আফজাল বারী : মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর একফালি চাঁদ নিয়ে এসেছিল খুশির বারতা। আসমানী তাগিদ আর নতুন বারতা নিয়ে আনন্দময় পবিত্র ঈদ উদযাপন করেছে মুসলিমগণ। যথাযোগ্য মর্যাদা আর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মতো বাংলাদেশের মানুষও ঈদের খুশিতে মেতে ছিল গত বৃহস্পতিবার।
জাতীয় ঈদগাহসহ সারা দেশে ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে সময়ভেদে। নামাজ শেষে মহান আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে আগ্রাসী, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, ইসলামের ভ্রান্ত মতবাদ থেকে মুক্তি এবং দেশ ও দেশের মানুষের সমৃদ্ধি, শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়।
২৯ রমজান শেষে চাঁদ না ওঠায় সংযমের মতো আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল। ‘যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী/ সেই গরিব ইয়াতীম মিসকিনে দে যা কিছু মুফিদ’ ঈদুল ফিতর নিয়ে বাঙালি কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কালজয়ী ইসলামিক গানের বাস্তবতা মিলেছে। প্রতি বছর ঈদে গার্মেন্টকর্মীদের বেতন-বোনাস নিয়ে বিক্ষোভ-অসন্তোষ আন্দোলন হয়। ভাঙচুর-ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটে। বেতন-বোনাস না পেয়ে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকেন। এবার ছিল ব্যতিক্রম। জাকাত-ফিতরা বিতরণে ছিন্নমূল মানুষের মৃত্যু বা শোকের খবর আসেনি। চলাচলের পথে দুর্ঘটনার খবরও ছিলো গতবারের চেয়ে কম। তবে দেশের বৃহৎ ঈদগাহে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মুসলিম মনে কষ্টের দাগ কেটেছে। তারপরও বিরাজমান প্রকৃতির বৈরিতা, প্রতিকূল পরিবেশ আর হাজারো সঙ্কট এবার হার মেনেছিলো ঈদের খুশির কাছে। আতঙ্ক, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দমেনি ধর্মপ্রাণ মুসলমান। রমজান আর ঈদ কেন্দ্র করে ধনী-গরিবের মধ্যকার ভ্রাতৃত্ববোধে ঝালাই হয়েছে। শহুরে মানুষ যেমন গ্রামে ফিরেছেন তেমনি ঈদ উৎসব পালনের জন্য লাখ লাখ প্রবাসী দেশে এসেছেন। পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন।
রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত প্রধান ঈদ জামাতে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিগণ ও বিভিন্ন মুসলিম দেশের দূতাবাসসমূহের কূটনীতিকগণ ঈদের নামাজ আদায় করেন। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ ও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পৃথক স্থানে এবং মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমে পৃথক মসজিদে মহিলা মুসল্লিদের ছিল প্রচুর সমাগম। ঈদ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদে ৫টি জামাত ও মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমে ৪টি ঈদ-জামাত অনুষ্ঠিত হয় এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে সর্ববৃহৎ ঈদ-জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদীদের জন্য পৃথক ঈদ-জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দেশের সর্বপ্রথম ঈদ-জামাত অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরীফে এবং সর্বশেষ ঈদ-জামাত অনুষ্ঠিত হয় আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফের দায়েমীয়া শাহী জামে মসজিদে। রাজধানী ছাড়াও বিভাগীয় শহরসমূহের প্রধান প্রধান ঈদ-জামাতে ছিল মুসল্লিগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ। ঈদের দিনে বিভিন্ন মাজার, কবরস্থান এবং দরবার ও খানকাসমূহে ব্যাপক মানুষ এবং ভক্তগণের সমাগম হয়। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট বঙ্গভবনে, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে পৃথক পৃথকভাবে সর্বস্তরের মানুষের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এবার ঈদকে কেন্দ্র করে শত শত কোটি টাকার কেনাবেচা হয়েছে। গ্রামের টুপি তৈরির কুটিরশিল্পের শ্রমিক-মালিক থেকে শুরু করে বৃহৎ শিল্পের মালিকরা প্রত্যাশিত ব্যবসা পেয়েছেন, রোজগার করেছেন। দেশের দক্ষিণে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা-কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতসহ দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে লাখ লাখ দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়ই প্রমাণ দেয় এবার ঈদে মানুষের মনে খুশির বান ডেকেছিল।
রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে নাড়ির টানে ছুটে গেছেন গ্রামের বাড়ি। নানা প্রতিকূলতা, খানাখন্দ রাস্তায় যানজট, বাস-টেন-লঞ্চের টিকিট সংকট, টিকিটে অতিরিক্ত টাকার ভোগান্তি, সড়কপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকার পরও সব বাধা ভেঙে কষ্ট মেনে নিয়েই হাসিমুখে প্রিয়জনের কাছে গেছেন কর্মজীবীরা। ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং লঞ্চে করে পশ্চিমাঞ্চলে যারা ঈদ করতে গেছেন তাদের সবার মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। স্বজনদের কাছে পৌঁছে ভুলে গেছেন যন্ত্রণার ক্লান্তি। ঘন্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ট্রেনের টিকিট পেয়েছেন, হাতে টিকিট প্রাপ্তির পরই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার ক্লান্তি ভুলে যাওয়ার কথা তাৎক্ষণিক গণমাধ্যমে জানিয়েছেন অনেক মানুষ।
সারাদেশে অঝরধারায় কিংবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিলো ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। বৃষ্টির মধ্যেই বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের বিচরণ লক্ষ করা গেছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এবার সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রবাসী দেশে এসেছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। আবার অনেক সামর্থ্যবান ঈদ উদযাপন করতে বিদেশ গেছেন।
ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার অভিজাত বিপণি বিতান বসুন্ধরা-যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তের নিউমার্কেট-মৌচাক-কর্ণফুলী-আনারকলি-গাউছিয়া-ইস্টার্ন প্লাজা-হকার্স মার্কেট। রাজধানী মার্কেট থেকে শুরু করে মতিঝিল-গুলিস্তান-মহাখালি-ফার্মগেটের ফুটপাতগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। কর্মজীবী মানুষ নিজেদের সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছেন, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজনদের ঈদের জামা-কাপড় উপহার দিয়েছেন। ঢাকা শহরের ফুটপাতে হরেক রকম পসরা সাজিয়ে বসেছিল বিক্রেতারা। শহরে নি¤œআয়ের বহু মানুষের জীবিকা চলে শুধু ফুটপাথকে কেন্দ্র করেই। আবার বহু মানুষের কেনাকাটাও চলে ফুটপাথেই। চাঁদাবাজির বিড়ম্বনা থাকলেও ঈদে সবার বাড়তি ব্যবসা হয়েছে। অভিজ্যাত বিপণি বিতানগুলোতে যেমন লাখ টাকার শাড়ি, লেহেঙ্গা বিক্রি হয়েছে; তেমনি ৫শ’ থেকে ৫/১০ হাজার টাকা দামের শাড়ি, থ্রিপিস বিক্রি হয়েছে। ফুটপাতে একশ-দুইশ টাকার জামা কাপড় কিনেছেন নি¤œবিত্ত মানুষ। টুপি, আতরের বিক্রি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের নানা ভোগান্তি আর কয়েকটি দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যর্থতার কারণে অভিজাত এলাকা গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে, অন্যান্য স্থানে ছিনতাই, রাহাজানী, চুরিও বেড়ে গেছে। তারপরও মানুষ ঈদকে কেন্দ্র করে নিজেদের মতো করে আনন্দ করেছে। একে অন্যের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেছে।
ঈদের দিন রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। শিশুদের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র রাজধানীর শিশুপার্ক ও চিড়িয়াখানায় লাখো দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছিল। পরিবারের অভিভাবক এবং বাবা-মায়েরা শিশু পুত্র-কন্যা এবং অত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আনন্দ করেছেন। কমতি ছিল না বন্ধু-বান্ধবদের ঈদ উদযাপনের আনন্দেও।
মুসল্লিগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ। ঈদের দিনে বিভিন্ন মাজার, কবরস্থান এবং দরবার ও খানকাসমূহে ব্যাপক মানুষ এবং ভক্তগণের সমাগম হয়। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট বঙ্গভবনে, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে পৃথক পৃথকভাবে সর্বস্তরের মানুষের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এবার ঈদকে কেন্দ্র করে শত শত কোটি টাকার কেনাবেচা হয়েছে। গ্রামের টুপি তৈরির কুটিরশিল্পের শ্রমিক-মালিক থেকে শুরু করে বৃহৎ শিল্পের মালিকরা প্রত্যাশিত ব্যবসা পেয়েছেন, রোজগার করেছেন। দেশের দক্ষিণে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা-কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতসহ দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে লাখ লাখ দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়ই প্রমাণ দেয় এবার ঈদে মানুষের মনে খুশির বান ডেকেছিল।
রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে নাড়ির টানে ছুটে গেছেন গ্রামের বাড়ি। নানা প্রতিকূলতা, খানাখন্দ রাস্তায় যানজট, বাস-টেন-লঞ্চের টিকিট সংকট, টিকিটে অতিরিক্ত টাকার ভোগান্তি, সড়কপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকার পরও সব বাধা ভেঙে কষ্ট মেনে নিয়েই হাসিমুখে প্রিয়জনের কাছে গেছেন কর্মজীবীরা। ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং লঞ্চে করে পশ্চিমাঞ্চলে যারা ঈদ করতে গেছেন তাদের সবার মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। স্বজনদের কাছে পৌঁছে ভুলে গেছেন যন্ত্রণার ক্লান্তি। ঘন্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ট্রেনের টিকিট পেয়েছেন, হাতে টিকিট প্রাপ্তির পরই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার ক্লান্তি ভুলে যাওয়ার কথা তাৎক্ষণিক গণমাধ্যমে জানিয়েছেন অনেক মানুষ।
সারাদেশে অঝরধারায় কিংবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিলো ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। বৃষ্টির মধ্যেই বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের বিচরণ লক্ষ করা গেছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এবার সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রবাসী দেশে এসেছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। আবার অনেক সামর্থ্যবান ঈদ উদযাপন করতে বিদেশ গেছেন।
ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার অভিজাত বিপণি বিতান বসুন্ধরা-যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তের নিউমার্কেট-মৌচাক-কর্ণফুলী-আনারকলি-গাউছিয়া-ইস্টার্ন প্লাজা-হকার্স মার্কেট। রাজধানী মার্কেট থেকে শুরু করে মতিঝিল-গুলিস্তান-মহাখালি-ফার্মগেটের ফুটপাতগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। কর্মজীবী মানুষ নিজেদের সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছেন, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজনদের ঈদের জামা-কাপড় উপহার দিয়েছেন। ঢাকা শহরের ফুটপাতে হরেক রকম পসরা সাজিয়ে বসেছিল বিক্রেতারা। শহরে নি¤œআয়ের বহু মানুষের জীবিকা চলে শুধু ফুটপাথকে কেন্দ্র করেই। আবার বহু মানুষের কেনাকাটাও চলে ফুটপাথেই। চাঁদাবাজির বিড়ম্বনা থাকলেও ঈদে সবার বাড়তি ব্যবসা হয়েছে। অভিজ্যাত বিপণি বিতানগুলোতে যেমন লাখ টাকার শাড়ি, লেহেঙ্গা বিক্রি হয়েছে; তেমনি ৫শ’ থেকে ৫/১০ হাজার টাকা দামের শাড়ি, থ্রিপিস বিক্রি হয়েছে। ফুটপাতে একশ-দুইশ টাকার জামা কাপড় কিনেছেন নি¤œবিত্ত মানুষ। টুপি, আতরের বিক্রি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের নানা ভোগান্তি আর কয়েকটি দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যর্থতার কারণে অভিজাত এলাকা গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে, অন্যান্য স্থানে ছিনতাই, রাহাজানী, চুরিও বেড়ে গেছে। তারপরও মানুষ ঈদকে কেন্দ্র করে নিজেদের মতো করে আনন্দ করেছে। একে অন্যের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেছে।
ঈদের দিন রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। শিশুদের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র রাজধানীর শিশুপার্ক ও চিড়িয়াখানায় লাখো দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছিল। পরিবারের অভিভাবক এবং বাবা-মায়েরা শিশু পুত্র-কন্যা এবং অত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আনন্দ করেছেন। কমতি ছিল না বন্ধু-বান্ধবদের ঈদ উদযাপনের আনন্দেও।
রাজশাহীতে ঈদ উদযাপিত
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা আর ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্য পরিবেশের মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে পবিত্র ঈদুল ফেতর উদযাপিত হয়েছে। নগরীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় হযরত শাহমখদুম (রহ:) ঈদগাহ ময়দানে। এখানে নামাজ আদায় করেন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাধারণ মুসল্লীগণ। এরপর বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট বড় রাস্তায়। নগরীর সবকটি ঈদগাহ ময়দানে নামাজের প্রস্তুতি থাকলেও চাঁদরাতের দিন মধ্যরাতে ভারী বর্ষণ হওয়ায় প্রায় সেসব স্থানে নামাজ আদায় সম্ভব হয়নি। মহল্লার মসজিদে মসজিদে দু’তিনটি করে ঈদের নামাজ আদায় হয়। মহিলাদের জন্য ছিল বিশেষ ব্যবস্থা। নামাজ শেষে কবরস্থানগুলোয় মানুষরে ঢলনামে। স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কবরবাসীর জান্নাত নসীবের জন্য দোয়া-দরুদ পাঠ করা হয়। ঈদের দিন আবহাওয়া ছিল রোদ্র মেঘের লুকোচুরি খেলা। সকালে নামাজ আদায়ের আগ পর্যন্ত আকাশ ছিল রোদ ঝলমলে। এরপর শুরু হয় থেমে থেমে ঝুপঝাপ বৃষ্টি। বৃষ্টি শিশু-কিশোরদের ঈদ আনন্দে কিছুটা বিঘœ ঘটালেও বিকেলটা ছিল অনেকটা ভাল। মানুষ স্বজনদের বাড়ি গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে।
যশোরে ঈদের জামাত
যশোর ব্যুরো জানায় ঃ যশোরে পবিত্র ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায়। এছাড়া পুলিশ লাইন, কালেক্টরেট মসজিদ, মার্কাস মসজিদ, উপশহর ঈদগাহ ময়দান, চাঁচড়া, নতুন খয়েরতলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ, পুরাতন কসবা, বারান্দীপাড়া, কারবালা, আরিপপুর ও মুড়লিসহ জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে, উপজেলা ও গুরুত¦পূর্ণ স্থানের ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ছুটে যান মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে।
দিনাজপুরে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
দিনাজপুর অফিস জানায়, দিনাজপুরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় গোর-এ শহীদ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমী।
ঈদের জামাতে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য এম আব্দুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলমসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লী ঈদের নামাজ আদায় করেন।
দিনাজপুর ইনস্টিটিউট ময়দানে আহলে হাদীস-এর প্রধান জামাত ছাড়াও শহরের চাউলিয়াপট্টি-দক্ষিণ লালবাগ ঈদগাহ মাঠ, বালুয়াডাঙ্গা, কাঞ্চন ব্রিজ, কাঞ্চন কলোনী, মিনার মসজিদ, পাটুয়াপাড়া, রামনগর, ফকিরপাড়া, ঘাসিপাড়া, সুইহারী, ঈদগাহবস্তি, রাজবাটী, শিকদারগঞ্জ, পুলহাট, উপশহর, চেরাডাঙ্গী, নশিপুর ঈদগাহ মাঠসহ প্রায় ৪০টির অধিক উন্মুক্ত স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ময়মনসিংহে ঈদের প্রধান জামাতে আইএস’র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় এ মাঠে ঈদের প্রথম ও সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম জামাতে হাজার হাজার মুসল্লী অংশ নেন। এ সময় মাঠে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় হাজার হাজার মুসল্লী রাস্তায় অবস্থান নিয়ে নামাজ আদায় করেন। আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠের সড়ক ছাপিয়ে এ ভিড় গিয়ে ঠেকে নগরীর টাউন হল মোড় পর্যন্ত।
ঈদের জামাতের আগে মুসল্লীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জিএম সালেহ উদ্দিন, ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আ’লীগের সাবেক সদস্য মো: ইকরামুল হক টিটু।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জেলা জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঈদের প্রধান জামাত শেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন হাজার হাজার মুসল্লী। ঈদের জামাত শেষে মুসলিম উম্মাহ ও দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার মেয়র অভিন্নভাবে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
সিলেটে লাখো মানুষের ঈদের নামাজ আদায়
সিলেট অফিস জানায় : ঈদের দিন সিলেটে লাখো মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেট ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে এক সাথে প্রায় ২৫-৩০ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি শাহী ঈদগাহ ময়দানে জায়গা না পেয়ে অনেকে পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। এ সময় মুসল্লীরা অশ্রুভেজা কণ্ঠে ক্ষমা চান মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে। পাশাপাশি দেশ ও মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করেন তারা। সিলেটের শাহী ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতারা। এদিকে, শাহী ঈদগাহ ছাড়াও সকাল সাড়ে ৮টায় হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) দরগাহ মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিলেট নগরীর কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, সাড়ে ৮টায় ও ৯টায় তিনটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় ধোপাদিঘীর পূর্বপাড় সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, সকাল সাড়ে ৮টায় আলিয়া মাদরাসা মাঠ, ডাকবাংলো রোডের নবাবী জামে মসজিদ, টিলাগড় শাহ মদনী ঈদগাহ ও কালেক্টরেট মাঠ, সকাল পৌনে ৮টায় পশ্চিম পরীমহল্লা জামেয়া গৌসুল উলুম মাদরাসায়, সকাল সাড়ে ৭টায় দারুস সালাম মাদরাসা ও জামেয়া মাদানীয়া কাজির বাজার মাদরাসায় ও সকাল ৯টায় দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকার মসজিদ ও শাহী ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
জাকের পার্টির উদ্যোগে সারা দেশে ১১৩ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
ইনকিলাব ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল ফিতরে জাকের পার্টি ঢাকাসহ সারা দেশে ১১৩টি ঈদ জামাতের আয়োজন করে। রাজধানী ঢাকায় থানায় থানায় এবং দেশব্যাপী সকল মহানগর ও জেলা সদরে অনুষ্ঠিত এসব জামাতের প্রতিটিতে সর্বস্তরের হাজার হাজার শান্তিকামী মুসলমান শরিক হন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতি, মুসলিম উম্মাহ ও সর্বোপরি বিশ্ব মানবতার সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। পরে ১১৩টি জামাত থেকেই উপস্থিত সর্বস্তরের মুসল্লিদের সেমাই, পোলাও ও মাংস সহযোগে আপ্যায়ন করা হয়।
উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রকৃত মহিমায় মহাসাম্যের ধারা আরো বেগবান করার লক্ষ্যে জাকের পার্টি ২০১২ সাল থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরে দেশব্যাপী ঈদ জামাতের আয়োজন করছে।
এদিকে, ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে বরাবরের ন্যায় ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বওলী কেবলাজান ছাহেবের আধ্যাত্মিক প্রতিনিধিদ্বয় পীরজাদা আলহাজ খাজা মাহ্ফুযুল হক মুজাদ্দেদী ছাহেব ও পীরজাদা আলহাজ খাজা মোস্তফা আমীর ফয়সল মুজাদ্দেদী ছাহেব এ জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বিশ্বওলী হযরত শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু:ছে:আ:) কেবলাজান ছাহেবের পবিত্র রওজা শরীফ যিয়ারত করা হয়। এ সময় দেশ ও জাতি, মুসলিম উম্মাহ এবং সর্বোপরি শান্তিকামী বিশ্ব মানবতার শান্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।
একই সাথে রাজধানী ঢাকায় বনানী দরবার শরীফে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
দক্ষিণাঞ্চলে বর্ষণমুক্ত ঈদ উদযাপিত
বরিশাল ব্যুরো জানায়, মুসলিম উম্মার অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং অতীত গুনাহ থেকে পানাহ চাওয়ার মধ্যে দিয়ে এক মাসের সিয়াম সাধনা শেষে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে। বরিশালে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কেন্দ্রীয় হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে। বিশাল এ জামাতে সিটি মেয়র আহসান হাবীব কামাল, বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ নামাজ আদায় করেন। নগরীর জামে এবাদুল্লাহ মছজিদ, জামে কসাই মসজিদ, বায়তুল মোকাররাম মসজিদে দুটি করে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জাকের পার্টির উদ্যোগে নগরীর মোহনা কমিউনিটি সেন্টারে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক হাজার জাকেরান ও আশেকনান ছাড়াও সর্বস্তরের মুসল্লি এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে উপস্থিত মুসল্লিদের মাঝে তবারকও বিতরণ করা হয়।
এছাড়া বরিশালের চরমোনাই দরবার শরিফ ও পিরোজপুরের ছারছিনা দরবার শরিফেও বিশাল ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বরিশালের গুঠিয়া বায়তুল আমান মসজিদেও ঈদ জামাতে কয়েক হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। রমজানের শেষ চারদিন বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণ হলেও ঈদের দিন সকাল থেকেই ছিল বর্ষণ আর মেঘমুক্ত পরিবেশ। ফলে পুরো ঈদের দিনটিই দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া চিল পরিচ্ছন্ন আর রৌদ্রকরোজ্জ্বল।
খুলনায় নিরাপদে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত
খুলনা ব্যুরো জানায়, মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি সম্বৃদ্ধি কামনার মধ্যদিয়ে নিরাপদেই খুলনায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় খুলনায় প্রথম ও প্রধান ঈদের জামাত খুলনা টাউন জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি ও টাউন জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা সালেহ।
নামাজ শেষে দেশের মানুষের সুখ-শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। প্রধান এ জামাতে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য এক কাতারে দাঁড়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিসহ নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাধারণ মানুষ। ঈদের প্রধান জামাতে অংশগ্রহণ করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ, খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, কেসিসি’র ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিসুর রহমান বিশ্বাস, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল আলম মনা, শিল্পপতি মো. তরিকুল ইসলাম জহিরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ড ও ৯ উপজেলার মসজিদ ও মাদ্রাসায় পৃথক পৃথক সময়ে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। খুলনার কোথাও ঈদের জামাতের আগে-পরে বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু সদন, ভবঘুরে কেন্দ্র ও দুঃস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়কদ্বীপ বাংলা ও আরবীতে ঈদ মোবারক খচিত ব্যানারে সজ্জিত করা হয়।
নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় নগরীর জামতলার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগমে ঈদগাহ ময়দান ছাড়িয়ে জামতলা থেকে চাষাড়া পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত রাস্তায় লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। ঈদের প্রথম জামাত’র ইমামতি করেন নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ইব্রাহীম আজাদ সিরাজী। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. আনিছুর রহমান মিঞা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গাউছুল আজমসহ সর্বস্তরের লোকজন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় এবং সম্প্রতি গুলশানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়।
এদিকে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এদিন ভোর থেকেই কেউ শিশু সন্তান কেউবা নাতিকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাহে এসে জমায়েত হতে থাকেন। তখন এদের দেখে মনে হয় যেন তাদের মনপ্রাণ ভরে উঠেছে ঈদের আনন্দ রোশনাইয়ে। রমজানের রোজার শেষে খুশির সওগাত নিয়ে এসেছে ঈদ উল ফিতর। এরপর সকাল ৯টায় একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেই সময় তুলনামূলক মুসল্লিদের সংখ্যা কমই ছিল। দ্বিতীয় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় মসজিদের (পুরান কোর্ট মসজিদ) খতিব মাওলানা মাহাবুবুর রহমান। এছাড়াও সকাল ৮টা, সাড়ে ৮টা ও ৯ টায় নগরীর বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদুল ফিতর উদযাপন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, সারা বিশ্বের শান্তি কামনায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বৃষ্টিতে পৌর এলাকার কাজীপাড়ার ঈদগাহ মাঠ ভেজা থাকায় জেলা জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ উপলক্ষে বিনোদন কেন্দ্র, প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে বেশ ভিড় জমে। বিশেষ করে নাসিরনগর-সরাইল সড়কের ধরন্তী এলাকায় ও আখাউড়া স্থলবন্দরে পতাকা নামানোর অনুষ্ঠানের সময় শত শত মানুষ জড়ো হয়।
মাদারীপুরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুর পৌর ঈদগাহ ময়দানে ঈদ-উল-ফিতরের ২টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ১ম জামাতে পুরানবাজার বড় মসজিদের ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা বোরহান উদ্দিন খান এবং ২য় জামাতে পৌরসভা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রুহুল আমিন ইমামতি করেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী সাজাহান খান ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন।
গফরগাঁওয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত
গফরগাঁও উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গফরগাঁও পৌরসভা ও উপজেলায় ১৫টি ইউনয়নে পবিত্র ঈদুল পালিত হয়েছে।উপজেলার প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টা পৌরসভার আয়োজনে ঈমামবাড়ী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। এ ছাড়া অনুরুপভাবে বিভিন্ন স্থানে শান্তির্পূণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে ঘরে ঘরে বিশেষ খাবারের পরিলক্ষিত হয়। বিকাল থেকেই বেড়ানোর ধুম পড়ে যায়।
ফুলতলায় শন্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
ফুলতলা (খুলনা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ফুলতলার আলকা পল্লীমঙ্গল ঈদগাহ ময়দানের সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে হাজারো মুসল্লিদের উপস্থিতিতে শন্তিপূর্ণভাবে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত সম্পন্ন হয়েছে। ঈদের জামাতে লে. কর্ণেল জাবেদ হোসেন, প্রেসক্লাব ও ঈদগাহ কমিটির সভাপতি এস এস মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. শফিউদ্দিন মোল্যা, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মোল্যা, আ. রাজ্জাক মোল্যাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
শিবগঞ্জের ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত
শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর উত্তর পাড়া ও চককীর্তি ইউনয়নে চক হরিপুর গ্রামে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোবারকপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবু প্রফেসরের বাড়ির পার্শ্বে এ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে আশেপাশের গ্রামের ২ শতাধিক নারী-পুরুষসহ জামাতে অংশ নেয়। কানসাট ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের ইমাম ঈদ জামাতের ইমামতি করেন। এছাড়া চককীর্তি ইউনিয়নের চক হরিপুর গ্রামে একই সময় ওই গ্রামের সাইফুদ্দিন হাজির ছেলে আবুল কালাম আজাদের বাড়ির উঠানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে আবুল কালাম আজাদ ঈদ জামাতের ইমামতি করেন। পরে নামায শেষে আলাহ্র কাছে দোয়া প্রার্থনা করে মোনাজাত করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে অনুষ্ঠিত ঈদুল ফিতরের নামাজ। শিবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নূরে আলম সিদ্দিকী এ জামাতের কথা নিশ্চিত করেন।
নীলফামারীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত
নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা জানান, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নীলফামারীতে পালিত হয়েছে ঈদুল ফিতর। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জেলার প্রধান জামায়ত অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. জাকীর হোসেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক, পৌরমেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদসহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এ জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন