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা ২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিকসহ বিদেশি নাগরিকেরা।
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আর্মি স্টেডিয়ামে যে মঞ্চটি তৈরি করা হয়, সেখানে তিনটি মরদেহ আনা হয়। দুটি কফিন ঢাকা ছিল বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে। আরেকটি ঢাকা ছিল বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা দিয়ে। হামলায় পাঁচ দেশের নাগরিকেরা নিহত হওয়ায় মঞ্চের পেছনে পাঁচটি দেশের পতাকা টাঙানো হয়। মাঝে ছিল বাংলাদেশের পতাকা। বাঁ দিকে প্রথমে ভারতের এরপর ইতালির, জাপানের ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ছিল। মঞ্চের সামনে কালো কাপড়ের ওপর সাদা হরফে লেখা ছিলো,‘হলি আর্টিসান বেকারিতে নিহতদের জন্য বাংলাদেশের মানুষ গভীরভাবে শোকাহত’। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জানানো হয়, জাপানি রীতি অনুয়ায়ী, তাদের নিহত নাগরিকের জন্য রোববার রাত থেকেই সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়েছে।
প্রথমে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের পক্ষে মঞ্চের সামনে কালো বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রাষ্ট্রপতি ভুটানে থাকায় তার পক্ষে ফুল দেন বঙ্গভবনে দায়িত্বরত কমান্ডার মিনহাজ আলম। প্রেসিডেন্টের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পায়ে হেঁটে শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চে গিয়ে ফুল দেওয়ার পর কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশি ফারাজ আইয়াজ হোসেন ও ইশরাত আকন্দ এবং এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অবিন্তা কবীরের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় অবিন্তার স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সান্তনা দেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী নিহত অপর চারটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও কথা বলেন। ১০টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী আর্মি স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর ভারতের হাইকমিশনার, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ইতালির রাষ্ট্রদূতেরা শ্রদ্ধা জানান। জঙ্গি হামলায় ভারতের একজন, জাপানের সাতজন, ইতালির নয়জন এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক নিহত হয়েছেন। রাষ্ট্রদূতেরা কেউ করজোড়ে, কেউবা মাথা নিচু করে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকেরা এক সঙ্গে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্য; প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা; আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ; সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান; পুলিশ মহাপরিদর্শক; র‌্যাব মহাপরিচালক এবং উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দ, নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যগণ, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়র আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন নিহতদের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। ১১ দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নিহতদের প্রতি।
রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মঞ্চ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল এ সময় বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আনহ আখতার হোসেন ও শায়রুল কবীর খান এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
আর্মি স্টেডিয়ামে নিহত ১৭ বিদেশির মরদেহ আনা হয়নি। তাদের মরদেহ সিএমএইচের হিমাঘারে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে হস্তান্তর করা হবে।
গুলশানে জঙ্গি হামলার রক্তাক্ত সমাপ্তি হয়েছে। তবে এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি জাতি। সরকার দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। গত রোববার ভোর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের অফিস-আদালতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মাধ্যমে শোক পালন শুরু হয়। গতকাল সোমবারও শোক পালন করছে জাতি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
pabel ৫ জুলাই, ২০১৬, ২:০৫ পিএম says : 0
ai gotoner sustho investigation chai
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন